মুকিদ চৌধুরীর নাট্যোপন্যাস

গোমতীর উপাখ্যান: পর্ব-১৭

সাহিত্য ডেস্ক
সাহিত্য ডেস্ক সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:২০ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

গোমতীর স্রোত: রাজমালা

নিস্তব্ধতার পুনর্বিন্যাস, ভিক্ষার পুনর্জাত অঞ্জলি
উচ্ছন্ন-উচ্ছিষ্ট উপনিষদ, অবাধ্য-অতৃপ্ত মঞ্জরি

সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে। অন্ধকারের নির্জনতার মধ্যেই যুদ্ধ আসন্ন হয়ে পড়েছে। যোদ্ধারা দ্রুত এগিয়ে আসছে। তাদের মুখে একটি অস্বাভাবিক বৈবর্ণ, চোখে পৈশাচিক দীপ্তি, অধরে ক্রূর হাস্যরেখা। এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের জন্য ত্রিপুরা ও মণিপুর উভয়ই প্রস্তুত। কী ভয়ানক অবস্থা! পার্বত্য ত্রিপুরার সীমান্তে মহারাজের দুই জামাতার শিবির পড়েছে। তাদের মতিগতি সঠিক করে কিছুই বলা যায় না।

ত্রিপুরার একজন যোদ্ধা তার সহকর্মীকে বলল, আর-একটু ভেবে বলো তুমি! ত্রিপুরার পার্বত্য রাজধানী থেকে কম হলেও প্রায় এক সপ্তাহের দূরত্ব, অশ্বগামী হয়ে এলেও তাই হবে। তোমার শব এত দূর বয়ে নিয়ে যাওয়া কীভাবে সম্ভব হবে?
দ্বিতীয় যোদ্ধা বলল, আমি যদি আর ফিরে না যাই?
ওর মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল প্রথম যোদ্ধা। তারপর আকাশের দিকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে সে জিজ্ঞেস করল: এখানেই যদি অপেক্ষা করি সেই মুহূর্তটির জন্য, বান্ধব?
জবাব দেওয়ার জন্য মনে-মনে একটু প্রস্তুতি নেয় দ্বিতীয় যোদ্ধা। তারপর বলল: মৃত্যুর জন্য কারো প্রতীক্ষা করতে হয় না, বান্ধব। জন্ম যেমন একটা প্রাকৃতিক নির্বাচন অথবা ঘটনা, তেমনই মৃত্যুও জীবনের প্রতি প্রকৃতির এক বিশেষ অবস্থান অথবা দুর্ঘটনা। এতে জীবাত্মা, পরমাত্মা, সৃষ্টিকর্তা অথবা পরমেশ্বরের কোনো হাত নেই!
দর্শনের কথা বললে, বান্ধব। আর অগ্রসর হয়ো না।

দুজনই চুপ করে থাকল অনেকক্ষণ। রাত এগিয়ে চলে নিয়ম অনুযায়ী। এবারের বর্ষাঋতু এসেছে গ্রীষ্মের উত্তাপ ও দাবদাহ সঙ্গে নিয়ে। গাছপালার চকচকে সবুজ, রং-বেরঙের বাহারি ফুল ও পাখিদের বিচিত্র কলকাকলি না থাকলেও এটিকে গ্রীষ্মই বলা যেত। নিচু জায়গার কাদামাটি শুকিয়ে ঘাস গজানোর আগেই মাটি কাদা-কাদা হয়ে গেছে। ঘুমভাঙার আগেই গর্ত থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে সরীসৃপেরা। দিনের বেলায় আকাশে সূর্য জ্বলে থাকে এমনভাবে যে, সামনের বছরটা নিয়ে এক আতঙ্ক দেখা দিয়েছে সকলের মনে। প্রকৃতির এই নিমর্মতা যোদ্ধাদের শক্ত শরীরও আর সামলাতে পারছে না। অসুস্থ হয়ে পড়ছে কেউ কেউ। এটা-ওটা লেগেই আছে অন্যদের। দিব্যচোখে জীবনের পরিণতি দেখতে পায় শশিভূষণও।
যে-বিদ্বেষবীজ মহারাজ মাণিক্য ত্রিপুরার রাজপ্রাসাদে রোপণ করেছিলেন তা কৃষ্ণাভামিনী ও শশিভূষণের অন্তরে পত্রপল্লবিত হয়েছে। পিতৃব্যসম রাধারমণের সুপরামর্শে ও ছায়াতলে বেড়ে উঠলেও কৃষ্ণাভামিনীর অন্তর এখন বিদ্বেষে ভরপুর। সে যুদ্ধবিদ্যায়ও পারদর্শী হয়ে উঠেছে। যদিও ত্রিপুরা তার জৌলুস হারিয়ে এখন ক্ষয়িষ্ণু। জলে ডোবা এক পতঙ্গের মতো লতাপাতার আশ্রয়ে কোনোভাবে টিকে আছে। ত্রিপুরার স্বর্ণযুগ এখন অতীত, আর কখনো আসবে বলেও মনে হয় না, ভবিষ্যৎ যেন কৃষ্ণগহ্বরের অধীনে। মনে-মনে আশ্চর্য হয় কৃষ্ণাভামিনী: কীভাবে এত বিশাল রাজ্য তার পিতা বিস্তার করেছিলেন! আমার মধ্য দিয়েই কি তা তলিয়ে যাবে! ত্রিপুরার এমনইভাবে তলিয়ে যাওয়ার আগে, মণিপুর রাজ্য পুরোপুরি অধিকার করে ফেলা উচিত।

মণিপুরকে নিজের করায়ত্তে নেওয়ার স্বপ্নে সে বিভোর। সে যেন লোলুপদৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে এই বিশাল মণিপুরের দিকে। কৃষ্ণাভামিনীর ভাবনা এখন শুধুই পার্বত্য ত্রিপুরাকে ঘিরেই নয়, সমতল ত্রিপুরা ও মণিপুর উভয় গ্রাস করার জন্যও। পিতার কাছ থেকে লাভ করা ভেঙে তিন টুকরো সেনাবাহিনীকে পরাক্রমশালী করেছে সে। এর পেছনে রয়েছে রাজ্যের বিপুল উদ্বৃত্ত অর্থসম্পদ। কৃষি-উদ্বৃত্ত, খনির উৎপাদন, কুটিরশিল্পীদের অতিসূক্ষ্ম ও মূল্যবান সব সামগ্রী উৎপাদন ইত্যাদি রাজকোষকে যথেষ্ট স্থিত করে তুলেছে। ফলে সে পার্বত্য ত্রিপুরাকে মনে করছে প্রতিবেশী রাজ্যের সঙ্গে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাই এই রাজ্যগুলো একে একে পার্বত্য ত্রিপুরার পদানত হবে।

শশিভূষণ অবশ্য এরই মধ্যে নিজেকে পার্বত্য ত্রিপুরার রাজা হিসেবে ঘোষণা করেছে। রাজ্যাভিষেকের পর সে রাজ্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণে মনোনিবেশ করে। সেও জানে, মণিপুরের সঙ্গে যুদ্ধে জয়লাভ করতে পারলে কোনোভাবে পার্বত্য ত্রিপুরাকে টিকিয়ে রাখা যাবে। এক পুরুষে কোনো রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয় না, এক পুরুষে তা শেষও হয়ে যায় না। রাজ্যপ্রতিষ্ঠা করতে চাইলে পরবর্তী বংশধরদের জন্য সুদৃঢ় ভিত্তি তৈরি করে দিয়ে যেতে হয়। যেমন তা করেছিলেন মহারাজ দ্রুহ্য মাণিক্যের পিতা। তিনি বাহুবলে মহারাজের স্বীকৃতি ছিনিয়ে এনেছিলেন। দক্ষিণ-পূর্ব থেকে বর্মণ-দস্যুদের হটিয়ে পার্বত্য ত্রিপুরা করায়ত্ত করেছিলেন। পশ্চিমের সমতল ত্রিপুরাকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এনেছিলেন। গোমতী নদী অতিক্রম করে রাজ্য সম্প্রসারণ করেছিলেন। রাজ্য প্রতিষ্ঠায় উপর্যুপরি সাফল্যে ধর্মের প্রতিও তার আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়। শিবমন্দির গড়া ও পুজো-অর্চনায় মেতে থাকেন অনেকটা সময়জুড়ে।

রাজ্যবিস্তারের জন্য জনগণের সমর্থন যে খুবই জরুরি এটি বুঝতে পারে শশিভূষণ। তাই রাজ্যের সর্বত্র জনকল্যাণমূলক সেবাকার্য ছড়িয়ে দিতে থাকে সে। পার্বত্য ত্রিপুরা জঙ্গলাকীর্ণ হওয়ায় বর্মণ-দস্যুদের অত্যাচার মাঝেমধ্যে অসহনীয় হয়ে ওঠে। ওদের কুকীর্তি ঠেকানো বেশ কষ্টসাধ্য। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে পাওয়া কর রাজ্যের রাজস্ব আয়ের একটা বিশাল উৎস। পাহাড় দিয়ে ঘেরা বাণিজ্যপথগুলো সুরক্ষিত রাখার জন্য সব রকম চেষ্টা করে চলে শশিভূষণ। অজানা অনেক দেশ থেকে ছোট-বড় অসংখ্য বণিকের শত-সহস্র বাণিজ্যিক কাফেলা এসে ভিড় করে পার্বত্য ত্রিপুরার রাজধানীতে। এসবের কোনো নাম-নিশানা নেই, হিসাবও নেই। পার্বত্য ত্রিপুরার সুগন্ধি ফল ও খাদ্যশস্যের কদর যেন পৃথিবীর শেষপ্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। শস্যের বিনিময়ে এখানকার বণিকেরা স্বর্ণমুদ্রা ছাড়া অন্যকিছু নিতে চায় না। এসব স্বর্ণ নাকি আসে আরব বণিকদের কাছ থেকে। আরব বণিকেরা অবশ্য এসবের গুপ্তখবর প্রকাশ করে না। প্রয়োজনও নেই। ত্রিপুরার সমৃদ্ধিই আসল কথা। উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য ও দেশের ভেতরে প্রস্তুত বস্ত্রালংকারের বিনিময়ে প্রচুর উদ্বৃত্ত অর্থ জমে রাজকোষের। এগুলো পেয়ে রাজকোষ উপচে পড়ে। অর্থব্যয় করা না হলে ওর কোনো মূল্য নেই। রাজকোষের উদ্বৃত্ত অর্থেই সেনাবাহিনীর প্রসার ঘটে।

রাজ্যজয় করার কোনো প্রয়োজন না-থাকলেও মনের অনিয়ন্ত্রিত তপ্তবিদ্বেষ মেটাতেই মণিপুরের সীমান্তে এসে উপস্থিত হয়েছে রাজা শশিভূষণ ও রাজমহিষী কৃষ্ণাভামিনী। এই বিদ্বেষ নিবারণের জন্য বিশ্বের কোথাও-না-কোথাও প্রতিদিন যুদ্ধ হচ্ছে। উদ্দেশ্য: প্রাণ-সংহার। সম্পদ ধ্বংস। এর যেন কোনো বিকল্প নেই। দিগ্বিজয়ী এক রাজা হিসেবে দেখতে চায় শশিভূষণ নিজেকে। কতটুকু প্রমাণসিদ্ধ অথবা সত্য তা সে জানে না। গোমতী নদীর পূর্বদিকের সকল অংশ নিয়ে একটা বিশাল রাজ্যের কল্পনা করে সে।
শশিভূষণের উদ্দেশ্যে কৃষ্ণাভামিনী ক্ষিপ্তকণ্ঠে বলল, আমি কোনো ভাবেই মনোমোহিনীর বিজয় সহ্য করব না।
কৃষ্ণাভামিনী অত্যন্ত কটুভাষী। তবে শশিভূষণ মনে করেছিল যে, কৃষ্ণাভামিনী নিজেকে সংশোধন করবে। তার বিবেক জাগবে। বিবেকের তাড়নায় স্বামীর প্রতি অনুরাগী হয়ে উঠবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তার স্বভাবের কোনোই পরিবর্তন হলো না। উপরন্তু আগের তুলনায় সে হিংস্রতর হয়ে উঠল। রাগের মাত্রা, অসদাচরণের পরিমাণ বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে কৃষ্ণাভামিনী। বারবার কৃষ্ণাভামিনীর লাবণ্যময় শরীরটি, তার উন্নত কুচযুগল, তার পুরুষ্টু নিতম্ব, তার যোনিদেশ রাজা শশিভূষণের চোখের সামনে ভেসে উঠতে থাকল, হয়তো তাই রাজা শশিভূষণ নরম গলায় বলল: ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদেরই জয় হবে।

ওঁ জবা কুসমসঙ্কাশং, কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্।
ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নং, প্রণতোহস্মি দিবাকরম্ \

সূর্যপ্রার্থনার প্রতিটি শব্দ পৃথক পৃথক ব্যঞ্জনা নিয়ে জলদগম্ভীর কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে। প্রথম থেকে শেষপর্যন্ত মন্ত্রোচ্চারণ একবার হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়বার শুরু করছে প্রার্থনামন্ত্র মণিপুরের যুবরাজ নিত্যানন্দ। অতঃপর তৃতীয়বার, এইভাবে করজোড়ে সূর্যমন্ত্রটি উচ্চারণ করে যাচ্ছে বহুবার। সকাল থেকেই একই ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে নিমীলিত চোখে এক মনে সূর্যধ্যান করে যাচ্ছে সে।

সূর্য এখন মাথার ওপর স্থির। সূর্যের তাপ এই মুহূর্তে ভীষণ প্রখর। সেদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই তার। সেনাসমাবেশ সম্পন্ন করে সেনাবাহিনীর পুরোভাগে এসে দাঁড়াল যুবরাজ নিত্যানন্দ। হাতে ধনুর্বাণ ও তরবারি। ধাতুর ফলকবিশিষ্ট দুটি বর্শা উৎক্ষিপ্ত করে পার্বত্য ত্রিপুরার উদ্দেশ্যে একক যুদ্ধের আহ্বান জানাল। বীরদর্পে এগিয়ে আসতে লাগল যুবরাজ নিত্যানন্দ।

কোনো পশুর মৃতদেহ অথবা কোনো শৃঙ্গধারী মৃগদর্শনে তাকে তৎক্ষণাৎ ভক্ষণ করার জন্য যেমন উল্লসিত হয়ে ওঠে কোনো ক্ষুধিত সিংহ; ঠিক তেমনই এক পাশবিক উল্লাসে উজ্জ্বল হয়ে উঠল যুবরাজ নিত্যানন্দের মুখমণ্ডল। তাকে অগ্রসর হতে দেখে—পার্বত্য পথে যেতে যেতে সহসা যেমন সাপ দেখে কোনো লোক ভয়ে মলিন হয়ে কাঁপতে কাঁপতে পিছিয়ে যায় তেমনই—শশিভূষণ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পার্বত্য ত্রিপুরার সেনাদের ভিড়ে মিলিয়ে গেল।

যুবরাজ নিত্যানন্দ তীক্ষ্ণকণ্ঠে চিৎকার করে বলল, যুদ্ধ করার যদি তোমার একান্তই ইচ্ছে থাকে তাহলে তুমি একা আমার সঙ্গে সম্মুখরণে অবতীর্ণ হও। আমাদের জয়-পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গেই সকল সমস্যা যেন শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হয়ে যায়।
একথা শুনে পার্বত্য ত্রিপুরার সেনারা আনন্দিত হলো। তারা চাইছিল যুদ্ধবিরতি আর বিশ্রাম। ঠিক হলো একটু দূরে একটি পর্বতশৃঙ্গে যুদ্ধ হবে। দুই পক্ষের যোদ্ধা যাবে একা। অস্ত্রেবর্মে সজ্জিত হয়ে যুবরাজ নিত্যানন্দ একটি অশ্ব চেপে সেই পর্বতের দিকে চলল। তার সেই যুবকমূর্তি দেখে মণিপুরের প্রতিটি বীরযোদ্ধা মনে-মনে বলতে লাগল: তাকে কেন মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে!

যুবরাজ নিত্যানন্দ ও রাজা শশিভূষণের যুদ্ধ শুরু হলো। এই যুদ্ধ পশুশক্তির বিরুদ্ধে মানুষের আত্মবিশ্বাসের। রাজা শশিভূষণ শক্তিমান, যুবরাজ নিত্যানন্দ ক্ষিপ্র। অবশেষে রাজা শশিভূষণ পরাজিত হলো। যুবরাজ নিত্যানন্দ বিজয়ী বীর হিসেবে ফিরে এলো। মণিপুরি যোদ্ধাদের উল্লাস শুরু হলো। যুবরাজ নিত্যানন্দ আশাতীত কীর্তি স্থাপন করল।

বুকের মধ্যে প্রচণ্ড ক্রোধ আর দুঃখ বহন করে আহত রাজা শশিভূষণ ফিরে এলো তার সেনাশিবিরে। অবশেষে সমবেত ত্রিপুরার সেনাদের সামনে রাজদণ্ড হাতে এসে দাঁড়াল। বলল: আমার বীর বন্ধুগণ, দুঃখের বিষয় এই যে, আজ রণদেবতা আমার সঙ্গে বিরূপতা করেছেন। তিনি চাইছেন, এই মুহূর্তে পরাজয়ের দুর্বিষহ গ্লানি নিয়ে পার্বত্য ত্রিপুরায় ফিরে যাই। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে, আমার এত সাহসী, রণনিপুণ ও শক্তিশালী যোদ্ধা থাকতেও আমাকে পরাজয় স্বীকার করতে হলো। ভাগ্যের এ কী পরিণতি! চলো, পার্বত্য ত্রিপুরার রাজধানীতে ফিরে যাই।

গোমতীর শূন্যস্রোত
ঠাকুরদা ও নাতনি

ঠাকুরদা
অন্যদিকে, মণিপুরের যুবরাজ নিত্যানন্দ যুদ্ধের মাধ্যমে উদীয়মানকে পরাজিত করে আর মহারাজকে তার রাজ্য ফিরিয়ে দেয়। অতঃপর মহারাজ তার কন্যা কৃষ্ণাভামিনী ও সুহাসিনীকে তাদের স্বামীসমেত নির্বাসনে পাঠিয়ে দেন আর তিনি মনোমোহিনী ও নিত্যানন্দকে নিয়ে সুখে-শান্তিতে দিন কাটাতে থাকেন।

নাতনি
এখানেই বুঝি গল্প শেষ?

ঠাকুরদা
হ্যাঁ, শেষ। আগামীকাল আবার নতুন গল্প হবে।

চলবে...

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।