কুমার অরবিন্দের গল্প: আগুনে কুড়ানো ফুল

সাহিত্য ডেস্ক
সাহিত্য ডেস্ক সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৩৪ এএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

বিয়েতে সাবাহর প্রবল আপত্তি ছিল। বিয়েটা বন্ধ করার অনেক চেষ্টাও সে করেছিল। অথচ নিয়তির কী নির্মম পরিহাস! ইমাদের সাথেই তার বিয়েটা হলো। যদিও ইমাদ শিক্ষিত, মার্জিত, ভদ্র একটা ছেলে। কর্পোরেট অফিসে ভালো বেতনের জব করছে। বন্ধুমহলে সজ্জন, মিতভাষী হিসেবে তার সুখ্যাতিও আছে। সাবাহর পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ইমাদের এসব গুণাবলিকে পছন্দ করেই বিয়েটা ঠিক করে। এই যুগে এমন গুণবান ছেলে পাওয়া যায় নাকি? ইমাদকে সবাই জামাই হিসেবে সাদরে বরণ করলেও সাবাহ কিছুতেই স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারছে না। একটা বিষয় অহর্নিশ তার মনের মধ্যে হুল ফুটিয়ে যাচ্ছে।

বিয়ের পরপরই স্ত্রীকে নিয়ে ইমাদ ঢাকা চলে আসে। দুই রুমের ছোট একটা বাসা আগেই ভাড়া নিয়ে রেখেছিল। কিছু প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র কেনা হয়েছে, আরও অনেক কিছু কেনার বাকি। বিবাহপরবর্তী সময় কীভাবে কাটাবে তা নিয়ে পরিকল্পনার অন্ত ছিল না ইমাদের। দুজন মিলে ছোট সংসারটাকে সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখবে। জীবনের প্রতিটি কোণ হাসি আর আনন্দ দিয়ে ভরিয়ে রাখবে। দুঃখ-বেদনাকে আটকে রাখবে ভালোবাসার বেড়িবাঁধ দিয়ে। কিন্তু ইমাদের সেই জীবনকল্পনায় বাস্তবতার বিষাদকালো ছোপ পড়েছে। যার সঙ্গে সবচেয়ে ভালো বন্ধুত্ব হবে ভেবেছিল, যাকে চোখের মণি করে রাখবে ভেবেছিল; সেই স্ত্রী তার মুখই দেখতে চায় না! যার সাথে সুখ-দুঃখের প্রেমালাপ আর জীবনের প্রলাপ বকে বাকি সময় পার করতে চেয়েছিল; সে তার সাথে কথা বলে না! যদিওবা দু-একটা কথার উত্তর দেয়; তবুও এমনভাবে দেয় যেন তাদের মধ্যে হাজার বছরের বৈরিতা।

বিয়ের আগেই হানিমুনের জন্য ছুটি নিয়ে রেখেছিল ইমাদ। কিন্তু সাবাহ কিছুতেই হানিমুনে যেতে রাজি নয়। যাকে সে স্বামী হিসেবে মানতে পারেনি; তার সাথে হানিমুনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। হানিমুনে না যাওয়ায় ইমাদের মনে প্রচুর দুঃখ জমে আছে। শুধু শুধু ছুটিগুলো নষ্ট হচ্ছে। এরচেয়েও বড় দুঃখ সাবাহ তাকে স্বামী হিসেবে মানতে পারছে না। বাসার কোনো কাজও করছে না। না খেয়ে শুয়ে থাকে তবু রান্নাঘর মুখো হয় না। সারাদিন বসে, নয়তো শুয়ে, নয়তো জানলা খুলে উদাস চোখে তাকিয়ে থাকে। ইমাদ মাঝেমধ্যে বোঝানোর চেষ্টা করলে সে রেগে চিৎকার করে। ইমাদের মনে হয় এক হিংস্র বাঘিনীকে সে বন্দি করে রেখেছে। সে অবশ্য এটাও জানে, আদর আর ভালোবাসা পেলে বাঘিনীকেও পোষ মানানো যায়।

বন্ধু ও কলিগরা জানে ইমাদের দাম্পত্য জীবন বেশ সুখের। তাদের কাছে সে সুন্দরী বউয়ের অনেক প্রশংসা করে। সাবাহর গুণের কথা বলে সে শেষ করতে পারে না। অনেক বন্ধু ও কলিগ ইমাদের এহেন স্ত্রীভাগ্যকে রীতিমতো ঈর্ষা করে। অথচ কেউ জানে না বাইরের হাসি-খুশির অন্তরালে ভেতরে তার লাভার স্রোত বইছে।
বিয়ের পর থেকেই সাবাহ আলাদা ঘুমায়। ইমাদ যতটা তার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করে সে ততটাই নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখে। পুরুষ মানুষের গন্ধ তার সহ্য হয় না। ইমাদ অফিস থেকে ফেরার পথে প্রতিদিন রজনীগন্ধার একটা স্টিক নিয়ে আসে। রজনীগন্ধা সাবাহর অনেক পছন্দ হলেও ইমাদের আনা রজনীগন্ধা সে দুমড়ে-মুচড়ে ফেলে দেয় ময়লার ঝুড়িতে। তবু একদিনও ইমাদের রজনীগন্ধা নিয়ে আসতে ভুল হয় না।

অফিসে আজ অনেক ধকল গেছে। বাসায় ফিরেই ইমাদ বিরিয়ানির প্যাকেট দুটো ডাইনিং টেবিলে রাখে। দরজাটা খুলে দিয়েই শুয়ে পড়েছে সাবাহ। রজনীগন্ধার স্টিকটাকে স্ত্রীর পাশে শুইয়ে রাখে ইমাদ। কাছে গিয়ে বসে। সাবাহর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে গেলেই সে এক ঝটিকায় হাত সরিয়ে দেয়। আকাঙ্ক্ষী পুরুষটি শায়িত অপরূপ নারীটিকে আপাদমস্তক দেখে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে সাথে অপুরুষস্পর্শ অনুচ্চ বক্ষ দুটি মৃদু ওঠানামা করছে। অধরপদ্মের খাঁজে খাঁজে জমে আছে অশোষিত মধু। ইমাদের ঠোঁট শুকিয়ে আসে। পৌরুষের আদিম লালসা বিষধর সাপের মতো ফনা তোলে। সে ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। খাবার নিয়ে আসছি; তুমি ওঠো, বলে ওয়াশরুমে যায়।

ওয়াশরুম থেকে ফিরে দেখে তেমনই শুয়ে আছে সাবাহ। নিস্তেজ, নিস্তরঙ্গ একটা মাংসপিণ্ড। অথচ চাইলেই সে স্রোতস্বিনী নদী হয়ে উঠতে পারে। ইমাদকে ভাসিয়ে নিতে পারে কামের অথবা প্রেমের বন্দরে। তোমার জন্য বিরিয়ানি নিয়ে আসছি, ওঠো। ইমাদের কণ্ঠে অনুনয়ের স্বর।
সাবাহ কিছুই বলে না। ইমাদ সাবাহর হাত ধরে টান দেয়, ওঠো, আমার খুব ক্ষুধা পেয়েছে।
আমার কোনো ক্ষুধা নেই। তুমি খাও। শুষ্ক কণ্ঠে জবাব দেয় সাবাহ।
তুমি না দিলে আমি কীভাবে খাবো?
কেন? তুমি নিয়ে খেতে পারছ না? সাবাহর কণ্ঠ একটু রাগি শোনায়।
ইমাদের অবদমিত পৌরুষ আবার জাগ্রত হতে চায়। ইচ্ছে করে সাবাহকে জড়িয়ে ধরে আদরে আদরে ভরিয়ে দিতে। অতৃপ্ত ক্ষুধা নিবারণের জন্য নিয়ে খেতেই ইচ্ছে করে। কিন্তু সে মার্জিত ছেলে। স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করা তার রুচিবিরুদ্ধ।

অনেক জোরাজুরির পর সাবাহ বিছানা ছেড়ে ওঠে কিন্তু সে কিছুতেই বিরিয়ানি খাবে না। বিরিয়ানির গন্ধে তার বমি আসে। ইমাদের গলায় কাতরতা, তাহলে অন্য কিছু নিয়ে আসি?
আমি বাইরের খাবার পছন্দ করি না, এটা কতবার বলতে হবে? তাছাড়া আমি এখন কিছুই খাবো না।
কোনো উপায়ান্তর না দেখে ইমাদ রান্না করতে যায়। ধৈর্যের বাঁধ তারও ভেঙে গেছে। আর কত? চুলায় চাল-ডাল বসিয়ে সে সাবাহর কাছে আসে। তুমি কী চাও একটু ক্লিয়ারলি বলবা আমাকে? ইমাদ স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করে।
আমি কিছুই চাই না।
তাহলে তুমি আমার সাথে এমন করছো কেন?
কারণ তোমার সাজা পাওয়া উচিত। সাবাহর কণ্ঠে তপ্ত লোহার আঁচ।
কেন? কী করেছি আমি? বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করে ইমাদ।
আমার মত না নিয়েই তুমি আমাকে বিয়ে করেছ।
দুই পক্ষের আত্মীয়-স্বজন দেখেশুনে আমাদের বিয়ে দিয়েছেন। তোমার মত আছে কি নেই এটা তো আমার জানার কথা নয়। তোমার পরিবার যখন রাজি তার মানে তুমিও রাজি, এটাই তো আমি জানতাম।
তবুও খোঁজ নিতে পারতে।

সাবাহর কথায় চুপ থাকে ইমাদ। সাবাহ বিছানা ছেড়ে ওঠে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চুলগুলোকে একত্রিত করে খোপা বাঁধে। বিমূর্ত সব ভাবনা মাথায় নিয়ে নিশ্চল মূর্তির মতো বসে থাকে। ইমাদ এবার গিয়ে রান্না দেখে আসে। এসে অভিমানী স্ত্রীর গা ঘেঁষে বসে। শীতল কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, তুমি কি চাও না আমরা একসাথে সংসার করি? একসঙ্গে থাকি?
না। চাই না।
রাগান্বিত হয়ে ইমাদ বলে, তাহলে আর কি? ডিভোর্স পেপার রেডি করি?
না।
সংসারও করবা না আবার ডিভোর্সও দিবা না, তা কেন?
আমি তোমার সাথে আমার পরিবারকেও সাজা দিতে চাই। তারা আমার মতের গুরুত্ব এতটুকুও দেয়নি। তাদের কাছেও আমি আর ফিরে যাবো না, তোমার সাথেই থাকবো কিন্তু সংসার করবো না। আমি এখানে থেকেই তিলে তিলে শেষ হয়ে যাবো।
তুমি কি অন্য কাউকে পছন্দ করতে?
সেটাই আমার কপাল! ইমাদের দিকে আড়চোখে তাকায় সাবাহ। তেমন কেউ থাকলে এতদিন তোমার এখানে পড়ে থাকতাম না।
মনে মনে কিছুটা খুশি হয় ইমাদ। তাহলে আমার অপরাধ এটাই যে, আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করিনি বিয়েতে তোমার মত আছে কি নাই? নাকি আরও কোনো অপরাধ আছে?
আছে।
কী?
তুমি দেখতে ভীষণ কালো। তোমার মুখের দিকে তাকালে আমি চুল আর মুখকে আলাদা করতে পারি না। এমন একটা কালো মানুষের সাথে আমি সারাজীবন থাকতে পারবো না।

এতক্ষণ কথা বলে ইমাদ ভেবেছিল সাবাহ কিছুটা নরম হতে শুরু করেছে। তাপের সংস্পর্শে এলে বরফ গলতে কি সময় লাগে? কিন্তু সাবাহর এই কথায় স্তম্ভিত হয় ইমাদ। নিজের হাতের দিকে, শরীরের দিকে একবার তাকায়। তার চোখ দিয়ে পানি গড়াতে চায়। সে কালো এটা সে জানে। কিন্তু এতটা! সে চুলের মতো কালো! ছোটবেলায় মা তাকে আদর করে কালোমানিক ডাকতেন। বন্ধুরাও একবার দুইবার কাইল্যা মানিক বলে ক্ষ্যাপাতো। কিন্তু বড় হওয়ার পরে কেউ তার গায়ের রং নিয়ে কথা বলেনি। সবাই বলে তার নাকি বাঁশির মতো নাক। এমন নাক কটা পুরুষের আছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের বান্ধবী শুভ্রা, তার গায়ের রং ছিল দুধেআলতা। সে একদিন বলেছিল, তোমার চোখ দুটো মায়াময় রেখাটানা। যেন কুমোরটুলিতে বায়না দিয়ে বানানো। তোমার দাঁতগুলোও সুন্দর। তুমি দেখতে একটু শ্যামলা বলেই সাদা দাঁত আরও বেশি সাদা, আরও বেশি উজ্জ্বল দেখায়। তোমার হাসিটা মুখের সঙ্গে কেমন চমৎকার মানিয়ে যায়।

শুভ্রার কথার পর কতবার ইমাদ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তার মুখটা খুটিয়ে খুটিয়ে দেখেছে। সে কিছুটা কালো ঠিক আছে। তবে দেখতে একেবারে অসুন্দর নয়। কিন্তু সাবাহ যতটা কালো বলেছে সে কি ততটাই কালো? এখন তার কী বলা উচিত? ভেতরের বেদনাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে সে বলে, কালো হওয়া কি আমার অপরাধ?
অপরাধ হয়তো না, তবে কালো মানুষ আমার অসহ্য। তাছাড়া আমার কোনো বান্ধবীর বর তোমার মতো অত কালো না।

সাবাহ উঠে ওয়াশরুমে যায়। রান্নাঘরে গিয়ে বেসিন ধরে দাঁড়ায় ইমাদ। তার চোখ পানিত ভরে ওঠে। এতটা কষ্ট আগে কখনো পেয়েছে কি না মনে পড়ে না। সাবাহ এই যুগের শিক্ষিত মেয়ে হয়েও গায়ের রং নিয়ে তার চিন্তা-ভাবনায় ইমাদের দুঃখ হয়। রান্না শেষ করে সাবাহকে ডাকতে আসে। কিন্তু সে খাবার না খেয়েই শুয়ে থাকে।

দিনের পর দিন না খেয়ে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে পরে সাবাহ। প্রচণ্ড কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। অথচ সে ডাক্তারের কাছে যেতে চায় না। অবশেষে ডাক্তারকেই বাসায় ডেকে আনে ইমাদ। ডাক্তার সাবাহকে ওষুধের পাশাপাশি নিয়মিত খাবার খেতে বলেন। ইমাদ সাবাহর মাকে খবর দিতে চাইলে সাবাহ বাঁধা দেয়। বলে, আমার বা তোমার পরিবারের কাউকে আমার এই বিষয়টা বললে আমি আত্মহত্যা করবো। আর এর জন্য দায়ী থাকবে তুমি।

ইমাদ কাউকে কিছু বলতে সাহস পায় না। সাবাহর পাশে রাত জেগে বসে থাকে। জ্বরে সংজ্ঞাহীন বউয়ের মাথায় পানি দেয়। নিজের হাতে একটু একটু করে খাবার ও ওষুধ খাইয়ে দেয়। ধরে ধরে ওয়াশরুমে নিয়ে যায়। ইমাদের আদিখ্যেতায় প্রথম প্রথম বিরক্ত হতো সাবাহ। তার হাতে কিছুই খেতে চাইতো না। খাবার দিলে ফেলে দিতো। মরে যেতে চাইতো। কিন্তু ইমাদের ধৈর্য ও ভালোবাসার কাছে সে হার মানে। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে।

ইমাদ কয়েদিন হলো অফিসে যেতে পারেনি। আজও যায়নি। সাবাহর মাথা কোলের ওপর রেখে জলপট্টি দিচ্ছে। কপাল বেয়ে গড়িয়ে পড়া ঈষদুষ্ণ জল কানে প্রবেশের আগেই মুছিয়ে দেয় ইমাদ। সাবাহর এমন নিষ্পাপ মুখ আর কখনো দেখেনি। বন্ধ চোখের পাতার নিচে মণিগুলো এদিক-ওদিক সরে যাচ্ছে। নাক দিয়ে নির্গত উষ্ণ নিশ্বাসে ঠোঁট দুটি শুকিয়ে গেছে। ইমাদ ডানহাতের মধ্যমা পানিতে ভিজিয়ে সাবাহর ঠোঁটে ছুঁয়ে দেয়। সাবাহ একটু চোখ মেলে ইমাদের দিকে তাকায়। এই প্রথম ইমাদকে দেখে তার একটু দুঃখবোধ হয়, মায়া হয়, হয়তো করুণাও হয়। তার জন্য এই কটা দিন কি কষ্টই না করছে, বেচারা!
সাবাহ ক্ষীণ কণ্ঠে ইমাদকে বলে, আজ তুমি অফিসে যাও। আমি সুস্থ আছি।
তুমি আর একটু সুস্থ হয়ে ওঠো। তারপর যাব।
না, আজই যাও। আমি ঠিক হয়ে গেছি।
তুমি যখন বলছো তখন কাল থেকে যাবো।
সাবাহ আর কিছু বলে না। ইমাদও চুপ করে থাকে। সাবাহর কপাল ও গলা ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুছিয়ে দেয়। সাবাহ চোখ বন্ধ রেখেই বলে, তুমি আমার জন্য অনেক করেছো, আমি তো মরতেই চেয়েছিলাম।

পরের দিন কলবেল চাপতেই দরজা খুলে মুখে একচিলতে হাসি নিয়ে দাঁড়ায় সাবাহ। আজ ইমাদের হাত ফাঁকা। আজ কি সে রজনীগন্ধা আনতে ভুলে গেছে? রজনীগন্ধার পরিবর্তে একটা খাম এগিয়ে দেয় সাবাহর দিকে। ইমাদ বলে, সব রেডি করাই আছে। তোমার মুক্তির উপায়।
সাবাহ কিছু না বলে খামটা খাটের ওপর রাখে। এক পা দুই পা করে ইমাদের কাছে আসে। ঘর্মাক্ত ইমাদের গায়ের গন্ধ এখন আর অত খারাপ লাগছে না। সে মনে মনে সরি বলে। ভাবে ইমাদকে জড়িয়ে ধরবে কি না। কিছুটা অস্বস্তি হচ্ছে। ইমাদকে ভালো করে দেখে। তার স্বামী একটু কালো বটে, কিন্তু আগে যতটা ভেবেছিল অতটা নয়!
ইমাদ নিজেই জগ থেকে একগ্লাস পানি ভরে খায়। সাবাহ ভাবে তারই উচিত ছিল পানি এনে দেওয়া। সমস্ত সংকোচ দূরে ঠেলে বলে, আর কিছু খাবে?
মাথা নাড়ে ইমাদ। খাটের ওপর পড়ে থাকা খামটা তুলে সে সাবাহর দিকে এগিয়ে ধরে।
সাবাহ হাতে নিয়ে জিজ্ঞেস করে, কী এটা?
ইমাদ নির্বিকারভাবে জবাব দেয়, ডিভোর্স লেটার।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।