রাতে ভূতের সঙ্গে একা


প্রকাশিত: ০৭:৩৬ এএম, ১৭ জুলাই ২০১৬

আমি সবে ঢাকায় তেজগাঁও কলেজে ভর্তি হয়েছি। কয়েক দিন ক্লাশ চলার পর কলেজ ছুটি হয়ে যায়। ক্লাশ না থাকায় ঢাকায় মন টিকছে না। আসলে মাধ্যমিক পাস করার আগ পর্যন্ত গ্রামে মায়ের কাছে থেকেছি তো! তাই মাকে ছাড়া দূরে কোথাও গেলে অস্থির লাগে। রাতে ঘুমাতে গেলেও মাকে মনে পড়ে। কেউ কেউ অবশ্য বলে, আমি ছোটবেলা থেকেই মায়ের খুব ন্যাওটা ছিলাম। সারাক্ষণ মায়ের আঁচল ধরে থাকতাম। সবাই বলে, ছেলেরা বড় হলে মায়ের কাছ থেকে কিছুটা দূরে সরে যায়। আমার ক্ষেত্রে ঘটেছে তার উল্টো। একটা সময় তো, মায়ের রান্না ছাড়া খেতেই পারতাম না। এখনো সেই রেশ কাটেনি। ম্যাচে কাজের মানুষের হাতের রান্না খেয়ে খেয়ে অরুচি ধরে গেছে। মায়ের হাতের রান্না না খেলে মুখে রুচি আসবে না।

আমি একাই গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছি। আমাদের গ্রামের নাম আন্ধার মানিক। বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার এক অজপাড়া গাঁ। গ্রামে বনের পরিমাণ খুব বেশি। রাত নামলে একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে যায় পুরো গ্রাম। অন্ধকারে পাশের মানুষটিকেও দেখা যায় না। পাতা নড়লেও ভয়ে গা ছম ছম করে।

বড়দের কাছে যখন প্রশ্ন করতাম, গ্রামের নাম আন্ধার মানিক কেন হলো?

জবাবে তারা বলতেন, আঁধারে যে মানিক আছে! অর্থাৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন গ্রাম। তার ভেতরে শিক্ষিত মানুষরাই হচ্ছে মানিক। সেই থেকে আন্ধার মানিক। কিন্তু এই নামের দালিলিক কোনো প্রমাণাদি কোথাও পাইনি। চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। যাহোক, ঢাকা থেকে লঞ্চ ছাড়া বিকল্প পথ জানা নেই। অবশ্য ঢাকা থেকে বাসে অনেকটা পথ ঘুরে বরিশাল যাওয়া যায়। কিন্তু সে পথে অনেক ঝক্কি। তাছাড়া বরিশাল থেকে আবার সেই লঞ্চেই গ্রামে যেতে হয়। তাই ওই দীর্ঘ পথে না গিয়ে আমি ঢাকা থেকে ভোলাগামী লঞ্চে উঠলাম। এই লাইনে তিন চারটি লঞ্চ নিয়মিত যাতায়াত করে। আমাদের বাড়ির কাছাকাছি হিজলার বাহেরচর লঞ্চঘাট। বাহেরচর থেকে পায়ে হেঁটে আমাদের বাড়ি ছয় সাত কিলোমিটার হবে।

ভোলার লাইনের এই লঞ্চগুলো সাধারণত ঢাকা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা আটটার দিকে ছাড়ে। আমাদের ঘাটে গিয়ে পরের দিন সকালে পৌঁছে। তবে নদীর অবস্থা ভালো থাকলে কখনো কখনো ভোররাতেও পৌঁছে। আমি যেদিন বাড়ি গেলাম সেদিন ভোর রাতে আমাদের ঘাটে গিয়ে লঞ্চ পৌঁছল। আমি লঞ্চ ঘাটে নেমে দেখি আমাদের গ্রামের আর কোনো যাত্রী নামেনি। লঞ্চ থেকে নেমে চিন্তায় পড়ে গেলাম। একা কিভাবে বাড়ি যাবো। লঞ্চঘাট থেকে আমাদের গ্রামের বাড়ি যেতে বিশাল বন পার হতে হয়। আমাদের বাড়ির চারদিকেও বিশালাকারের বন।

একে একে সব যাত্রী যে যার গন্তব্যে চলে গেলো। আমি রওয়ানা হবো কী হবো না ভাবতে ভাবতেই ক্ষাণিকটা সময় পেরিয়ে গেলো। আমার কাছে কোনো টর্চ নেই। সকালে যেহেতু লঞ্চ ঘাটে এসে থামে; তাই এর প্রয়োজনও বোধ করিনি। বিড়ি সিগারেটের নেশা নেই। তাই ম্যাচ বা লাইটারও সঙ্গে রাখি না। সঙ্গত কারণেই আলোর কোনো ব্যবস্থা করা গেলো না। অন্ধকারে রাস্তাও ঠিকমত দেখা যায় না।  অন্ধকারে হেঁটে বাড়ি যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় অস্থির অবস্থা।

অনেকক্ষণ চিন্তাভাবনার পর হাঁটতে শুরু করলাম। অন্ধকারে হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। আবার ভয়ও লাগছে। বাগানের মধ্যে একটু খচখচানির শব্দ পেলেও শরীরের মধ্যে কেমন যেন করে! মনে হয় রক্ত জমাট বেঁধে যাচ্ছে। ভয়ে আমি সামনে পা ফেলতে পারছি না। একপা দুইপা করে হাঁটছি আর আয়াতুল কুরশি পড়ে বুকে ফু দিচ্ছি। ছোট সময় মায়ের কাছে শুনেছি, আয়াতুল কুরশি পড়লে ভয় কেটে যায়। অথচ ভয় আমার কিছুতেই কাটছে না।

বাগানের ভেতরে যতই যাই, ততই আমার ভয় বাড়তে থাকে। ভয়ে আমার পা দুটি কাঁপছে। হাঁটু ভেঙে আসছে। সামনের দিকে পা ফেলতে গেলে মনে হয় পেছন থেকে কেউ টেনে ধরছে। উঁচুনিচু রাস্তায় কিছুক্ষণ পর পর পড়ে যাচ্ছি। ভয় ধরানো বিভিন্ন ধরনের ডাক শুনে বুকের মধ্যে দুকদুকানি বেড়েই যাচ্ছে। আর মনে হচ্ছে, এই বুঝি কেউ ঘাড় ধরে রাস্তার পাশের খালে ফেলে দিল। মনে মনে ভাবি, আচ্ছা এসব ডাক কিসের? পাখির, ব্যাঙের? নাকি অন্য কিছুর? আবার ভাবি, বাগানে বাঘটাগ কিছু নেই তো! বাঘডাস, শেয়ালও অনেক সময় হামলা করে। সজারু কখনো কখনো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সজারুর শরীরের লম্বা লম্বা কাটা দিয়ে সে মানুষকে আক্রমণ করে। এসব কিছু যদি নাও থাকে ভূত তো নির্ঘাত আছে! এতোবড় বাগানে ভূত নেই তা কী করে হয়!

ছোটবেলায় বেশ কয়েকটা ছেলে মেয়েকে মাদার গাছে তুলে রাখার দৃশ্য দেখেছি। তাদের গাছ থেকে নামাতে কী যে কষ্ট হতো! আমাকেও যদি ভূত ঘাড় ধরে বড় গাছে তুলে রাখে! এসব কথা মনে করে ভয়টা বুঝি আরো বাড়ল। চারদিক থেকে ভৌতিক ধরনের শব্দ কানে আসতে শুরু করল। এবার আমি কখনো হাঁটি, আবার কখনো জড়বস্তুর মতো দাঁড়িয়ে থাকি। আমি সামনের দিকে আগাবো, নাকি আবার পেছনের দিকে চলে যাবো তা নিয়ে ভাবি। ভাবতে ভাবতে আবার সামনের দিকে পা ফেলি। ভয়ে আমার গলাটা শুকিয়ে গেছে। লালা দিয়ে মুখটা ভেজানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তাকে কাজ হচ্ছে না।

আমি ভেতরে ভেতরে সাহস সঞ্চারের চেষ্টা করছি। বার বার মনকে বুঝ দিচ্ছি, বাগানে কোনো ভূত নেই। এমন কোনো জীবজন্তুও নেই; যা আমাকে আক্রমণ করতে পারে। কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। মনের ভয়টাকে কিছুতেই দূর করতে পারছি না। কী আর করা! বাড়িতে তো যেতে হবে! মনের যতটুকু শক্তি আছে তা নিয়ে সামনে আগাচ্ছি। মনে মনে ভাবি, কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো আজান দেবে। আজানের শব্দে নাকি ভূত পালায়। কিন্তু এখনো আজাদ কেন দিচ্ছে না! কয়টা বাজে কে জানে।

নানা ভাবনা আমার মাথায় ঘুরপাঁক খায়। ভয় যত বাড়ে নেগেটিভ ভাবনাগুলোও চারদিক থেকে আমাকে ঘিরে ধরে। আমি এখন যে পা ফেলছি তা মাটিতে পড়ছে কিনা ঠিক বুঝতে পারছি না। আমি মনে হয় হাওয়ায় ভাসছি। হঠাৎ একটা ভৌতিক কাণ্ড ঘটল। আকাশে মেঘ নেই। অথচ ঝপঝপিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টির পানি বরফের মতো ঠাণ্ডা। বৃষ্টির পানি গায়ে লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমার কুঁকড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হলো। কোথাও যে গিয়ে দাঁড়াব তারও কোনো সুযোগ পেলাম না। বৃষ্টিতে ভিজে একাকার। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখি বৃষ্টি নেই। রাস্তাও শুকনা। এ কী কাণ্ড! তার মানে কি এসব কাণ্ডকীর্তি ভূতে করছে?   

আমি খুব সাবধানে পা ফেলছি। ঠাণ্ডায় থর থর করে কাঁপছি। এমন কাঁপুনি যে ঠিকভাবে পা ফেলতে পারছি না। কিছুটা পথ এগিয়ে যাওয়ার পর ধপাস করে আমি একটা গর্তের মধ্যে পড়ে গেলাম। আমার মনে হলো, আমি হিমালয় থেকে একেবারে পাদদেশে পড়েছি! পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার অজান্তেই জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলাম। এতোবড় চিৎকার আমি আগে কখনো দিয়েছি কিনা মনে নেই। আশপাশে বাড়ি থাকলে লোকজন আমার চিৎকার শুনে চলে আসতো।

গর্তে পড়ার পর কিছুক্ষণ আমি ঝিমমেরে বসে আছি। মনে মনে ভাবি, রাস্তার মাঝখানে এতোবড় গর্ত খুড়ে রাখল কেন কে জানে! ভাগ্যিস গর্তের মধ্যে কিছু ছিল না। ব্যথাট্যথা লাগেনি। হঠাৎ আমি টের পেলাম কেউ আমার ঘাড়ে ধরল। এমন জোরে ধরল যেন আমার ঘাড়টা ছিড়ে যাচ্ছিল। এমন ভয় পেলাম যে, চিৎকার দিতেও ভুলে গেলাম। তারপরও আমি চিৎকার দেয়ার চেষ্টা করছি। অথচ আমার মুখ থেকে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছে না। মনে হচ্ছে, আমার চিৎকার কেউ গিলে খাচ্ছে। অনেকক্ষণ আমাকে ওপরে তুলে রেখেছে। আমরা ছোট সময় ব্যাঙ যেমন করে ওপরে তুলে রাখতাম; ঠিক তেমন করে আমাকে তুলে রাখা হয়েছে। আমি ব্যাঙের মতোই হাত পা ছুড়ছি।

আমাকে যদি খালেও ছুঁড়ে মারে, মারতে পারে। আবার মাটির ওপরে সজোরে আছারও মারতে পারে। আমি মোটামুটি বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছি। মনে মনে ভাবছি, আমাকে কোনো যমদূত ধরেছে। আর বাঁচার কোনো আশা নেই। আমাকে এবার খালের পানিতে চুবাবে। খালের পচাগলা পানি খেয়ে আমার মৃত্যু ঘটবে। বাঁচার শেষ চেষ্টা হিসেবে আমি এবার আয়াতুল কুরশি পড়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু আয়াতুল করছে মনে করতে পারছি না। একদম ভুলে গেছি। এবার আমি আরো নিশ্চিত যে, আমার মৃত্যু অবধারিত।

হঠাৎ ভারি একটা কণ্ঠস্বর ভেসে এলো। কি রে আসিফ! ভয় পেয়েছিস? কিসের ভয়? আমি তো তোকে বাঁচিয়ে দিলাম। যেভাবে পড়েছিলি তাতে তো বাঁচার  কোনো আশা ছিল না। তুই যা ই ভাবিস, আমি কিন্তু তোকে বাঁচাতেই এসেছি। হা হা হা! হি হি হি!

হাসির শব্দটা আমার কাছে অস্বাভাবিক লাগল। কোনো লোক নেই। অথচ হাসির শব্দ আসছে। মনে হচ্ছে আমার পাশে দাঁড়িয়েই হাসছে। এটা যে ভূতের হাসি তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মানুষের হাসি এমন হয় না। কোনো মানুষ এমন করে হাসতে পারে না।

কিছুক্ষণ পর আবার সেই কণ্ঠস্বর, কিরে আসিফ! আবার তুই আমাকে নিয়ে সন্দেহ করিস? আমি মোটেও ভূত নই। তুই শুধু শুধু আমাকে সন্দেহ করিস। আমি তোর বন্ধু। আমি তো সব সময় তোর আশেপাশে থাকি। তোর কোনো বিপদ হলে দৌড়ে আসি সাহায্য করতে। হি হি হি! হা হা হা!
একটানা ভয় ধরানো হাসিতে আমার পিলে চমকে যাওয়ার মতো অবস্থা। আমি দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। সামনে আগাবো নাকি বসে থাকবো-সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। আমার এসব ভাবনা মিলিয়ে যাওয়ার আগেই কেউ একজন আমার কাঁধে হাত দিল। আমি চমকে উঠে বললাম, কে!
সে বলল, আমি বাহারুল।
বাহারুল নাম শুনে বাঁচার ক্ষীণ আশা জাগল। বাহারুল আমার সমবয়সী। সে প্রাইমারি পর্যন্ত আমার সঙ্গে পড়েছে। তারপর কৃষি কাজে মনোযোগ দিয়েছে। তারপরও তার সঙ্গে সম্পর্ক অটুট আছে। সত্যি সত্যিই যদি বাহারুল হয়ে থাকে তাহলে আর ভূতের ভয় নেই। আমি কিছু খুশির ভঙ্গিতেই বললাম, আমি আসিফ।

ও আসিফ! আয় ভাই তোর সঙ্গে একটু কোলাকুলি করি। কতদিন তোরে দেখি না!

বাহারুল আমার সঙ্গে কোলাকুলি করার জন্য এগিয়ে এলো। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে আমাকে দুই হাত দিয়ে এমন একটা চাপ দিল; মনে হলো আমার জানটা বুঝি বেরিয়ে যাবে! আমি কোকানি দিয়ে বললাম, ওরে বাবা! বাহারুল, তোমার গায়ে এতো শক্তি!
বাহারুল বলল, শক্তি হবে না! গ্রামে খাঁটি জিনিস খাই। সবই তো গায়ে লাগে! হা হা হা হি হি হি!

সেই ভৌতিক হাসি! মনে হলো, আগের হাসিটাই আবার শুনতে পেলাম। আমার শুকনো গলা আবার শুকালো। খড়খড়ে গলায় বললাম, বাহারুল, তুমি কি বাড়ি যাবা?।
কেন, তোর ভয় লাগে?
হ, ভয় তো একটু লাগেই!
তাই নাকি! তাহলে চল তোকে দিয়ে আসি। আয় আয়!
বাহারুল আমার আগে আগে হাঁটে। আলো আঁধারিতে তাকে কিছুটা দেখা যাচ্ছে। আমি তার পেছনে পেছনে যাই। যেতে যেতে দেখি সে নেই। আমি মোটামুটি দ্রুতই হাঁটছিলাম। অথচ মুহূর্তের মধ্যে দেখলাম, সে অনেকটা পথ এগিয়ে গেছে। সামনে গিয়ে আমাকে বলে, কিরে তোর হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে?

আমি তো অবাক! মনে মনে ভাবি, ব্যাপারটা কি? বাহারুল এতো দ্রুত এগিয়ে গেলো কি করে! কোনো কারণ খুঁজে পাই না। বাহারুল আমার জন্য কিছুক্ষণ দাঁড়াল। তার কাছাকাছি যাওয়ার পর আবার সে হাঁটতে শুরু করল। হঠাৎ দেখি সে তালগাছের মতো বিশালাকার ধারণ করেছে। বিশাল লম্বা দুটি পা। ওই  চেহারা দেখলে যে কেউ ভয় পাবে। আমি তো সারাক্ষণই ভয়ের মধ্যে আছি। কিন্তু এবার মনে হলো এবার আমি আর বাঁচতে পারব না। বাহারুলের বেশ ধরেছে ভূতটা। সে আমাকে খালের পানিতে চুবিয়ে মারবে।
কিছুক্ষণ পর আবার দেখি সে আমার পাশে। কিরে আসিফ! তোরে কি ভূতে পাইল? তুই এমন করছিস কেন?
 কেমন করছি। আমি তো তোমাকেই খুঁজে পাই না।
আমাকে খুঁজে পাস না মানে! আমি তো তোর সামনেই! আমার মনে হয় তোরে ভূতে পাইছে।
আমি নরম গলায় বলি, কি জানি।  
এই! আমি থাকতে তোর ভয় কি? হাট তাড়াতাড়ি।

আবার একপা দুইপা করে হাঁটতে থাকি। কিছুদূর যাওয়ার পর দেখি রাস্তার ওপর বিশাল একটা দেয়াল। রাস্তার ওপর দেয়াল! ঘটনা কী! আমি উদ্বিগ্ন হয়ে ভাবতে থাকি। আবার বাহারুলের কথাও ভাবি। সে হঠাৎ কোথায় গেলো? আমি চিৎকার দিয়ে বাহারুলকে ডাকি। বিস্ময়করভাবে আমি লক্ষ করি, আমার মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না। আমি আরো জোরে চিৎকার করি। তাতেও কোনো কাজ হয় না। এ সময় আমি ভয় ধরানো কিছু শব্দ শুনতে পাই। শব্দগুলো চারদিক এমনভাবে আসছিল যে আমি আর সহ্য করতে পারছি না। এতো ভয়ও আমি আর নিতে পারছি না। কী আর করা! আমি রাস্তার মাঝখানে বসতে বসতেই দেখি, সেই বাহারুলের রূপ ধারণ করে একটা ভূত আমার সামনে এসে দাঁড়াল। তার হাত দুটি অস্বাভাবিক রকম লম্বা। আঙুলগুলো অস্বাভাবিক ধরনের। এক হাত দিয়ে সে আমার ঘাড় ধরল। তারপর ছুঁড়ে মারল আমাকে। আমি আমাদের বাড়ির দরজার সামনে গিয়ে ধপাস করে আছড়ে পড়লাম।
তারপর কী ঘটল তা আর মনে নেই।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।