ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

হাকালুকিতে রেকর্ড পরিমাণ মাছ উৎপাদন

জেলা প্রতিনিধি | মৌলভীবাজার | প্রকাশিত: ০৪:২২ পিএম, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

গত বছরের মত এবারও হাকালুকিতে রেকর্ড পরিমাণ মাছের উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিগত বেশ কয়েক বছর হাকালুকি হাওরে মাছের গড় উৎপাদন ছিল ১৪ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু গত বছর তা প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে ১৭ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়। এ বছর এখনো মাছ ধরা শেষ না হলেও মাছের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে এবারও ১৬ থেকে ১৭ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপন্ন হবে বলে আশাবাদী মৎস্য বিভাগ।

মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের বড় হাওর হাকালুকি দেশের ৪টি মাদার ফিসারিজের অন্যতম। প্রতি বছর এ হাওরের মাছ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যায়। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে এ হাওরে মাছের গড় উৎপাদন ছিল ১৪ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু ২০১৭ সালের বন্যার পরেই মাছের উৎপাদন নতুন রেকর্ড করে ১৭ হাজার মেট্রিক টনে দাঁড়ায়।

২০১৭ সালে ধান পচে অ্যামোনিয়া গ্যাসে হাকালুকি হাওরে প্রায় ২৫ মেট্রিক টন মাছ মারা যায়। এরপর বিশেষ নজর দেওয়া হয় এই হাওরের মাছের উৎপাদন অব্যাহত রাখার জন্য। হাওরে প্রায় ২৮ লাখ টাকার পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়। এরপর মাছের রেকর্ড সৃষ্টি করে। কিন্তু এর পরের বছর ২০১৮ সালে মাত্র সাড়ে ৪ লাখ টাকার পোনা অবমুক্ত করা হলেও উৎপাদন তেমন কমেনি। প্রাকৃতিকভাবেই মাছ উৎপাদনের রেকর্ডে তৃপ্ত মৎস্য বিভাগ।

> আরও পড়ুন- মাছের পোনা সংগ্রহের আধুনিক পদ্ধতি

কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জাগো নিউজকে জানান, হাওয়াবর্নী, ফুট বিল, নাগুয়া বিল, চকিয়া বিলসহ বেশ কয়েকটি বিলে এখনো মাছ ধরা বাকি আছে। তবে আমরা আশা করছি এবারও মাছের উৎপাদন ২ বছর আগের চেয়ে বেশি হবে।

তিনি আরও জানান, মৎস্য বিভাগের সঠিক উদ্যোগের ফসল মাছ উৎপাদনের এ ধারাবাহিকতা। এ বছর গত বছরের ১৭ হাজার মেট্রিক টনের রেকর্ডের কাছাকছি পৌঁছাবে। ২০১৭ সালে ২৮ লাখ টাকার পোনা অবমুক্ত করা হলেও ২০১৮ সালে মাত্র সাড়ে ৪ লাখ টাকার পোনা অবমুক্ত করা হয় হাকালুকির কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলায়।

গত বছরের মত এবছরও দেখা মিলছে বিপন্নপ্রায় অনেক প্রজাতির মাছ। যার মধ্যে সংকটাপন্ন ১৩ প্রজাতির মাছ এবং চরম বিপন্ন ৮ প্রজাতির মাছ রয়েছে।

হাকালুকি হাওর ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে হাকালুকির বিভিন্ন বিলে মাছ ধরার উৎসব চলছে। বিভিন্ন সাইজের মাছের পাশাপাশি ২০ থেকে ৩০ কেজি ওজনের মাছও ধরা পড়ছে। গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন ঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাইকাররা কিনছেন লাখ লাখ টাকার মাছ। ব্যবসায়ীরা জানান, একদিনে কোটি টাকার উপরে মাছ বিক্রি হয়েছে। ধরা পড়েছে বড় বড় মাছ।

> আরও পড়ুন- খলিশা মাছের পোনা উৎপাদনে সফলতা

স্থানীয় জেলেরা জানান, এ বছর বড় বড় রুই, বোয়াল, আইড়, কমন কার্প, মৃগেল মাছ বেশি হলেও অন্য জাতের দেশি মাছও ধরা পড়ছে। চাপিলা, টেংরা, মলা ও চিংড়িসহ বিভিন্ন জাতের প্রচুর ছোট মাছ ধরা পড়ছে। ছোট ও বড় মাছ পৃথকভাবে ঘাটে বিক্রি হচ্ছে। আছে বিলুপ্ত প্রজাতির মাছও।

উৎপাদন বেড়েছে বিপন্ন প্রজাতির মাছের। বিপন্নপ্রায় প্রজাতির পাবদা, ফলি, চিতল, আইড়, কালিবাউশ ও গুলশা মাছ এবার বেশি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া রানি মাছ, কাকিলা, ছোট চিংড়ি, কাজলি, মলা, পুঁটি, টেংরা, পটকা, ভেদা, গনিয়া, কানি পাবদা ইত্যাদি বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি দেখা মিলছে হাকালুকিতে।

এছাড়া বিপন্ন প্রজাতির চিতল, টিলা, খোকশা, অ্যালং ও কাশখাইরা রয়েছে। চরম বিপন্ন প্রজাতির মধ্যে আছে- ভাঙন, বাটা, নান্দিনা, ঘোড়া মুইখ্যা ও সরপুঁটি।

> আরও পড়ুন- যেভাবে চাষ করবেন বাটা মাছ

পাশাপাশি সংকটাপন্ন মাছের মধ্যে ফলি, বামোশ, টাটকিনি, তিতপুঁটি মাছের দেখা মিলছে হাকালুকিতে। যা জেলা ও উপজেলার কার্যালয়ের সঠিক উদ্যোগের ফসল বলে মনে করছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা।

রিপন দে/এসইউ/এমএস

আরও পড়ুন