আবু জাফর খানের তিনটি কবিতা


প্রকাশিত: ১১:৫৮ এএম, ১১ জুন ২০১৭

মাধবী ও দাহপর্ব

মাধবী...
তুই মুছে গেলে কী আর থাকে বল!
আসলে ইদানীং হু হু ব্যস্ততা আচমকা ঢুকে পড়েছে আমার দেউড়ি ঘরে
তবুও আকাশের ভেতর প্রিয়ঙ্গুমুখ আমি প্রায়ই দেখি
তবুও সবই থেকে যায় কোথাও কোনারক-স্থাপত্য স্মৃতির মতো !!

মাধবী...
জীবন কি তবে লাট খাওয়া নিঃস্বের নাম?
সদরে খিল দিয়ে সারারাত জেগে থাকে যে যুবক...
সে আর স্থিত হতে পারেনি কোথাও!
শুধু তলিয়ে যায় মাটির ওপর রাখা পায়ের গোড়ালি
আসলে অ-সুখের বাথানে অসুখ সর্বদা স্থায়ী নিবাস পাতে।

মাধবী...
আমার সাধের আমলকি ডালে ঈশ্বরের ঝুলন্ত দেহ!
উঠোনের বাগানটিতে কে যেন রেখে গেছে গুপ্তহত্যার ছুরি
শঙ্খ থেমে গেছে, জাগেনি চক্র-রথ-অশ্বের ক্ষুরধ্বনি;
স্টেশানমাস্টারের মতো যুবকের একা অপেক্ষা
নিশ্চিন্ত-শয়নকাল হেঁটে চলে গেছে বন-ডাহুকীর কাছে
যুবকের ঘুমের ভেতর এখন শুধু রণ-কাতরতা জাগে।

মাধবী...
দাহপর্ব থেকে আর কতদূরে লাল-পলাশের বসন্ত?
এখন পুব থেকে পশ্চিমে পাহাড় পেরোয় যুবকের শ্বাস!

****

দীপাধার

তুমি কেউ নয়!
একটি কোকিল ডেকে গেল...
দ্বিপ্রহরের স্খলিত উত্তাপ সয়ে,
পাখনার ফ্রিলে অভ্রের অভিমান।

তুমি কি কেউ ছিলে?
আমার দিনমান মেঘে মেঘে বেলা যাওয়া...
ছিন্ন শতকের বৃত্তাবদ্ধ জীবনের ঝড়,
নিদ্রাহীন তমসিত প্রেত,
লুপ্ত ধূসর বেদনার সাঁঝ।

তুমি ছিলে না কিছুই!
অথচ মাঝরাতের কুয়াশার মতো...
ঘুমন্ত পৃথিবীতে এঁকে গেলে
জোছনার ফলিত আলো;
দু’হাতে ছিল রজনীর রোদ্দুরে গড়া
জটিল পিলসুজ।

কী বিস্ময় দেখো...
জ্যৈষ্ঠতে এসে ফাল্গুনী পাতারা ঝরে,
কোকিল বলে যায় তুমি কেউ তো ছিলে...
হরিৎ বল্কলে আঁকা জলের আকর।

****

লোডশেডিং

লোডশেডিং-ঘুটঘুটে অন্ধকারে
তোকে আমার আলো মনে হয়েছিল!

রাস্তা নেই!
এই তো একা আমি, তোরা দু’জন...
কোথায় উড়ে গেল ঝড়ো হাওয়ায়
অনেক রাতের গল্প, ভোর ও বছরগুলি!

এখনও আমি নরম মলাটের পেঙ্গুইন
আর উইলিয়াম ব্লেক খুঁজি...
সেইসব সস্তা রেস্তোরাঁ, দু’টো চায়ের কাপ!

এখন আর ভোরের সূর্যকে আকাশ ডাকে না
লোডশেডিং-ঘুটঘুটে অন্ধকার আমার সোহাগপুরে!

এসইউ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।