দীপংকর দীপকের কবিতা

সাহিত্য ডেস্ক
সাহিত্য ডেস্ক সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৩৭ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০২০

কাকবি

শহরে কাকের চেয়ে কবির সংখ্যা বেশি—এ কথার হিসাব মেলাতে মেলাতে কবিতার বই নিয়ে সরোয়ার্দীর সবুজ মাঠে বসলেন কবি। এমন সময় কাকতালীয়ভাবে একটি কাক উড়ে এসে জুড়ে বসে কবির পাশে। অতঃপর কৌতূহলী চোখে দেখে বইয়ের পাতা।

তা দেখে উঠে গিয়ে শহরের মোড়ে মোড়ে স্বযত্নে বই রাখেন বিস্মিত কবি। পরদিন কাকডাকা ভোরে গিয়ে দেখেন বইগুলো পড়ে আছে—আগের মতোই।

অঙ্ক মেলাতে পারেন না বেহিসাবি কবি। বিকেলে শহরের যত্রতত্র প্যাকেট ভর্তি ভাত রাখেন—ফের। পরদিন গিয়ে দেখেন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে কাকভেজা খালি প্যাকেট।

এবার কবি বুঝলেন, ভাত ছিটালে কাকের অভাব নেই—এ প্রবাদ এখন আর চলে না। প্রবাদের প্রেতাত্মা আজ চেপে বসেছে কাকতাড়ুয়ারূপী মানুষের ঘাড়ে।

এ সময় অবাক হয়ে দেখলেন কাকচোখা কবি—শহরের ডাস্টবিনগুলো ভরে গেছে ধর্মাশ্রয়ী পুঁজিপতিদের মলে। সেই মল খেয়ে ভরাপেটি কাক আজ—জ্ঞানের সন্ধানে নেমেছে কৌতূহলে।

এবার মিলল গরল কবির সরল অঙ্ক। শহরে কাকবি যত; তার চেয়ে হাজার গুণ বেশি আজ ক্ষুধার্ত মানুষের সারি। এ কারণে জ্ঞান রেখে জান বাঁচাতে মরিয়া—করোনাযুগের সর্বভুক মানুষ।

টিকা-
কাকবি: কাক+কবি= কাক ও কবি।
সরোয়ার্দী: সোহরাওয়ার্দীর কথ্যরূপ।
কাকতাড়ুয়ারূপী মানুষ: অসহায় মানুষ, যাদের নীরবে অন্যায়-অত্যাচার সহ্য করতে হয়।
ভরাপেটি: ভরাপেট+ই প্রত্যয়=পেট ভর্তি যার।
কাকচোখা: কাকের মতো স্বচ্ছ চক্ষু যার, অর্থাৎ যিনি সবকিছু পরিষ্কার ও পরিপূর্ণভাবে দেখতে পারেন।
গরল কবি: যার কবিতা শোষকদের কাছে বিষাক্ত বলে মনে হয়।

এসইউ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।