খাঁচায় মাছ চাষে সফল আল আমিন
দিনাজপুরে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে খাঁচায় মাছ চাষে সফলতা পেয়েছেন আল আমিন খান। এখন বাণিজিক্যভাবে উৎপাদন শুরু করেছেন তিনি। প্রশিক্ষণ নিয়ে এ পদ্ধতিতে দেশি মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হন। তার সফলতা দেখে অনেক বেকার যুবক বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
জানা যায়, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন তিনি। প্রথমবারের মতো ১২ শতক জমি নিয়ে ৬ হাজার লিটার পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ১টি খাঁচা বানিয়ে দেড় কেজি শিং মাছের পোনা ছাড়েন। প্রথম চালানে ৬০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করবেন। পোনা ছেড়ে বাজারজাত করা পর্যন্ত সময় লাগে সাড়ে ৩ থেকে ৪ মাস। যাতে লাভ হবে অর্ধেক। একটি খাঁচা দিয়ে শুরু করলেও এ জমিতে আরও ২১টি খাঁচা স্থাপন করা যাবে।
প্রথমে বাসায় পরীক্ষামূলকভাবে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করেন। সেখানে সফলতা পাওয়ার পর বাণিজিক্যভাবে মাছ চাষ শুরু করেন। আগামীতে খাঁচা বাড়িয়ে কৈ, তেলাপিয়া, পাবদা, রুই, মাগুর, ট্যাংরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ চাষ করবেন।
আল আমিন গত ৪ আগস্ট সাড়ে ৩ ফুট উঁচু ও ১৩ ফুট গোলাকৃতির খাঁচা তৈরি করেন। খাঁচাগুলো ওয়াটার প্রুফ ত্রিপল দিয়ে ঘিরে দেন। খাঁচা তৈরি করতে ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। একটি খাঁচায় সর্বোচ্চ ১২ হাজার শিং, কৈ, তেলাপিয়া, মাগুর, পাবদা ও ট্যাংরা মাছের পোনা ছাড়া যায়। যাতে ৮০-১০০ কেজি মাছ পাওয়া যায়। একটি খাঁচায় বছরে ৩ বার মাছ চাষ করা সম্ভব। এতে মাছের উৎপাদন বেশি হওয়ায় লাভও বেশি। এ পদ্ধতিতে মাছের খাবার কম লাগে। অসুখ না হওয়ায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় না।
মাছ চাষের আগে প্রতিটি খাঁচায় অরগানিকভাবে লবণ, চিটাগুড় ও প্রবাইটিক দিয়ে পানির (মিশ্রন) কালচার করতে হবে। এ পদ্ধতিতে মাছের বিষ্ঠা আবারও প্রোটিনে রূপান্তরিত হয়ে মাছের খাদ্যের ৭০ শতাংশ পূরণ হয়। এ পদ্ধতিতে মাছের খাবারও কম লাগে। যত বেশি পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন খাঁচা তৈরি করা যায়; তত বেশি মাছ উৎপাদন হয়।
আল আমিন খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকার বেকার যুবকদের সহজ শর্তে ঋণসহ পৃষ্ঠপোষকতা দিলে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে দেশীয় মাছ চাষ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। এতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হবে হাজারও বেকারের।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. এস এম রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ এই প্রথম। বায়োফ্লক পদ্ধতিকে আমাদেরকে এগিয়ে নিতে হবে। তাহলে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা পূরণ হওয়া সম্ভব। দ্রুত সময়ে এ বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এমদাদুল হক মিলন/এসইউ/জেআইএম