যেভাবে সুপারির ফল পচা রোধ করবেন
সুপারি চাষ বেশ লাভজনক। তবে সুপারির রোগ সম্পর্কে দেশে তেমন গবেষণা হয়নি। কিছু কিছু রোগের আক্রমণে সুপারির ফলন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুপারির ‘ফল পচা’ রোগ তার মধ্যে অন্যতম। তাই এ রোগ ও তার দমন পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিন-
কারণ: ফাইটোফথোরা এরিকি নামক ছত্রাকের আক্রমণে ফল পচা রোগ হয়ে থাকে।
বিস্তার: গাছের নিচে পড়ে থাকা রোগাক্রান্ত গাছের অংশে জীবাণু দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে। বেশি বৃষ্টির সঙ্গে এ রোগের আক্রমণ ও বিস্তার নির্ভরশীল। তাই বেশি বৃষ্টিপাতযুক্ত এলাকাতেই এ রোগের আক্রমণ বেশি দেখা যায়। বর্ষাকালে বৃষ্টি শুরু হওয়ার সময় রোগ আত্মপ্রকাশ করে এবং পুরো বর্ষাকাল উপস্থিতি বজায় রাখে।
> আরও পড়ুন- চলনবিলের ক্ষিরা যাচ্ছে সারা দেশে
লক্ষণ
১. জীবাণু বিভিন্ন বয়সের ফলকে আক্রমণ করে।
২. প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে রোগ কাণ্ডে ছড়িয়ে পড়ে।
৩. আক্রান্ত গাছ ২-১ মৌসুমের মধ্যেই মারা যেতে পারে।
৪. কচি ফল বা কাঁচা ফলের বোঁটায় খোসার উপর ভেজা ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়।
৫. আস্তে আস্তে অনেক দাগ মিলে সুপারির উপর বড় আকার ধারণ করে।
৬. আক্রান্ত স্থান ক্রমান্বয়ে বাদামি ও ছাই রঙের হয়ে পুরো সুপারিই রোগাক্রান্ত হয়।
৭. আক্রান্ত ফলগুলো পচে ঝরে পড়ে।
৮. ঝরা ফলের উপর জীবাণু সাদা স্তর তৈরি করে যাতে অনেক বীজকণার সৃষ্টি হয়।
৯. জীবাণু গাছের পাতায় ও কাণ্ডে ছড়িয়ে পড়ে এবং নতুনভাবে আক্রমণ ঘটায়।
১০. মাঝেমধ্যে এ রোগে আক্রমণের ফলে সুপারি গাছের মাথা মরে যায়।
> আরও পড়ুন- নারিকেল চাষ করে সাফল্য পাবেন যেভাবে
প্রতিকার
১. সুস্থ গাছ থেকে বীজ ফল সংগ্রহ করতে হবে।
২. আক্রান্ত গাছের সুপারি ছড়াসহ এবং নিচে পরে থাকা সুপারি সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।
৩. গোড়ায় পানি জমে থাকলে তা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. বর্ষার শুরুতে ছিদ্রযুক্ত পলিথিন দিয়ে ফলের ছড়াটি ঢেকে দিলে আক্রমণের সম্ভাবনা কমে।
৫. বর্ষার শুরুতে এবং মাঝামাঝি সময়ে প্রতি লিটারে ১০ গ্রাম তুতে ও ১০ গ্রাম চুন স্প্রে করতে হবে।
৬. গাছে মোচা বের হওয়ার কিছু আগে ছত্রাকনাশক দিতে হবে।
৭. প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর গাছে ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
এসইউ/এমএস