পঙ্কজ শীলের চারটি প্রেমের কবিতা

সাহিত্য ডেস্ক
সাহিত্য ডেস্ক সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০৯ পিএম, ০৬ অক্টোবর ২০২৩

কবিতার চেয়েও সুন্দর আমার প্রিয়তমা

কবিতার চেয়েও শতগুণ সুন্দর আমার প্রিয়তমা
তবুও আমার প্রিয়তমাকে দেখতে
হেডলাইটের মতো জ্বলে ওঠে আমার দুটি চোখ!
আমি অন্ধ হয়ে যাই তখন
দৃষ্টি আর কোথাও যায় না যেন।

তার মাথার চুল উড়লে মনে হয় সোনালি ফসল
ইচ্ছে করে ছুঁয়ে দেখি বারবার—
আমার চোখের সামনে যেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুন্দর।
কবিতারা দেহে এত অলংকার পরে—
কিন্ত তাকে সাজাতে কোনো অলংকার লাগবে না পৃথিবীর
যেন প্রিয়তমার প্রতিটি অঙ্গই অলংকার।
আজ থেকে রাতে আমি চাঁদ দেখবো না কোনোদিন
যেন প্রিয়তমার ঠোঁটের কোণের হাসিটাই আমার চাঁদ।
হয়তো আমি গান শুনবো না আর কোনোদিন
যেন প্রিয়তমার দৃপ্ত পায়ের নূপুরের আওয়াজ—
নৃত্যের তাল লয় ও সুর আমার গান।
আমাকে ভালোবাসতে তার গোলাপ লাগবে না কোনোদিন
যেন প্রিয়তমার মাথার খোপাই আমার শ্রেষ্ঠ গোলাপ।

একদিন অনন্ত সুখ পেতে—
প্রিয়তমার কনিষ্ঠ আঙুলে স্পর্শ করবো,
প্রিয়তমা তখন বলে উঠবে—
হে কবি, তুমি আমায় অমরত্ব দান করো,
প্রিয়তমার কানে কানে সেদিন বলে দেবো—
অমরত্ব দান করতে হয় না হে প্রিয়া...
কবিদের প্রেমিকারা অমর হয়।

****

বাউলা ভ্রমর

তোমার বুকের মাঝখানে আমার সুখের ঘর
যেখানে জীবন নিয়ে পড়ে আছি জীবনের তরে

বুক-কলিজায় দুঃখ জমলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি—
ভালোবাসার খোলা জানালায়...

তোমার বুকের দুপাশে গভীর পিয়াসার নদী
যেখানে আমি সাঁতরাই কিংবা হাবুডুবু খাই,
তৃষ্ণায় মরে গেলে বাঁচায়ে নিও—
আমার মুখে দিয়ে দুফোঁটা অমিয় জল।

তোমার পানে তাকায়ে দুচোখ এতই ক্ষুধার্ত হয়—
যেন তোমারে দেখিনি আর কোনোদিন
মাঝেমধ্যে দেখেও মনে হয় প্রথম দেখি...

তোমার চুলের খোঁপায় দিয়াছো—
না জানি কোন চাঁদকাননের ফুল,
সহস্র মাইল থেকেও ভেসে আসে মন পাগলের ঘ্রাণ।

সেই ফুল—
শুঁকতে শুঁকতে চলে যাই আমি তোমার কাছে
তারপর গলাঅবধি পান করি ফুলমধু
মন চায় এখানেই ডুব দিয়ে ডুবে থাকি,
যেন আর না উঠি মরণের আগে...

ঈশ্বর তোমারে জানায়ে রাখি—
আমি তার জন্য এক বাউলা ভ্রমর...

****

ভালোবাসা কিংবা

আমি চাই তুমি আমাকে ভালোবেসে অনেক কষ্ট পাও
কষ্ট পাই আমিও...
তারপর
কষ্ট জমিয়ে ভালোবাসার সুখের ঘর বাঁধি
যেখানে থাকবে শুধু কষ্ট আর কষ্ট
যন্ত্রণা আর যন্ত্রণা...
সেখান থেকে দুজনে একসঙ্গে পাথরে পরিণত হই
যাতে আমাদের কেউ ভাঙতে না পারে
আমরা যেন কারো আঘাতে ভেঙে না পড়ি...

আমি চাই তুমি আমাকে ঘৃণা করো
ঘৃণা করতে করতে তোমার হৃদয় থেকে
আমাকে তাড়িয়ে দাও।

আমার জন্য ভালোবাসা না থাকুক
তোমার বিশাল অন্তরে,
অথবা তুমি আমাকে হিংসে করো
অবহেলা করো; করতে করতে—
ওসব তীব্রতে পরিণত করো

তারপর কোনো একসময়
তুমি আমাকে ভুলে যাও
কিংবা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করো
এটা তুমি বারবার চেষ্টা করো।
এগুলো বারবার সত্যি নয়, মিথ্যা বলে প্রমাণিত হোক!

তবেই না তুমি আমাকে ভালোবাসো
কিংবা ভালোবাসি আমিও...

****

ফুল-পাখির আহত হৃদয়

শত অভিমানে পাখির ডানা ভাঙার পরও
সেই পাখি পুনরায় আপন খাঁচায় ফিরে আসে,
অথচ একটি ফুল পাখিকে ভুলতে না পেরে
লজ্জায় ভীষণ ভালোবেসে, সে যে ভীষণ ভালোবাসে।

পাখির ভিতর এই যে ভিন্ন পাখি
আর আদরে এত মাখামাখি,
ফুলটি বলে এত ভালোবাসা আমি
কোথায় বলো রাখি, কোথায় বলো রাখি...

মরচেপড়া হৃদয় তারই কোথায় যেন থাকে
জানে না সে, তবুও সে জানে,
ধন্য জীবন! ভালোবাসা গভীর হৃদয়—একটি বাড়ি
কিংবা ভালো বাসা
দেরী হলেও বুঝতে পারে ভালোবাসার মানে।

কোথা থেকে দেখে জানি ফুলপাখিটির বিধি
দুটি হৃদয় খুব আহত, কখনো বা দুঃখ সুখে আছে,
ঈশ্বর তুমি এত দূরে? তোমার চেয়ে তাদের ভালোবাসা
আরও অনেক কাছে বিধি আরও অনেক কাছে।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।