গোলাম রববানীর কবিতা
তোমায় দিয়ে আর হবে না এবং অন্যান্য
তোমায় দিয়ে আর হবে না
ছেড়ে দাও, সরে যাও—তোমায় দিয়ে আর হবে না
তুমি রক্তখেকো মহান নরখাদক, ছি ছি করে লোক
তুমি অন্ধ রাজা, তোমার কোনো চোখ নেই
নেই চোখের কোনো আলো—তুমি এক অটিস্টিক
এক্ষুণি হাতে নাও লাকিস্টিক, শান্তির টান দাও
তুমি মহান নির্বাক—চুপ হয়ে যাও, আর কোনো কথা না
ছেড়ে দাও, সরে যাও—তোমায় দিয়ে আর হবে না
তুমি দীর্ঘশ্বাস বাড়ানো দরদী, শোকের সুতীব্র স্রোতস্বিনী
ডুবে যাও, অগভীর ঘৃণ্যজলের কোনো গহীনে
কোনো অশ্রুপাত করো না—অশ্রুজলের মানেই বোঝ না
তুমি বড়ই পাষণ্ড, ঠক, জোচ্চর এক মহা হৃদয়হীনা
রক্তের মানে বোঝ না, নরক বানালে স্বজনের
তুমি লেখক জেনেছি—রচনা করলে লাল শোককাব্য
কেউ পড়ে না এমন কাব্য! ডিসোপ্যান টু না-ও
ছেড়ে দাও, সরে যাও—তোমায় দিয়ে আর হবে না
লোকে শান্তি চায়—তোমার প্রশান্তি ঘুমে, পারলে ঘুমিয়ে যাও...
****
কুসুম, অহিংস বিনাশের চক্রধারী দলে
কতটা সম্ভাবনা নিয়ে এগোচ্ছো তুমি বলে যাও—
সময় নিয়ে কিছুটা বলে যাও, তাড়াহুড়োর দরকার নেই
তাড়াহুড়োতে কেবলই সম্ভাবনার সন্তান বেজন্মা হয়;
বুঝতে কোনো অসুবিধে হবে না, চোখ-কান মুখ খোলা
রাখলেই নিশ্চিত করে বুঝতে পারবে কবিতার ভাষা—
সবে বিগত হওয়া চব্বিশ সালটা বড্ড বেশি বেপরোয়া:
চব্বিশ সংখ্যাটির পিতা ইজ্জতভ্রষ্ট নষ্টালজিক নাগরিক
লাজলজ্জার গুষ্ঠি কেলিয়ে বিশ্ব দাপিয়ে বেড়াচ্ছে...
এখানে অক্সিজেন আটকে রাখার পায়তারা চলছে
বাতাসের দেহ ক্লান্ত; ভার বইতে পারছে না ইন্টারনেট
সন্দেশে নীলচক্ষুর সুনজর—সাধুরা ক্যানিবালিজম!
ফ্রেস টয়লেট টিস্যু হোয়াইটে যেন মুখ মুছে নিচ্ছে...
সেই মুখে সুখ-শান্তি সমৃদ্ধির ভীষণ বাণী মলত্যাগ করছে
শ্রোতা অবশিষ্ট সন্তানরা, উত্তর-প্রজন্ম শিক্ষা পাচ্ছে
বদলে যাও বদলে দাও—পরিবর্তন পাপিষ্ঠ পিচাশ
নীতিমালা নীলনকশার ছোপ; বিশ্ববিবেক স্বীয় বলিদানে।
চব্বিশমুখে মুখোশ পরে সমাসপুর পেরিয়ে ওমগ্রামে
ক্রিড কাঁদছে ভীষণ, পঁচিশ কী পারবে কাটাতে—
ফেলে আসা সে সময়: কাচুমাচু এ নাকাল অসামাল—
পঁচিশ তুমি চেয়ো না আর চব্বিশের অশ্রুবন্যার চোখে।
বিস্ময় পৃথিবী নিস্তেজ অক্ষমতার জেন্ডার নিয়ে চলছে
প্রতি মুহূর্তেই জন্ম দিচ্ছে রক্তাক্ত জখম এক পৃথ্বীশিশু—
নীরবতা হাতছানি দিয়ে ডাকছে প্রকৃতির বাপ-মাকে
পঁচিশ সাল এসেছি আমি, জীবপ্রেম দাও বুঝতে আমাকে...
****
প্রত্যাশা রাখি কেন?
কাকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম সেদিন ভুলে গেছি
মনে নেই আর বিশ্বস্তকাল;
সরছে সেই আবেগের ডানা, সবদিকে ধূসরতা—
শীতরঙের উদারতা আকাল!
ভরাপৌষের যৌবনচাঙা মেরে ঠেলে ওঠে
সৃজন সতেজ পানির প্লাবন—
পাঠক যতই আমোদ করুক, মধুবনে
সেই মৌমাছি বোলতারা হলো গুণ।
সকাল আসে শেষের গায়, পঁচিশ ভ্রমণ তাকায়
ঝাপসা গেছে চব্বিশ উল্লাসে
দুহাত পেতে এই পঁচিশে: আসবে কি কিছুটা
জটিলতা কেটে সারল্য পথে?
এসইউ/এএসএম