শিম চাষ করবেন যেভাবে
বাংলার ঘরে ঘরে শিম একটি জনপ্রিয় সবজি হিসেবে পরিচিত। কারণ শিম প্রোটিন সমৃদ্ধ সবজি। এর বিচিও সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। এটি জমি ছাড়াও রাস্তার ধারে, পথের আলে, ঘরের চালে, গাছেও ফলানো যায়। আসুন জেনে নেই শিম চাষের পদ্ধতি-
মাটি
দো-আশ ও বেলে দো-আশ মাটিতে শিম ভালো জন্মে।
জাত
দেশে পঞ্চাশটিরও বেশি স্থানীয় শিমের জাত আছে। আছে আধুনিক উচ্চ ফলনশীল জাতও।
সময়
আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত বীজ বপণের উপযুক্ত সময়।
পরিমাণ
সারিতে বোনা হলে ৪-৫টি দিতে হয়। হেক্টর প্রতি ১৫ কেজি হলেই হবে। আর মাদায় বোনা হলে ৪-৫টি দিতে হয়। হেক্টর প্রতি ১০ কেজি হলেই যথেষ্ট।
জমি
বেশি জমিতে আবাদ করা হলে কয়েকটি চাষ ও মই দেওয়া ভালো। মাদার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীরতার আকার ৪৫ সেন্টিমিটার রাখতে হবে। এক মাদা থেকে অন্য মাদার দূরত্ব হবে ৩.০ মিটার।
সার
গোবর ১০ কেজি, খৈল ২০০ গ্রাম, ছাই ২ কেজি, টিএসপি ১০০ গ্রাম, এমওপি ৫০ গ্রাম। মাদা তৈরির সময় এ সার প্রয়োগ করতে হবে। চারা গজালে ১৪-২১ দিন পর পর দু’কিস্তিতে ৫০ গ্রাম করে ইউরিয়া ও ৫০ গ্রাম করে এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে।
বপণ
প্রতি মাদায় ৪-৫টি বীজ বুনতে হয়। বীজ বপণের আগে ১০-১২ ঘণ্টা বীজ ভিজিয়ে নিতে হবে। প্রতিটি মাদায় ২-৩টি করে সুস্থ চারা রেখে বাকি চারা তুলে ফেলতে হয়।
পরিচর্যা
গাছের গোড়ায় যেন পানি না জমে। শুষ্ক মৌসুমে প্রয়োজনমতো সেচ দিতে হবে। মাঝে মাঝে নিড়ানি দিয়ে আলগা করে দিতে হবে। গাছ যখন ১৫-২০ সেন্টিমিটার লম্বা হবে; তখন মাদার গাছের গোড়ার পাশে বাঁশের ডগা মাটিতে পুঁতে বাউনির ব্যবস্থা করতে হবে।
রোগ-বালাই
শিমের সবচেয়ে মারাত্মক রোগ মোজেইক ও অ্যানথ্রাকনোজ। এছাড়া চারা অবস্থায় পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকা ক্ষতিকর। লাল ক্ষুদ্র মাকড়ও অনেক সময় বেশ ক্ষতি করে থাকে। ফুল ফুটলে থ্রিপস ক্ষতি করতে পারে। ফল পেকে এলে শিমের গান্ধি পোকা ক্ষতি করে। আইপিএম পদ্ধতি অনুসরণ করে এসব পোকামাকড় দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
সংগ্রহ
আশ্বিন-কার্তিক মাসে ফুল হয়। ফুল ফোটার ২০-২৫ দিন পর ফসল সংগ্রহ করা যায়। ৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে ফল দেয়। ফলন প্রতি শতকে ৩৫-৭৫ কেজি, হেক্টর প্রতি ১০-১৫ টন।
এসইউ/পিআর