ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

ভুট্টায় বদলে যাচ্ছে হাওরের কৃষকের জীবন

এসকে রাসেল | কিশোরগঞ্জ | প্রকাশিত: ১২:২৭ পিএম, ০৯ এপ্রিল ২০২৫

কিশোরগঞ্জে হাওরের চরাঞ্চল এখন সোনালি রঙে ভরপুর। কয়েক বছরে হাওরে কৃষকেরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকেছেন। ভুট্টায় উৎপাদন খরচ কম, লাভ বেশি। বন্যা কিংবা খরার ভয় নেই। এবারও ফলন হয়েছে বাম্পার। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে সোনালি ফসল ভুট্টা।

জানা গেছে, হাওরে আদিকাল থেকে ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন কৃষকেরা। কিন্তু অনুকূল পরিবেশ না পেলে খুব একটা লাভের মুখ দেখা যেতো না। তবে যখন দেশের পোল্ট্রি ও ফিড মিল খাতে ভুট্টার চাহিদা বাড়ে; তখন তাদের চোখে জ্বলে ওঠে নতুন সম্ভাবনার আলো। তারা ধান ছেড়ে আগলে ধরেন ভুট্টা চাষকে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ভুট্টায় বদলে যাচ্ছে হাওরের কৃষকের জীবন

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ বছর জেলায় ১২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। উৎপাদন ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ২১০ মেট্রিক টন। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১২ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে হয়েছে আবাদ। সবচেয়ে বেশি ভুট্টা চাষ হয়েছে চার উপজেলায়। চার উপজেলায় চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৭০৩ হেক্টর জমিতে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

জেলার নিকলী উপজেলায় ৩ হাজার ১১০ হেক্টর, মিঠামইনে ২ হাজার ৮৮০ হেক্টর, বাজিতপুরে ২ হাজার ১০ হেক্টর ও অষ্টগ্রামে ৯৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। হয়েছে বাম্পার ফলন। ফলে আশা জেগেছে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার। পাইকাররাও মাঠ থেকে কিনে নিচ্ছেন মণপ্রতি ১ হাজার থেকে ১১০০ টাকায়।

স্থানীয়রা বলছেন, ভুট্টা চাষে রবিশস্য নিয়ে হাওরের কৃষকদের কপালের চিন্তার ভাঁজ অনেকটাই দূর হয়েছে। উঁকি দিচ্ছে সম্ভাবনার নতুন ভোর। তবে বাজারজাত করতে কৃষকের স্বার্থ নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন তারা। তাহলেই প্রকৃতপক্ষে কৃষকদের কাছে ভুট্টা হয়ে উঠবে জীবন্ত স্বপ্ন।

বিজ্ঞাপন

ভুট্টায় বদলে যাচ্ছে হাওরের কৃষকের জীবন

আরও পড়ুন

মিঠামইন উপজেলার কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, ‘বন্যায় আমাদের হাওরাঞ্চলে ধান চাষে ঝুঁকি থাকলেও ভুট্টা চাষে তেমন ঝুঁকি নেই। কারণ বর্ষা আসার আগেই আমরা ভুট্টার ফলন ঘরে তুলতে পারি। এ ছাড়া ভুট্টা চাষে ধান চাষের চেয়ে খরচ কম হয় কিন্তু লাভ বেশি হয়।’

বিজ্ঞাপন

কৃষক শরিফ উদ্দিন বলেন, ‘জমিগুলো উঁচু, এগুলো পতিত থাকতো। এখানে ভুট্টা চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। যদি দরদাম ঠিক থাকে, তাহলে লাভবান হবো। কৃষি অফিস থেকেও আমরা ভুট্টা চাষে সহযোগিতা পেয়েছি।’

ভুট্টায় বদলে যাচ্ছে হাওরের কৃষকের জীবন

ইটনা হাওরের কৃষক নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘ভুট্টা চাষে আমাদের তিন ভাবে লাভ হয়। ভুট্টা বিক্রি করা, কাঁচা পাতা গবাদিপশুকে খাদ্য হিসেবে খাওয়ানো এবং গাছ শুকিয়ে লাকড়ি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।’

বিজ্ঞাপন

কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাদিকুর রহমান বলেন, ‘হাওরের নিরাপদ ফসল হিসেবেই ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা। হাওরে আগাম বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ভুট্টা চাষ করলে আগাম বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘ভুট্টার ভালো দাম ও চাহিদার কারণে কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে জনপ্রিয় হচ্ছে। ভুট্টা চাষে কৃষকদের নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে প্রযুক্তিগত পরামর্শ, বীজ নির্বাচন, সার ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে রোগবালাই দমন পর্যন্ত পাশে ছিল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।’

এসইউ/এমএস

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন