ভিডিও EN
  1. Home/
  2. কৃষি ও প্রকৃতি

মাশরুম চাষে সফল গাড়িচালক হাসিব

জেলা প্রতিনিধি | নারায়ণগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৪:১০ পিএম, ১১ মার্চ ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার তিনগাঁও এলাকার বাসিন্দা মো. হাসিব। কিছুতেই সফলতা ধরা দিচ্ছিলো না তাকে। সবশেষে এক বন্ধুর পরামর্শে তিনি মাশরুম চাষে মনোনিবেশ করেন। এই মাশরুম চাষেই সফলতা আসে। পরিবারের সদস্যদের নিয়েই মাশরুম চাষ করছেন। বছর শেষে ৭-৮ লাখ টাকা আয় করেন। তার ইচ্ছা, এটিকে শিল্পে রূপান্তর করবেন। মানুষের কর্মসংস্থান গড়ে তুলবেন।

এই পথের শুরুটা মসৃণ ছিল না মো. হাসিবের জন্য। নানা প্রতিকূলতার শিকার হতে হয় তাকে। স্বাধীনভাবে কাজ করার মানসিকতা থেকে ড্রাইভিং পেশায় যোগ দিয়েছিলেন। তাতে পরিবারকে সময় দিতে পারছিলেন না। অন্যের অধীনেই থাকতে হতো। এরপর নিজ এলাকায় অটোরিকশা চালানো শুরু করেন। এখানেও তৃপ্তি আসে না। সন্তানরা অটোরিকশা চালক হিসেবে বেড়ে উঠুক, এটি চাননি। স্বাবলম্বী হতে কোয়েল পাখি, হাঁস, কবুতরের খামারও করেন। পরে করেন শাক-সবজি চাষ। তাতেও সফলতা আসেনি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

২০২০ সালের শুরুর দিকে এক বন্ধুর পরামর্শে শুরু করেন মাশরুম চাষ। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কঠোর পরিশ্রম ও প্রবল আত্মবিশ্বাস থেকে বছরখানেকের মধ্যেই লাভের মুখ দেখেন। বর্তমানে বড় পরিসরে করছেন মাশরুমের চাষাবাদ। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছেন।

মাশরুম চাষে সফল গাড়িচালক হাসিব

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, হাসিবের নিজস্ব জমি নেই। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে দুই কক্ষের একটি টিনশেড ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। এক কক্ষে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন। অন্যটিকে বানিয়েছেন মাশরুম চাষের ল্যাবরেটরি কক্ষ। এখানেই তিনি মাশরুমের বীজ উৎপাদন করেন। দুটি কক্ষ ব্যবহার করা হয় মাশরুম উৎপাদনের জন্য।

মো. হাসিব জানান, সাভারের মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট থেকে বীজ কিনে আনেন। মাশরুম চাষ করে যে অর্থ খরচ হয়, তার চেয়ে দ্বিগুণ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। তার ফার্মে প্রতি মাসে ২০০-২৫০ কেজি মাশরুম উৎপাদন হয়। এসব মাশরুম পাইকারি ২০০-২৫০ টাকা এবং খুচরা ৩০০-৪০০ টাকা বিক্রি করেন। মৌসুমভেদে দাম কমবেশি হয়। শীতকালে উৎপাদন বেশি হয়। তাই তুলনামূলক কম দামে বিক্রি করা হয়। মাশরুম চাষ করে তার বাৎসরিক আয় প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা। স্ত্রী ও সন্তানরা তাকে সহযোগিতা করেন।

বিজ্ঞাপন

মাশরুম চাষে সফল গাড়িচালক হাসিব

মাশরুম চাষের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে হাসিব বলেন, ‘আগামীতে আরও বড় পরিসরে মাশরুম চাষ করবো। বিভিন্ন জাতের মাশরুম নিয়ে কাজ করবো। মাশরুমকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অবস্থায় নিয়ে যেতে চাই। আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার এগিয়ে আসবে, সেই প্রত্যাশাই করি।’

মাশরুম চাষে সফল গাড়িচালক হাসিব

বিজ্ঞাপন

স্ত্রী সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘মাশরুম চাষ খুবই ভালো লাগে। আমার স্বামীর কাছ থেকে শিখেছি। তাকে সহযোগিতা করি। প্রথমে বীজ কিনে মাশরুম চাষ করি। এখন নিজেরাই বীজ উৎপাদন করছি। এই মাশরুম নিজেরাও খাদ্য তালিকায় রেখেছি। অন্যকেও রাখতে উৎসাহিত করছি। এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।’

বন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘সাভারের মাশরুম উন্নয়নকেন্দ্র থেকে প্রকল্পের অধীনে একটি প্রশিক্ষণ হয়। হাসিব সাহেবকে ওখানে ১৫ দিনের আবাসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাকে এ পর্যন্ত ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। মাশরুম উৎপাদনের জন্য দুটি ঘর তৈরি করে দিয়েছি। একজন উদ্যোক্তার যা যা প্রয়োজন তা দেওয়া হয়েছে।’

মোবাশ্বির শ্রাবণ/এসইউ/জেআইএম

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন