বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত তিনটি কবিতা
ইমরুল ইউসুফ
যে কাব্যের শিরোনাম স্বাধীনতা
তিনি আসছেন
হাতে আলোর মশাল
সহস্র সিঁড়ি পেরিয়ে
পা রাখলেন সবুজ দূর্বায়।
মধুমতী নদী থেকে শাঁ শাঁ শব্দে
ভেসে আসে ভেজা বাতাস—
বাতাসে ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ
সতেরোই মার্চ মঙ্গলদ্বীপের মতো
আলোয় উদ্ভাসিত চারপাশ।
মধুমতী নদীতে ঢেউ তোলে আলোর মিছিল
ঢেউয়ের বুননে লেখা হতে থাকে চিরজীবিত
এক মহানায়কের কাব্য—মহাকাব্য
যে কাব্যের প্রধান চরিত্র জাতির পিতা শেখ মুজিব
যে কাব্যের প্রধান বিষয় বাঙালির মুক্তি
যে কাব্যের শিরোনাম স্বাধীনতা
যে কাব্যের অলংকার লাল সবুজের পতাকা।
****
সাতই মার্চ
সেদিন আলোফোটা ভোরে—শিশির বললো, আজ আমি জলীয়বাষ্প হবো না
পাতা বলল, আজ আমার কোনো প্রয়োজন নেই সালোকসংশ্লেষণের
ফুল বলল, আজ আমার প্রগাঢ় রং, স্নিগ্ধ গন্ধ ছড়াবো না বাতাসে
পাখি বলল, আজ আমি উড়ে যাবো না কোথাও, কোত্থাও না—
ঘাস বলল, আজ আমি সবুজের মতো সুন্দর সেই মানুষটির পায়ের স্পর্শ পাবো ভেবে
বারবার শিউরে উঠছে শরীর
আকাশ বলল, আজ আমি মেঘ হবো না, ছুটবো না পঙ্খিরাজের মতো দিগ্বিদিক
বাতাস বলল, আজ আমার অখণ্ড অবসর, বয়ে যাব না কোনোখানে
পোকা-মাকড় কীট-পতঙ্গ বলল, আজ জেগে থাকার দিন, মাটির নিচ থেকে উপরে আসার দিন
মাটি বলল, এই যে আমি খাঁটি বাংলার মাটির ওই মানুষটির জন্য অপেক্ষায়
ইট, কাঠ, পাথর বলল, আমরা আজ পাহাড়ের মতো অটল সেই মানুষটির কথা শোনার অপেক্ষায়;
সাগর, নদী, পাহাড় বলল, আমরাও যাব স্বপ্নের মতো সুন্দর সেই মানুষটিকে দেখতে—
মঞ্চ ঘিরে দাঁড়ালো ভোরের শিশির, পাতা, ফুল, পাখি, ঘাস, আকাশ, বাতাস, কীট-পতঙ্গ
আরও এসে দাঁড়ালো স্বাধীনতার লড়াইয়ে অকুতোভয় লক্ষ লক্ষ সৈনিক
আজ এই রেসকোর্স ময়দানে আসবেন তিনি
কেননা আজ সাতই মার্চ।
****
যে পাতাকায় বাংলাদেশ
আজ আমরা পরাধীন নই
আজ আমরা অন্ধকারে নই
আজ আমরা নিরাশ্রয় নই
আজ আমরা অসহায় নই
আমাদের আছে স্বতন্ত্র ইতিহাস
আছেন একজন মৌলিক বাঙালি
যাঁর কণ্ঠে ছিল স্বাধীনতার গান
হৃদয়ে বাংলার মানুষ
মানচিত্রজুড়ে বাঙালির বীরগাথা
আর সগর্বে উড্ডীন লাল-সবুজ পতাকা।
যে পতাকা বঙ্গবন্ধুর
যে পতাকা বাঙালির
যে পতাকায় বাংলাদেশ।
এসইউ/এমএস