কৃষকের চোখে বোরোর বাম্পার ফলনের স্বপ্ন
মৌলভীবাজারের হাওরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে পুরোদমে শুরু হয়েছে বোরো আবাদের কাজ। জেলার প্রত্যেকটি হাওর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বীজতলায় চারা তৈরির পর কৃষকরা এখন জমিকে চারা রোপণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বোরো ধানের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। তবে তাতে প্রয়োজন আবহাওয়ার আশির্বাদ। কারণ উজানে ভারত থেকে আসা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয় এ অঞ্চলের বোরো ধান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে মৌলভীবাজার জেলায় ৫৩ হাজার ১১৬ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কুয়াশা, শৈত্যপ্রবাহ আর কনকনে শীত উপেক্ষা করে কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকরা বোরো ক্ষেতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। অধিকাংশ কৃষক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গরুর হালের পরিবর্তে পাওয়ার টিলার বা ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করছেন। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বৃষ্টিপাত হওয়ায় আগাম বোরো আবাদ শুরু করা সম্ভব হয়েছে। জেলার কাওয়াদীঘি, হাকালুকি ও হাইল হাওরসহ ছোট বড় হাওর ও নিম্নাঞ্চলের কৃষকদের দম ফেলার সুযোগ নেই।
> আরও পড়ুন- চকরিয়ায় বাড়ছে সবজি চাষ
কৃষকরা জানান, এখন পর্যন্ত সবকিছু যেভাবে চলছে, তাতে তারা আশাবাদী। এবার ভালো ফসল হবে, তবে আগাম বন্যায় যেন ফসল তলিয়ে না যায় সে ব্যাপারে চিন্তিত। অনেকটা ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল এ ফসল। প্রায় প্রতিবছরই বন্যায় তলিয়ে যায় ধান। এর মধ্যে ধানের দাম অনেক কম। বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল এসব কৃষকের দাবি, ধানের দাম বাড়িয়ে কৃষকদের খেয়ে-পরে ভালোভাবে বাঁচতে সহায়তা করবে সরকার।
কাউয়াদীঘি হাওরের কৃষক মৃনাল দেব বলেন, ‘ফসল ভালো হবে সেটাই আশা করছি, তবে আবহাওয়ার আশির্বাদ আমাদের জন্য প্রয়োজন। সেই সাথে দরকার সরকারের পূর্ণ সহযোগিতা।’
> আরও পড়ুন- আমন ধানের ফলন বাড়াতে যা করবেন- শেষ পর্ব
এছাড়া এবার বীজের দাম বেশি ছিল বলে অভিযোগ করেন কৃষকরা। অনেকেই জানান, ফসলের তুলনায় খরচ বেশি। শ্রমিকদের মজুরিও বেশি। যার ফলে দিনে দিনে তাদের কৃষির প্রতি অনীহা সৃষ্টি হচ্ছে এবং চাষ কমিয়ে দিচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. শাহজাহান বলেন, ‘জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। কৃষকরা পরার্মশ অনুযায়ী কাজ করলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ধান উৎপাদন হবে।’
রিপন দে/এসইউ/পিআর