বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে প্রকাশিত ‘মুজিববাদ’

সাহিত্য ডেস্ক
সাহিত্য ডেস্ক সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৩১ পিএম, ১৭ মার্চ ২০২১

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন শুরুর দিনে প্রকাশিত হয়েছে খ্যাতিমান লেখক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু খোন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াসের লেখা সেই আলোচিত ‘মুজিববাদ’ বই।

শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইটি ৩৫% ছাড়ে চারটি বিভাগীয় শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেটে একযোগে পাওয়া যাবে। ঢাকায় পাঠক সমাবেশ কেন্দ্র শাহবাগ-গুলশান ও উত্তরায়, বাতিঘর- বাংলা মোটর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৭ম তলায়, বেঙ্গল বই-২৭ ধানমন্ডি, সন্ধিপাঠ- আজিজ সুপার মার্কেট। বাতিঘর-চট্টগ্রাম-সিলেট। বিদ্যাসাগর-রাজশাহী।

রকমারিডটকম  বইঅনলাইনবিডি থেকে কেনা যাবে বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে। বইয়ের দাম ৮০০ টাকা ৩৫% ছাড়ে পাওয়া যাবে ৫২০ টাকায়। ১৭ মার্চ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এই ছাড়!

মুজিববাদ বইয়ের কথা

বিভিন্ন জাতির বিকাশ ধারায় এমন কতকগুলো বৈশিষ্ট্য চোখে পড়ে যা এক জাতি থেকে অপর জাতির সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। জাতি পরিচয়ের মূলসূত্র অর্থনৈতিক ক্রিয়াকাণ্ড এবং উৎপাদনের সঙ্গে শ্রম সম্পর্কের ঐক্য ও সংহতি। এ প্রশ্নে শাসিত ও শোষিত জাতির ভাগ্য বিপর্যয়ের ঘটনায় তেমন কোনো বিরোধীয় উপাদান পাওয়া যায় না। যেমন পাওয়া যায় না স্বশাসিত ও শোষণমুক্ত জাতির সমগ্র মেহনতী শ্রেণির সঙ্গে উৎপাদন যন্ত্রে শ্রম সম্পর্ক, মালিকানা এবং সরকারি ক্ষমতায় নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে।

কিন্তু বাঙালি জাতির বিকাশে এমন কতগুলো ঐতিহাসিক পরিস্থিতি তার বাস্তবজীবনকে প্রভাবান্বিত করেছে, যার নজির অন্যান্য জাতির বেলায় সচরাচর দেখা যায় না। শ্রেণি সংগ্রাম ও জাতীয় সংগ্রামে বাঙালি মানসিকতা বিকাশে সমৃদ্ধ উপাদান সন্নিবেশিত হয়েছে। অনেক জাতির জীবনেও তার ঘটে। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক ভূখণ্ডে বসবাসকারী সুপ্রাচীন ও সুসভ্য মানবগোষ্ঠীর আর্য নামক অপর একটি আধাসভ্য কিন্তু সুপ্রাচীন মানবগোষ্ঠীর অস্ত্রের বশ্যতা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন এবং সুদীর্ঘকাল তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত থেকে এই অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়, বাঙালির জাতীয় জীবনে মূল্যবান চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সৃষ্টির মূলে তার প্রভাব অনন্যসাধারণ।

মুজিববাদের মূল্য দর্শন- বাংলার মাটি, বাঙালি-মানস এবং বাঙালির চারিত্রিক, ভৌগৌলিক ও পারিপার্শ্বিক বৈশিষ্ট্য ও স্বাতন্ত্রের সমাবেশ ঘটিয়ে সেই সঙ্ঘবদ্ধ ও সুসংহত শক্তিকে জাতি গঠনের কাজে নিজস্ব পথে এবং সাফল্যজনকভাবে নিয়োগ ও প্রয়োগ। সেই সঙ্গে মুজিব-চিন্তার শপথ- বাংলাদেশে শ্রমিক, কৃষক বুদ্ধিজীবী ও সকল মেহনতী মানুষের জন্যে একটি গণতান্ত্রিক, শোষণহীন, সুখী ও সমৃদ্ধশালী সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করা। সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা তার গ্যারান্টি। সোনার বাংলা তার পরিচয়।

মার্কসবাদ-লেনিনবাদ সাম্যবাদের দর্শন, সমাজতন্ত্র তার অন্তর্বর্তী কার্যক্রম। মুজিববাদ সমাজতন্ত্রের দর্শন, বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থা ও ঐতিহাসিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্র তার অন্তর্বর্তী কার্যক্রম। কাজেই বাংলাদেশের মার্কসবাদ ও লেনিনবাদের সঙ্গে মুজিববাদের অবস্থান দ্বন্দ্বমূলকভাবে নয়, রয়েছে সম্পূরকভাবে কিছু কিছু অতি উৎসাহী তরুণ রাজনৈতিক কর্মী ভাবাবেগে মুজিববাদ এবং মার্কসবাদ-লেনিনবাদের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে অতিরঞ্জিত কথাবার্তা ও স্লোগান উত্থাপন করে থাকেন। কিন্তু একথা স্মরণ রাখা দরকার যে, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতাবাদ প্রভাবান্বিত বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে যারা মুজিববাদ বিরোধী, তারা মার্কসবাদ-লেনিনবাদেরও বিরোধী। যারা মার্কসবাদ-লেনিনবাদ বিরোধী তাঁরা প্রকারান্তরে মুজিববাদেরও বিরোধী।

বাংলাদেশে সাম্রাজ্যবাদ ও নয়া-উপনিবেশবাদের যে জিওপলিটিক্স, তার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, বিশ্ব পুঁজিবাদের নেতৃত্বে এ দেশে, এমনকী সমগ্র ভারত-বাংলাদেশের-পাকিস্তান উপমহাদেশের শান্তি, গণতন্ত্র, প্রগতি ও সমাজতন্ত্র প্রতিরোধ করতে তারা বিপুল অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি নিয়োগ করেছে।

বর্তমান বিশ্বের এই অঞ্চলে যে মার্কিন খুনি গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ বিশেষভাবে তৎপর উপমহাদেশের প্রগতিশীল নেতৃবৃন্দের বিবৃতি ও বক্তৃতা থেকে তার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত মেলে। সেরূপ অবস্থায় যারা মুজিববাদবিরোধী কিংবা মার্কসবাদ ও লেনিনবাদবিরোধী তাদের সম্পর্কে সতর্ক দৃষ্টি রাখা শান্তি, গণতন্ত্র ও সমাজতান্ত্রিক শক্তিবর্গের সবিশেষ প্রয়োজন। কারণ বিশ্ব পুঁজিবাদের নেতৃত্বে সামাজ্যবাদ ও নয়া-উপনিবেশবাদী একচেটিয়া পুঁজিপতিরা কোন কৌশলে কখন যে কার হাতে কলকি খেয়ে যায় বলা শক্ত।

এইচআর/বিএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।