বাড়ির ছাদে সৌদি আরবের খেজুর চাষে সফলতা
সৌদি আরবের বিখ্যাত আজোয়া জাতের খেজুর চাষ করে সফল হয়েছেন দিনাজপুর শহরের বালুয়াডাঙ্গা শহীদ মিনার মোড়ের মো. মাহাবুবুর রহমান। একসময়ের সৌদি প্রবাসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ও শামসুন নাহারের ছেলে মো. মাহাবুবুর রহমান বাড়ির ছাদে এ খেজুর চাষ করে সফল হয়েছেন।
জানা যায়, বাড়ির ছাদে প্রাথমিকভাবে চাষ করা একটি গাছে থোকায় থোকায় আজোয়া খেজুর ঝুলছে। এখন তিনি ওই জাতের খেজুরের চারা উৎপাদনে ব্যস্ত রয়েছেন। বর্তমানে বাড়ির ছাদে মাটিতে রোপণ উপযোগী ৬ শতাধিক চারা প্রস্তুত রয়েছে। প্রায় ৩শ বিচি থেকে চারা উৎপাদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চলতি বছরের শেষের দিকে চূড়ান্তভাবে বড় পরিসরে জমিতে চারা রোপণ ও বিক্রির উদ্যোগ নেবেন মাহবুব।
ইতোমধ্যে এ খেজুর চাষের সফলতা দেখে মাহবুবুর রহমানের কাছে গাছের চারা কিনতে বিভিন্ন জেলা থেকে লোক আসছেন। তিনি বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন আজোয়া খেজুর চারার একটি মিনি নার্সারি। সেখানে অসংখ্য গাছের চারা রয়েছে। ছাদের কোণায় রয়েছে ১টি গাছ। গাছের ২টি থোকায় ঝুলছে সবুজ-গোলাপি-হলুদ রঙের বড় বড় খেজুর।
আরও পড়ুন > যে ফুল বেশি দিন ফুলদানিতে সতেজ থাকে
মাহবুবুর রহমান জানান, তার বাবা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন প্রায় ৩৫ বছর মদিনায় চাকরি করেছেন। অবসরের পর বাংলাদেশে চলে আসেন। মদিনায় আজোয়া জাতের খেজুরের কিছু বিচি সংগ্রহ করেন তিনি। তার বাবা যখন মদিনা থেকে প্রথম আজোয়া জাতের খেজুরের বিচি আনেন; তখন মা শামসুন নাহার নিজহাতে ১টি মাটির পাত্রে বিচি রোপণ করেছিলেন।
তিনি আরও জানান, আজোয়া জাতের খেজুর গাছের গড় আয়ু প্রায় ১০০ বছর। এর জন্য পরাগায়ন খুবই জরুরি। কোন বাগানে ২০টি চারা রোপণ করলে সেখানে ১টি পুরুষ গাছ রোপণ করতে হবে। প্রথমে ১টি বিচিকে ১টি মাটির পাত্রে রোপণ করতে হয়। তারপর গাছের চারা বড় হয়ে ৪-৬ ইঞ্জি হলে অন্য একটি বড় মাটির পাত্রে রোপণ করতে হয়।
মাহবুব জানান, আজোয়া জাতের গাছকে যত ভালো পরিচর্যা করা হবে; তত ভালো থাকবে। মাটিতে রোপণের প্রায় ৪ বছরের মাথায় প্রথম ফল দেবে। সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে গাছে ফুল আসে। তখন পুরুষ গাছ থেকে পরাগায়নের জন্য পাউডার সংগ্রহ করতে হয়। পরাগায়নের বিশেষ সময় পাউডারগুলো ফুলে ছিটিয়ে দিতে হয়। যেদিন গাছে প্রথম ফুল আসে সেদিনই ৩-৪ বার পাউডার ছিটাতে হয়।
আরও পড়ুন > বিদেশি সবজি স্কোয়াস চাষ করবেন যেভাবে
বর্তমানে যে গাছের ২টি থোকায় খেজুর ধরেছে, তাতে আনুমানিক ১৫ কেজি খেজুর পাওয়া যেতে পারে। তবে এর পরের বছর থেকে ৩ গুণ বেশি খেজুর পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান। খেজুরগুলো সবসময় নেট দিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়। সরকারি সহযোগিতা পেলে বড় পরিসরে চাষ শুরু করবেন বলে আশা করেন।
এমদাদুল হক মিলন/এসইউ/জেআইএম