লেবু বিক্রি করে কোটিপতি ২২ গ্রামের চাষিরা
ভিটামিন-সিযুক্ত রসালো লেবুর ঘ্রাণে মাতোয়ারা ঝালকাঠির ২২টি গ্রাম। চলতি মৌসুমে জমে উঠেছে ঝালকাঠির ভিমরুলীর ভাসমান লেবুর হাট। প্রতিদিন এখানে লাখ লাখ লেবু বেচা-কেনা হচ্ছে। পাইকাররা নৌকা থেকে লেবু কিনে গাড়িতে করে বরিশাল আড়তে নিয়ে বিক্রি করছেন। অনেকে মালবাহী ট্রলার বা ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। ফরমালিন ও কেমিক্যালমুক্ত রসালো কাগজি লেবু সবার কাছেই প্রিয়।
ঝালকাঠির বাউকাঠি, শতদলকাঠি, ভিমরুলী, কাফুরকাঠি, আটঘর, গাভারামচন্দ্রপুর, পোষন্ডা, ডুমুরিয়া, খেজুরা, কির্ত্তীপাশা, মিরাকাঠিসহ ২২টি গ্রাম এখন লেবুর ঘ্রাণে মাতোয়ারা। প্রতিদিন এসব গ্রামের কৃষকরা গাছ থেকে লেবু সংগ্রহ করে নৌকায় ভিমরুলী বাজারে নিয়ে আসে। অপেক্ষমান পাইকাররা ট্রলারে বসেই লেবু কিনে রাখে।
চাষিরা জানান, গতবছর ১ পোন (৮০টি) লেবু ছিল আড়াইশ’ টাকা। এবার তা ৪শ’ টাকা। গ্রামের চাষিরা কাঁদি কেটে লেবু চাষ করছেন। একেকটি কাঁদি ১শ’ থেকে ১১০ হাত লম্বা এবং ৭-৮ হাত চওড়া হয়। প্রতিটি কাঁদিতে ২২টি গাছ লাগানো যায়। এরকম ১ বিঘার কাঁদিতে লেবু চাষ করতে খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা। ফল ধরার পরে লেবু বিক্রি করে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা পাওয়া যায়। সে হিসেবে লেবু বিক্রি করে প্রতিবছর কৃষকরা আয় করছে দেড় থেকে ৩ কোটি টাকা।
লেবু ব্যবসায়ী আ. রহমান জানান, পটুয়াখালী থেকে মালবাহী ট্রলার এলে সেই ট্রলারে পটুয়াখালী মোকামে পাঠানো হয়। সেখানের কাচামাল বিক্রেতাদের সাথে আগেই চুক্তি করা থাকে। কেনা দামের ওপর লাভ রেখে বিক্রি করা হয়।
লেবুচাষি বশির জানান, ফলন ধরার পর দু’ভাবে লেবু বিক্রি করা হয়। প্রথমত স্থানীয় বাজারে পাইকারদের কাছে। এ ছাড়া গাছে ফল আসার পর পাইকারদের কাছে বাগান বিক্রি করা হয় এককালীন নগদ টাকায়। ভীমরুলী থেকে পাইকাররা কিনে তা সরবরাহ করেন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
পাইকাররা জানান, করোনার কারণে লেবুর চাহিদা অনেক বেশি। তাই কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্য দিয়েই লেবু কিনে নেওয়া হচ্ছে। ভালোমানের একেকটি লেবুর ক্রয়মূল্যই হচ্ছে ৫টাকা। যা খুচরা বাজারে ৭-৮ টাকা দরে বিক্রি করা হয়।
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘এ লেবু ছোট হলেও ভেতরে পর্যাপ্ত রস থাকে। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ লেবুর প্রতি সবারই কম-বেশি আকর্ষণ আছে।’
মো. আতিকুর রহমান/এসইউ/এএ/পিআর