জুলাই স্পিরিট হবে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের প্রধান হাতিয়ার

সাহিত্য ডেস্ক
সাহিত্য ডেস্ক সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:২০ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
ছবি: সংগৃহীত

‘সাংস্কৃতিক আন্দোলন’ আয়োজিত ‘অভ্যুত্থান পরবর্তী সাংস্কৃতিক আন্দোলন কেন জরুরি’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৭ ডিসেম্বর রাজধানীর পরীবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

কবি সানাউল্লাহ সাগরের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি ও গবেষক রাজা আবুল কালাম আজাদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ‘সাংস্কৃতির আন্দোলন’র আহ্বায়ক কবি পলিয়ার ওয়াহিদ।

পলিয়ার ওয়াহিদ বলেন, ‘সাংস্কৃতিক আন্দোলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন তথা ভারতের ননপলিটিক্যাল শিল্প-সাহিত্যের হেজিমনি থেকে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে মুক্ত করা। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক পরামর্শ ও গঠনমূলক সমালোচনার লক্ষ্যে কবি-লেখক-শিল্পীদের নিয়ে কাজ করা। জুলাই স্পিরিটকে জারি রাখতে হলে ঐক্যের বিকল্প নেই। বিগত সময়ে ঐক্যের অভাবে ও আওয়ামী জাহেলিয়াতের লেখকদের দালালির কারণেই ভারত বাংলাদেশকে নোংরাভাবে ব্যবহার করতে পেরেছে। ফলে শিল্প-সাহিত্যের প্রতিষ্ঠানগুলোয় ফ্যাসিস্টের দালালদের অপসারণ করতে হবে।’

jagonews

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কবি ও প্রাবন্ধিক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট ও খুনি হাসিনার পলায়নের পর হাসিনা সৃষ্ট ফ্যাসিবাদের দালালি সাংস্কৃতিক শেকড় উপড়ে ফেলে বাংলাদেশি সংস্কৃতির নব-অভ্যুদ্বয়ের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ জুলাইয়ের স্পিরিট হবে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের প্রধান হাতিয়ার। এ জন্যকে ঐক্যবন্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’

কবি ও কথাসাহিত্যিক আসমা সুলতানা শাপলা বলেন, ‘মনোউপনিবেশ কীভাবে বহু বছর ধরে আমাদের ভেতরে ক্রিয়াশীল রয়ে গেছে আর তা ব্রিটিশ পরবর্তী কলকাতা ধরে রেখে ভাষার ওপর মোড়লগিরি ফলিয়ে আজ অবধি পৌঁছে দিয়েছে বাংলাদেশের সাহিত্যে। ফলে এই উপনিবেশের কারণে এখনো প্রমিত কলকাতা রীতির পক্ষে ভারতীয় আগ্রাসনকে বাংলাদেশের কোনো কোনো লেখক এখনো বেগবান করার পক্ষে। তবে আশার কথা, এর বিরুদ্ধে অলরেডি বিপ্লবের সূচনা হয়েছে আরও ১৫-২০ বছর আগেই। আমরা এখন এসে তার ধারাটা ধরবার চেষ্টায় আছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষার্থী বন্ধুদের পুলিশ তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে রাজপথে স্লোগানে সুর ধরতে গিয়ে আমি আমার মেয়ের চোখে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যে রোশ ও জোশ দেখেছি; সেটাই এই প্রজন্মের ভাষা। এরাই ৬ আগস্টের পরে মোহাম্মদপুর থেকে লালমাটিয়া, হাতিরঝিল থেকে গুলশান অবধি গ্রাফিতি করেছে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। এই যে গতি ও শক্তি, এটাই ধরে রাখতে হবে।’

jagonews

কবি ও জাগ্রত ছাত্রশক্তির সমন্বয়ক রিদওয়ান নোমানী বলেন, ‘খুনি হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। গণশত্রুদের চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত বিচার করতে হবে। অন্যথায় মব সংস্কৃতি বন্ধ করা সম্ভব হবে না।’

অনুষ্ঠানে অতিথি আলোচক ছিলেন লেখক ও অর্থনীতিবিষয়ক গবেষক শামস আরেফিন ও সংস্কৃতিবিষয়ক গবেষক নুরুন্নবী শান্ত। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জসীমউদ্দিন আপন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাফাত রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কবি শাইখ আল তমাল, শরীফ হাসান, শেখ সাদী ইমু, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ, সাংবাদিক জোবায়ের আহমেদ মুরাদ, জান্নাতুল মাওয়া, আজিম ভূঁইয়া, রাশেদ হাসান, মুনতাসিক মুকিত ও নাদিম প্রমুখ।

সংহতি প্রকাশ করেন কবি এনামূল হক পলাশ, মুসা আল হাফিজ, নকিব মুকশি, সাজ্জাদ সাঈফ, এহসান হাবীব, মাহফুজা অনন্যা, সাঈদ হাফিজ, মাসুম মুনওয়ার, বহ্নি কুমুস, রাজিয়া সুলতানা ঈষিতা, চঞ্চল বাশার, শাদমান শাহিদ, মঈন মুনতাসীর, লেখক দিদার মুহাম্মদ, কথা হাসনাত, মঈন মোশাররফ, দীপান্ত রায়হান, মাহদী আনাম, ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম, আবৃত্তিশিল্পী তরিকুল ফাহিম, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের আহমেদ ইসহাক, ইনকিলাব মঞ্চের শরীফ আল হাদী ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য কবি সাইয়েদ জামিল।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।