স্ট্রবেরি চাষ করার খুঁটিনাটি পদ্ধতি
গবেষকদের প্রচেষ্টায় এদেশে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু জাতের স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু জেলায় স্ট্রবেরি ফলানো সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে যেসব জেলায় শীত বেশি পড়ে ও বেশিদিন থাকে সেসব এলাকায় স্ট্রবেরি চাষ করা যেতে পারে।
উপযুক্ত মাটি
বেলে ও দোঁ-আশ মাটিতে প্রচুর জৈব সার প্রয়োগ করে স্ট্রবেরি ফলানো যায়। যেসব জমিতে পানি জমে সেখানে স্ট্রবেরি ফলানো সম্ভব নয়।
চারা তৈরি
স্ট্রবেরির চারা এখনও তেমন সহজে পাওয়া যায় না। কোনো কোনো নার্সারি থেকে সংগ্রহ করা যায়। এছাড়া স্ট্রবেরি গাছের গোড়া থেকে বেশকিছু লম্বা লম্বা লতা মাটির উপর দিয়ে লতিয়ে যায়। মাটির সংস্পর্শে লতার গিট থেকে শেকড় গজায়। শেকড়যুক্ত গিট কেটে নিয়ে মাটিতে পুঁতে দিলে নতুন চারা তৈরি হয়। অর্ধেক মাটি অর্ধেক গোবর সার মিশিয়ে পলিব্যাগে ভরে একটি করে শেকড়যুক্ত গিটসহ লতা পুঁতে দিতে হয়। এক্ষেত্রে একটি গাছ থেকে ১৮-২০টি চারা তৈরি করা সম্ভব।
জমি তৈরি
জমি ভালোভাবে চাষ করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে অন্তত ৩০ সেন্টিমিটার গভীর করে জমি চাষ দিতে হয়। যেহেতু স্ট্রবেরি গাছের শেকড় মাটির উপর দিকে থাকে; সেজন্য মাটি ঝুরঝুরা করে নির্ধারিত মাত্রায় সার মাটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।
চারা রোপণ
স্ট্রবেরির চারা মধ্যঅক্টোবর থেকে মধ্যডিসেম্বর পর্যন্ত রোপণ করা যায়। তবে নভেম্বর মাস স্ট্রবেরি চারা রোপণের জন্য সবচেয়ে ভালো। জমি তৈরির পর লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব হবে ৫০ সেন্টিমিটার ও প্রতি সারিতে ৩০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে স্ট্রবেরির চারা লাগাতে হয়।
সার প্রয়োগ ও সেচ:
বৃষ্টি হলে ক্ষেত থেকে অতিরিক্ত পানি সরিয়ে দিতে হবে। না হলে গাছ পঁচে যাবে। তবে ফল ধরা শুরু হলে ২-৩ দিন পর পরই সেচ দিতে হবে।
প্রতি একরে ৫০-৬০ কেজি ইউরিয়া, ৭০ কেজি টিএসপি এবং ৮০ কেজি এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। এসব সার একভাগ দিতে হয় ফুল আসার একমাস আগে এবং অন্য ভাগ দিতে হয় ফুল ফোটার সময়।
স্ট্রবেরি গাছের পরিচর্যা ও অন্যান্য যত্ন
গাছ লাগানোর পর গোড়া থেকে প্রচুর রানার বা কচুর লতির মতো লতা বের হতে থাকে। এগুলো জমি ঢেকে ফেলায় ফলন ভালো হয় না। সেজন্য গাছের গোড়ায় খড় বা পলিথিন বিছিয়ে দিতে হয়। পলিথিন সিট ৩০ সেন্টিমিটার পর গোলাকার ছিদ্র করে স্ট্রবেরি গাছের ঝোপকে মুঠো করে ঢুকিয়ে দিতে হয়। বেশি ফলন ও তাড়াতাড়ি ফল পেতে হরমোন গাছ পাতায় স্প্রে করা যেতে পারে।
ফল সংগ্রহ
ফল পুরো পাকলে লাল হয়ে যায়। বিক্রির জন্য পুরো লাল হওয়ার দরকার নেই। ফলগুলো শক্ত থাকা অবস্থায় তুলতে হবে। ফল তুলতে হবে বোটাসহ। ফল তোলার পর ১০-১২ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে। গড়ে প্রতি গাছে ১৫০-২০০ গ্রাম ফল ধরে।
এসইউ/এমএস