‘জীবনকে আনন্দ দেয়ার অন্যতম মাধ্যম বই’

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:২৭ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, ‘মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হলো জীবন। এ জীবনকে যে যত আনন্দ দিতে পারবে, সে ততই ভাগ্যবান। আর জীবনকে আনন্দ দেয়ার অন্যতম মাধ্যম হলো বই।’ শনিবার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আয়োজিত দুই দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য পুরস্কার বিতরণী উৎসবের শেষ দিনে রাজধানী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন সংলগ্ন মাঠে এসব কথা বলেন তিনি। এদিন ৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২০১৭ জন ছাত্র-ছাত্রীকে পুরস্কার দেয়া হয়।

সমাপনী পর্বে অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এর সচিব সোহরাব হোসাইন, ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস অব বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট ও মুক্তিযোদ্ধা স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, সরকারের সাবেক সচিব ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্ট্রি খোন্দকার আসাদুজ্জামান, শিশু সাহিত্যিক ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব আলী ইমাম, বিকাশ লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী কামাল কাদির, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের শুভানুধ্যায়ী ও ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ খালিদ হাসান, গ্রামীণফোন লিমিটেড এর ইনফ্রাক্টাকচার বিজনেস, কর্পোরেট অ্যাফের্য়াস এর পরিচালক মোহাম্মদ মাইনুর রহমান ভূঁইয়া এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

বর্ণাঢ্য পুরস্কার বিতরণী উৎসবের সমাপনী দিনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হলো জীবন। এ জীবনকে যে যত আনন্দ দিতে পারবে, সে ততই ভাগ্যবান। আর জীবনকে আনন্দ দেয়ার অন্যতম মাধ্যম হলো বই।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এর সচিব সোহরাব হোসাইন পুরস্কারপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন,‘ জীবনে সফল হতে হলে ভালো বই পড়তে হবে, বই মানুষকে বিকশিত করে, মননশীল করে এবং মানুষকে ভালো সঙ্গ দিতে পারে।’ এসময় তিনি আরো বলেন, বই পড়ার মতো এ যুগোপযোগী কর্মসূচিকে সরকার সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে চায়।

ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস অব বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট ও মুক্তিযোদ্ধা স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘এ পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে কলম ও জ্ঞানের শক্তি। আর এ শক্তি অর্জনের জন্য বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই।’

সরকারের সাবেক সচিব ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্ট্রি খোন্দকার মো. আসাদুজ্জামান পুরস্কারপ্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের অভিনন্দন জানিয়ে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনার সন্তানদের অবশ্যই স্বপ্ন দেখাবেন, বই পড়ার জন্য উৎসাহিত করবেন এবং বই পড়ার পরিবেশ নিশ্চিত করবেন।’

শিশু সাহিত্যিক ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব আলী ইমাম ছাত্র-ছাত্রীদের বলেন, ‘বই মানুষকে সাহসী করে তোলে, সুপ্ত অনুভূতির বিকাশ ঘটায়, কোনটা ভালো কোনটা মন্দ তার মধ্যে পার্থক্য বোঝাতে সহযোগিতা করে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বেশি সময় না দিয়ে বেশি বেশি বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।’

বিকাশ এর প্রধান নির্বাহী কামাল কাদির বলেন, ‘প্রতিনিয়ত বই পড়তে হবে, বই পড়ার মাধ্যমে শিখতে হবে এবং সেই শিক্ষা ব্যক্তি এবং জাতীয় জীবনে কাজে লাগিয়ে জীবন যুদ্ধে টিকে থাকতে হবে।’

গ্রামীণফোন লিমিটেড এর ইনফ্রাক্টাকচার বিজনেস, কর্পোরেট অ্যাফের্য়াস এর পরিচালক মোহাম্মদ মাইনুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রর এই বইগুলো জ্ঞান অর্জনে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা গর্বিত।’ আগামী দিনেও এক সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সাবেক পরিচালক শরিফ মো. মাসুদ স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বছরজুড়ে বইপড়া কর্মসূচি সফলভাবে পরিচালনায় সহায়তা করার জন্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, সংগঠক ও পৃষ্ঠপোষকদের ধন্যবাদ জানান। আগামী বছরগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক (প্রোগ্রাম) মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন।

পুরস্কার বিতরণী শেষে সন্ধ্যায় কয়েক হাজার মোমবাতি জ্বালিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে...’ গানটি গেয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। পুরস্কারের বইসহ উৎসব আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করেছে গ্রামীণফোন লিমিটেড।

উল্লেখ্য, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আয়োজিত ঢাকা মহানগরীতে দুই দিনব্যাপী পুরস্কার বিতরণী উৎসবের তিনটি পর্বে মোট ৯০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ৬ হাজার ১৯৪ জন শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার দেয়া হয়। গতকাল (শুক্রবার) দিনব্যাপী পুরস্কার বিতরণী উৎসবের দুটি পর্বে মোট ৫৯টি স্কুলের ৪১৭৭ জন ছাত্রছাত্রীকে পুরস্কৃত করা হয়।

এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।