কার্তিকের চারটি কবিতা
কার্তিকের সকাল
কার্তিকের সকালের ঘাসে শুয়ে আছে লুব্ধক, সপ্তর্ষিমণ্ডল...
দিচ্ছে আলো হাজার তারা মেঠোপথে
সৃষ্টি করেছে অযুত সূর্য
শিশির।
জবা ফুলের মতো উজ্জ্বল রাঙা স্বপ্ন—
বেলি ফুলের মতো সফেদ ইচ্ছেগুলো
ডানা মেলে দেয় শ্যামল মাঠে
সবুজের আঙিনায়।
কার্তিক আমার প্রেমিকার মতো নিষ্পাপ
সহৃদয়।
****
হেমন্তের মাথাভাঙ্গা
কার্তিকের মাথাভাঙ্গা—আঁকাবাঁকা তীরে
শুয়ে আছে যমজ দেবী—ভেনাস আর আফ্রোদিতি
মাঝখানে অপ্সরী—জলদেবী
নিটল জলে বকের মুখ, হিজল-অশ্বত্থের ঝরাপাতা
কফির ধোঁয়া, হাঁসের সারি, রমণীর লজ্জা
শালিক-ঘুঘুর লুটোপুটি, বেজির ফাঁদ, পুঁইয়ের মাচা
শিমের লতার ফাঁকে শেয়ালের চোখ—
লিয়োনার্দো ভিঞ্চি এঁকেছেন ল্যান্ডস্কেপ।
দিনে দিনে সবুজ যাচ্ছে ধূসরের পথে—
ধূসর যে মৃত্যুর কাছাকাছি।
মনে নেই নীলনদের উপাখ্যান?
মনে নেই ভলগা-সিন্ধুর মাতৃত্ব?
জোয়ারও ধূসর—জোয়ারে ধূসর দেখি।
****
পাহারা দেয় বিরহী-চাঁদ
হেমন্তের কোজাগরি রাতে তার চুল
উগ্র সুবাস ছাড়ে বিরহীর নাকে
কার্তিকের ক্ষেতের মতো শ্যামল।
শিশিরের শব্দে হারিয়ে যায় বিস্তীর্ণতায়
অথৈ নীলিমা—
এই সে যেমন।
চারিদিকে তাকিয়ে দেখি, আমি একা মানুষ
পাহারা দেয় একাকী বিরহী-চাঁদ।
****
বারুদ থামাও, প্রজাপতি নামাও
তোমার দো’নলা বন্ধুকের নলের ওপর প্রজাপতি নাচে।
বারুদ থামাও, প্রজাপতি নামাও,
উঁচিয়ে ধরো প্রজাপতি
উড়ে উড়ে আসুক আমার কাছে
বসুক সবুজ পাতায় পাতায়, বর্ণিল ফুলে ফুলে
ডেকে আনুক পাখি, ভ্রমর, মাছিদের।
এ-গোধূলিবেলা হোক প্রাণবন্ত, নিষ্পাপ, সোনার নহর।
এসইউ/জিকেএস