মোংলায় রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জন্মবার্ষিকী পালন

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি মোংলা (বাগেরহাট)
প্রকাশিত: ০২:৩৯ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০২৩

কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ জনপ্রিয় এ গানের মধ্য দিয়ে এখনো বেঁচে আছেন মানুষের মাঝে। শুধু গানই নয়, কবিতার মধ্য দিয়েও তিনি ফুটিয়ে তুলেছিলেন মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন ও সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার চিত্রও।

কবির ৬৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মোংলার মিঠাখালীতে কবির গ্রামের বাড়িতে কবির নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুল চত্বরে পালিত হয় নানা কর্মসূচি। ১৬ অক্টোবর সকালে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন রুদ্র স্মৃতি সংসদের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতি মাহমুদ হাসান ছোট মনি।

প্রধান অতিথি ছিলেন পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন আমাদের গ্রামের পরিচালক রেজা সেলিম, এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহিম ও মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ।

jagonews24

আরও পড়ুন: কবি আসাদ চৌধুরী মারা গেছেন 

রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও রুদ্রের অনুজ সাংবাদিক সুমেল সারাফাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জন্মবার্ষিকীতে গান, কবিতা, আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ, ফ্রি মেডিকেল সেবা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। তার আগে বের হয় জন্মবার্ষিকীর শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রা শেষে কবির কবরে ফুল দেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশালের রেডক্রস হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাংলাদেশের কবিতায় অবিস্মরণীয় এ কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে সত্তরের অন্যতম কবি-স্বীকৃতি। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান।

কবি তার কাব্যযাত্রায় যুগপৎ ধারণ করেছেন দ্রোহ ও প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের শিল্পভাষ্য। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’—এ নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি ততধিক স্পর্ধায় তিনি উচ্চারণ করেছেন—‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাঁকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীকে’। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তরজুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা। দেশ ও জাতির সংকটে রুদ্রের কবিতা হয়ে উঠেছে তারুণ্যের হাতিয়ার।

jagonews24

আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মোস্তফা হোসেইনের ৬৯তম জন্মদিন আজ 

মাত্র ৩৫ বছরের স্বল্পায়ু নিয়ে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং অর্ধশতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরে গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।

জীবদ্দশায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

আবু হোসাইন সুমন/এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।