পাণ্ডুলিপি থেকে তিনটি কবিতা


প্রকাশিত: ১১:০৯ এএম, ১০ জুন ২০১৭

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে কবি জব্বার আল নাঈমের কাব্যগ্রন্থ ‘এসেছি মিথ্যা বলতে’ প্রকাশিত হচ্ছে। বইটি প্রকাশ করছে চৈতন্য প্রকাশনী। প্রচ্ছদ করেছেন সারাজাত সৌম। বইটি থেকে তিনটি কবিতা পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো-

আত্মহত্যার পরের ঘটনা

চোখের সামনে যে খুন হচ্ছে তাকে চিনি। অনেকগুলো নৈঃশব্দ্য একত্র করে এগিয়ে যাই খুনির দিকে। হাত-পা কাঁপতে শুরু করল। তবুও মনে আনন্দের শিরশির-প্রবাহ; বৈশাখী চাপা উল্লাস।

সামনে রক্তাক্ত পড়ে আছি! পুলিশের গাড়ির সাইরেন এদিকে আসছে... নিস্তেজ দেহের শিরদাঁড় হতে নেমে যাচ্ছি; আকাশের ছায়ায় ঢেকে আছে সবুজের প্রান্তর; শুকিয়ে আসছে সমুদ্রের জল; আমি

আত্মযুদ্ধের জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়নি কোনকালে। জেলখানার ছাদের ছায়ায় নিজের ভেতর ক্ষরণ ছাড়া। আগে চারপাশের যন্ত্রণা দেখে দেখে নিজেকে আত্মহত্যার গ্লাসে ঢেলে দিতাম। এখন সেসব দেখা প্রায় অসম্ভব।

ফাঁসির পোশাক পরে রাস্তার আমিকে খুনের কথা ভাবি। ভাবতে ভাবতে বোকা পুলিশ দেখে মৃত আমার আরো বেশি হাসি পায়।

**

ফুল ও অন্যান্য উপকথা

বানের বৃষ্টিতে ছিপ ফেলে বসে আছে যে কালপুরুষ
নিরন্তর খোঁজ করে
শিকার ও সঙ্গম
দরজার দুইপাশে অচেনা সুন্দর ফুল

যাকে পূজা দিতে চাই যৌনেশ্বরী ভেবে
ওই ফুল ছাড়া পৃথিবীতে
আর কোনো সুন্দর ও সুগন্ধি নেই
নেই বন্দনা; নেই কীর্তন অথবা ভোজন

সুদৃশ্য যোনিফুলের ভাস্কর্য দেখে
মানুষ আবিষ্কার করতে শেখে
টগর, বেলি, জুঁই, হাসনাহেনা ও অন্যান্য ফুল। 

**

প্রতিশোধ
(কবিবন্ধু শরাফত হোসেনকে)

ঈর্ষা, পানিতে চুবাতে গেলে আমি মাছ হয়ে সাঁতার কাটব। নৌকা হয়ে ভাসব। পাখি হয়ে পাড়ি দেবো দিগন্ত। মাটিতে পুঁতে দিলে বালি হয়ে সমুদ্রসীমা বাড়াব। অথবা গাছ হয়ে মাথা তুলব আলো-ছায়ার খেলায়। ফুল ও ফলের আবাদ হবে পৃথিবীতে। প্রণয়ের পানিতে ডুবে থাকব আমরা দু’জন।

ডুবতে ডুবতে বিষম জিজ্ঞাসার আত্মারা—শুনবে নীতিজ্ঞানের মুখে মুহূর্তে রং বদলানো পাখির ভ্রমণকাহিনি। সাগরের নিচে ডাউনিং স্ট্রিটের মতো দাঁড়িয়ে থাকবে অসংখ্য চেনা-জানা মানুষ। রাজপ্রসাদে রাজার পাশে রানী। অসংখ্য সৈন্য-সামন্ত বিনীত প্রার্থনার ভঙিতে।

তখনও হাত বাড়ালে প্রতিশোধ নেবো—ঐতিহাসিক টেবিলে তোমাকে ক্ষমার দস্তখত করে।

এসইউ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।