বৈশাখকে নিবেদিত পঙক্তিমালা


প্রকাশিত: ০৬:১২ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৭

আজ চৈত্রসংক্রান্তি। কাল ভোরের আলো ফুটলেই পহেলা বৈশাখ। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী প্রাণের উৎসব। বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাবো আজ পঙক্তিমালায়। এবার জাগো নিউজ আয়োজিত ‘বৈশাখকে নিবেদিত পঙক্তিমালা’য় অংশ নিয়েছেন- আসমা সুলতানা শাপলা, শামীম হোসেন, মাহী ফ্লোরা, রাসেল রায়হান এবং ফারিয়া প্রমা।

নববর্ষের শুভচ্ছো
আসমা সুলতানা শাপলা

স্টার কাবাবের ডান কিংবা উল্টোদিক
কখনো ভেপিয়ানো কখনো লেকের নিচে কালো জল
জলে পড়ে থাকা উপরবাতির আলসে ছায়া
দু’একটি দিন পর পূর্ণিমার অপরূপ তিথি
প্রথম গোলাপ, সাথে একটি দু’একটি পাতা
এইসব নিয়ে আমি যখন একটা সবুজ গ্রাম
গ্রামের ছায়া, রাখালের মোহন বাঁশির সুর
লিখবো বলে কালির সাধনা করছি দিনরাত
তখন শুকনো বাসী ফুলগুলো মুখ বের করলো
জলের নিচেই বাড়িটা উধাও। উপরবাতির
বেগুণি আলোটা কখন নিভেছে জানতে পারিনি।
তবু শেষ চৈত্রতে তোমাকে জানাই
প্রথম বৈশাখের শুভকামনা। সবাইকে বলি-
যেন হৃদয়ের লালে প্রাচীন গ্রাম লিখতে পারো।
লিখতে পারো নদীর রূপালি ইলিশ। ইলিশের ঝাঁকে
যেন খুঁজে পাও নিজের অস্তিত্ব। শুধু রসনার বিলাস নয়।

ভালো থেকো সবাই। এই বৈশাখে।
খুব সুখে থেকো বছরজুড়ে।।

****

প্রেমের কবিতা
শামীম হোসেন

ভাসমান তুলোকে বন্দি করো না
উড়তে দাও শরতের মেঘের মতো—
ছুঁয়ে আসুক তোমার শাড়ির দিগন্ত।
রক্তিম আকাশের মতো যদি
কারো কারো চোখ লাল হলে—
সুরমার আস্তরণে লুকায় চোখের দ্রাঘিমা!
শুধু শুধু দুঃখ খুঁড়ে দুরবিনের লেন্সে
কাছে টানো দূরের অতীত
বসন্তে উদাস হওয়া কোকিলের সুর
দেখো বিঁধে যাবে বুকের গভীরে...
এমন ভাবনার রেখা মগজের কোষে ঢুকে
শিরা বেয়ে ছুঁয়ে গেছে পায়ের পাতা।
কীভাবে বন্দি হয়ে লিখো তুমি প্রেমের কবিতা!

****

বৈশাখ
মাহী ফ্লোরা

হাতের ভেতর হাত বলতে আমি কিছু ভাগ্যরেখা দেখি যারা শীত থেকে বসন্তের দিকে যেতে দাঁড়ি-কমা ছাড়ে। অবিরাম কিছু গৃহপালিত জীব যেন খুঁটে খুঁটে খাচ্ছে ছড়িয়ে দেয়া দানা, অথবা শুকোতে দেয়া ধানে এসে বসছে পাখি, মরিয়ম বলছে হুসস...হুসস...
হাতের ভেতর ভাগ্যরেখার ভেতর আর ফিরে আসছে না পুরনো অতীত, বৈশাখ শুরু বলে আমরা যেন হারিয়ে গিয়েছি প্রাপ্তবয়স্ক একজোড়া নদী হয়ে!

****

প্রস্তরযুগ
রাসেল রায়হান

আমরা তখন গুহায় বাস করতাম। আগুন জ্বালিয়ে তুমি মাংসের জন্য বসে থাকতে। অন্যদের মতো আমি শিকারে যেতে পারতাম না। তাই গুহায় বসে আঁকতাম ছুটন্ত হৃষ্টপুষ্ট বল্গাহরিণ... নিজেকে দলপতি বানিয়ে শিকারের চিত্র। প্রসন্ন একটি হরিণ দেখিয়ে বলতাম, এটাকে রেঁধে ফেলো। তুমি রান্নার প্রস্তুতি নিতে...

আজ এই যুগে পুরাতাত্ত্বিকেরা আমাদের জড়িয়ে থাকা ফসিল আবিষ্কার করেছে। গুহাচিত্র দেখে বলছে, আমরা এভাবে হরিণ শিকার করে বেঁচে থাকতাম। অথচ এভাবে একদিন আসলে আমরা মরে গিয়েছিলাম

****

আদর
ফারিয়া প্রমা

সন্ধ্যে নামতেই যদি মনে হয়, দিনটি কেটেছে অযথায়! তখনও যেতে পারো অন্য প্রেমিকার কাছে। যেতে পারো আলাদা এক তরঙ্গ নিয়ে, যেতে পারো সকরুণ জোনাকির আহ্লাদ নিয়ে! আমি না হয় ভুলেই যাবো, আমার যত মেঘে ওড়া বর্ণচ্ছটা; আমার কি এলো-গেলো যদি এক বসন্ত যায় এলোমেলো? পরিণীতা আমি জেনেছি— আলস্য দুপুরে পরনের শাড়ি নিঙড়ে কীভাবে সঞ্চয় করা যায় উষ্ণ আদর।

এসইউ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।