শিমের বাম্পার ফলন হলেও দুশ্চিন্তায় চাষিরা
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর ভোলায় শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে সোনালি হাসি। শিম খেতে পরিচর্যা ও শিম তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
কিন্তু পাইকারি ও খুচরা বাজারে শিমের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে চিন্তিত চাষিরা। কৃষি অধিদফতরের বিপণন বিভাগ থেকে মূল্য নির্ধারণ করলে বাজারে ন্যায্যমূল্যে শিম বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে দাবি চাষিদের।
সরেজমিনে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভোলা জেলায় এ বছর ১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছে চাষিরা। এ বছর খেতে কোনো ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণও ছিল না।
যে কারণে শিমখেত ফলনে পুরিপূর্ণ। বর্তমানে শেষ সময়ের খেত পরিচর্যা ও শিম তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
ভোলা সদর উপজেলার কোড়ালিয়া গ্রামের শিম চাষি মো. লিটন মির জানান, তিনি ১৮ বছর ধরে এ গ্রামে শিম চাষ করছেন। এ বছরও তিনি ১২০ শতাংশ জমিতে শিমের চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। খেতে কোনো পোকামাকড়ের আক্রমণ নেই। শিম খেতে ব্যাপক সফল হওয়ায় খুশি তিনি।
আরেক শিম চাষি গৌতম চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমি ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ৮৫ শতাংশ জমিতে শিম চাষ করেছি। এ পর্যন্ত ২৫ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছি। বাজারে দাম ভালো থাকলে খেতে যে পরিমাণ ফলন রয়েছে তাতে আরো ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো।’
একই গ্রামের শিম চাষি মো. হাবিবুল্লাহ বিশ্বাস জানান, এ বছর শিমের ব্যাপক ফলন হওয়ায় বাজারে আমরা শিমের ভালো দাম পাবো না। বাজারে শিমের ভালো দাম না পেলে বিগত বছরের লোকসান পুষিয়ে লাভবান হতে পারবো না।
এজন্য আমরা শিম চাষিরা কৃষি বিপণন বিভাগের কাছে অনুরোধ করবো, তারা যেন শিমের একটি নির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ করেন। যদি পাইকারি ও খুচরা বাজারে শিমের দাম নির্ধারণ করা হয় তাহলে আমরা শিম চাষিরা লাভবান হবো।
ভোলা কৃষি বিপণন অধিদফতরের জেলা মাকেটিং কর্মকর্তা মো. মোস্তফা সোহেল জানান, শিমের পাইকারি ও খুচরা বাজারের দাম নির্ধারণ করার বিষয়ে কৃষকদের দাবি আমরা দ্রুত কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।
ভোলা কৃষি অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মো. রাশেদ হাসনাত জানান, এ বছর পোকাপাকড়ের আক্রমণ না হওয়ায় শিমের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এতে খুশি কৃষকরা। তিনি আরো জানান, জেলার সাত উপজেলায় এ বছর শিম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৩০০ হেক্টর। চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬৫০ হেক্টর, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৫০ হেক্টর বেশি।
জুয়েল সাহা বিকাশ/এমএমএফ/এমএস