করোনায় ভালো নেই চাই-বুচনার কারিগররা
ভালো নেই ঝালকাঠির চাই-বুচনার কারিগররা। এখন খাল-বিলে আগের মতো মাছ মেলে না। তার ওপরে এ বছর পানি দেরিতে এসেছে, তাই মাছ আরো কম। যে কারণে কমে গছে চাই-বুচনার চাহিদাও। যারা সারা বছর বর্ষা মৌসুমের অপেক্ষায় থাকে চাই-বুচনা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করবে; এ বছর তারা হতাশ।
কারিগররা অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বাঁশসহ চাই-বুচনা তৈরির উপকরণ কিনেছিলেন। কিন্তু বাজারে চাহিদা না থাকায় তারা বিপদে পড়েছেন। এমনকি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন পাইকার বা মহাজনরা। পাশাপাশি করোনায় এসব নিম্ন আয়ের মানুষগুলো চরম অভাবে দিন কাটাচ্ছে।
জানা যায়, ঝালকাঠি জেলায় দেশীয় চিংড়ি, বেলে, পুঁটি, খলিসা, কই, শিং, ট্যাংরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। তার ওপর বেশিরভাগ খাল-বিলে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। তাছাড়া এ বছর পানি দেরিতে আসায় আগের মত মাছের আনাগোনা নেই।
কারিগররা জানান, কয়েক বছর আগেও বর্ষাকালে দক্ষিণাঞ্চলের নদী-নালা, খাল-বিল পানিতে টইটুম্বুর হয়ে যেত। পানির সঙ্গে ভেসে বেড়াত হরেক রকমের মাছ। এসব মাছ শিকার করার জন্য চলাচলের পথে চাই বা বুচনা পেতে রাখা হতো। কিন্তু এ বছর মাছ না থাকায় চাই-বুচনা পেতে মাছ শিকার করার আগ্রহ কমে গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খালে-বিলে পানি ও মাছ না থাকায় বাজারে এখন চাই-বুচনার চাহিদা এবং দাম দু’টোই কম। আগে বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই জেলার হাট-বাজারগুলোতে চাই-বুচনা কেনার ধুম পড়ে যেত। এ বছর তা আর চোখে পড়ছে না।
তাই তো জেলার কয়েকশ কারিগর চোখে অন্ধকার দেখছেন। কিভাবে মহাজনদের দাদন পরিশোধ করবেন। আর কিভাবে সারা বছর খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকবেন। তার ওপরে আবার অভাবের সংসারে করোনার হানা। ফলে দিশেহারা চাই-বুচনার শিল্পীরা।
মো. আতিকুর রহমান/এসইউ/এমএস