সাহিত্য ও আধুনিক সংস্কৃতির সূতিকাগার চাঁদপুর : শামসুজ্জামান খান


প্রকাশিত: ০৬:২২ এএম, ০৭ মে ২০১৭

‘সাহিত্য ও আধুনিক সংস্কৃতির সূতিকাগার তো এই চাঁদপুর। বাঙালি মুসলমানের মধ্যে পুরুষ ও নারী জাগরণের অগ্রদূত সওগাত সম্পাদক নাসির উদ্দিন ও বেগম সম্পাদক নূরজাহান, দু’জনই চাঁদপুরের। শুধু তাই নয়, দেশবরেণ্য ও আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত চিত্রশিল্পী হাশেম খান ও মনিরুল ইসলামদের মতো ব্যক্তিত্ব এই চাঁদপুরের।’- চাঁদপুর সাহিত্য সম্মেলনের প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান এ কথা বলেন।

‘সৃজনে মননে সাহিত্য’- স্লোগানকে সামনে রেখে গত ৬ মে চাঁদপুরে এ সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসন, চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমী ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর যৌথ আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘শুধু চাঁদপুর নয়, বাংলাদেশে হাতেগোণা যে ক’টি জেলায় সাহিত্য সম্মেলন হয়েছে, তার মধ্যে চাঁদপুর যুক্ত হলো। বোধহয় বরিশালের পর চাঁদপুরেই সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। আর কেনই বা হবে না। কতো কবি-সাহিত্যিকের জন্ম যে চাঁদপুরে, সে জন্য চাঁদপুর ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে।’

chadpur

সম্মেলনের উদ্বোধক চিত্রশিল্পী চাঁদপুরের কৃতিসন্তান হাশেম খান বলেন, ‘এই বিশাল আয়োজন শুধু আকারে নয়, বোধের জগত থেকেও অসাধারণ। আর সেই বোধটি হচ্ছে, আমাদের দেশ তো বটেই সারাবিশ্ব জঙ্গিবাদকে রুখে দিতে যে যুদ্ধে নেমেছে, সে যুদ্ধে জয়ী হতে আমাদের মনন এবং মানবিক দিকগুলোকে শাণিত করা। আর এ জন্য প্রয়োজন সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা। মানবিক বোধকে জাগ্রত করতে সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা ছাড়া উপায় নেই।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কথাসাহিত্যিক হরিশংকর জলদাস বলেন, ‘চাঁদপুর সাহিত্য সম্মেলন সফল হয়েছে। সাহিত্য সম্মেলন বলতে যা বোঝায় তার সবটুকুই ছিলো দিনব্যাপী এই আয়োজনে।’

সাহিত্য সম্মেলনকে ঘিরে চাঁদপুর জেলাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের কবি, সাহিত্যিক, লেখক, ছড়াকার ও প্রবন্ধিক ও সাহিত্যপ্রেমীদের মিলনমেলা ঘটে। কুমিল্লা থেকেও একদল আবৃত্তিশিল্পী আসেন সাহিত্য সম্মেলনে। তাদের পদচারণায় মুখরিত ছিলো চাঁদপুর।

chadpur

বিকেলে শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় সম্মেলন। এরপর ছড়া ও কবিতা আবৃত্তি, সুন্দর হাতে লেখা প্রতিযোগিতা এবং নির্বাচিত কবিদের কবিতা পাঠ অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় উদ্বোধনী সংগীত, প্রদীপ প্রোজ্জ্বলন, দেশাত্মবোধক গান, বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়।

আলোচনা পর্বের শুরুতে অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা, স্মারক উপহার ও উত্তরীয় পরিয়ে দেন চাঁদপুরের লেখক ও সাহিত্যিকগণ।

জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মণ্ডলের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মেলন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক কাজী শাহাদাত। প্রবন্ধ পাঠ করেন ডা. পীযুষ কান্তি বড়ুয়া ও বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদের সভাপতি শামীম আহমেদ খান।

chadpur

বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কবি ও প্রাবন্ধিক মো. আমিনুল ইসলাম, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. এএসএম দেলওয়ার হোসেন, নজরুল গবেষক ড. আলী হোসেন চৌধুরী, লেখক ও মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সদস্য সচিব আবু সালেহ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ও সামীম আহমেদ খান। সবশেষে পুরস্কার বিতরণ ও সাহিত্য পত্রিকা ‘উছল’র মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

এসইউ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।