অনন্ত পৃথ্বীরাজের পাঁচটি কবিতা

প্রেমপত্র
কৈশোরে বেনামি কিছু পত্র পেয়েছিলাম
লুকিয়ে ঝুকিয়ে পড়েছি সব
কী অদ্ভুত মায়াজড়ানো এক একটি শব্দজাল
আমাকে অস্থির করে দিতো।
আমার কাছে যা ছিল নিছক আঁকিবুকির খেলা,
অথবা কিছু নিছক শব্দের গাঁথুনি মাত্র,
লোকে সেগুলোকেই প্রেমপত্র বলতো।
****
চৈত্রের রোদ
নিজের পরিচয় দিতে লজ্জা লাগে—
তাই আপনাকে তুমি বলেই ডাকি।
তুমি আমাকে আর মিস করো না।
চৈত্রের রোদ অথবা ঝড়ো হাওয়ায়—
উবে গেছে পারিজাত প্রেম,
আমাদের ক্ষণিক মেলামেশা
হয়তো কিশোর অপরাধ;
কোন দোষে ঘায়েল করেছিলেন!
ম্যাডাম, প্রেম যে বয়স মানে না।
****
মেয়েরা
সেলুনে বসে আছি—
চুলের বিচিত্র স্টাইল দেহের সৌন্দর্য বাড়ায়!
একটি নারীকে বশ করব বলে কতশত ফন্দি আঁটি!
দেহের সৌন্দর্য যে মনের সৌন্দর্য নয়,
মেয়েরা বোধ করি তা আগেই টের পায়।
আজ যদি প্রচুর অর্থকড়ি থাকত!
হিসেবটা নিশ্চয়ই অন্যরকম হতে পারত।
****
হাবিল অথবা কাবিল
একটি নারীকণ্ঠের জন্য রক্ত আপন রক্তের সাথে বেঈমানী করে।
সহোদরও শত্রুতে পরিণত হয়। আমাদের আদিম পাপের দায়।
তবু নারী ওগো ষোড়শী মেয়ে; আমি তোমাকে কিছুতেই হারাতে চাই না।
তোমাকে পাবার নেশায় ভাই হারানো শোক মাটি চাপা দিই।
নিজেই হন্তারক হই আপন ভ্রাতার।
****
ফ্রেম
মেঘের ফানুস উড়িয়ে দিও, আমি তাল দেব ক্যাবারে নাচের।
তোমার আগুন ঝরা ঠোঁটে কৃষ্ণচূড়ার বান ডেকেছে—
পৃথিবীর মারকন্যাদের মতন তোমার বাহ্যিক চেহারায় বয়স বোঝা যায় না;
আমি ওই অবয়ব মনের ফ্রেমে বাঁধার জন্য মিছে পায়তারা করি।
পৃথিবীর বিদর্ভ নগরের অলিতে গলিতে তোমাকে আবিষ্কারের নেশায়—
এখনো পায়ে হেঁটে পাড়ি দিই বহু পথ।
এসইউ/এমএস