ধূসর নীল কুয়াশা এবং অন্য কবিতা

সাহিত্য ডেস্ক
সাহিত্য ডেস্ক সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০৮ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

অনিন্দ্য নূর

ধূসর নীল কুয়াশা

এই বিভ্রম আদিম বাংলার জনপদে—
চোখে চোখে প্রেমার্দ্র অন্ধকার নিয়ে
হিম শিশিরের কী অদ্ভুত সূর্যোদয়—
মাধবী রাতভর—ওরা রক্ত ঘামের ফেরি শেষে
শতাব্দীর ক্ষুধার্ত—লাল সূর্যের পরোয়ানা নিয়ে
শিরদাঁড়া হয়ে দাঁড়ায়—উদ্ভিদের মতো।
শীর্ণ বনো কঙ্কালসার শরীরে গড়ে
রক্ত-মাংসের—প্রতিরোধের শীতল মঞ্জিল।

মহাকাল বয়—আচ্ছাদিত হৃদ-বৃন্তের নিঃশ্বাসে—
নিকষ নতুন আলোয়—প্রাণ স্থবির হয়
বুক-মুখ অবধি উগরে আসে জীবনের লেনদেন।
ইতিহাস থেকে নিহত বর্ণগুলো বিদ্রোহ করে
খাদ্যভান্ডারে; কিংবা দুর্মর ভাঙে সভ্যতার সোপান।
শুধু কুয়াশার মতো—আব্রুহীন দৃষ্টি মলিন হয় প্রচণ্ড।

****

ফেরারী চিরকুট

আমার ফেরারী দিনগুলোর চিরকুটে—
তোমার বয়োবৃদ্ধ ডাকবাক্স ভরে গেছে।
পার্থিব গল্পের সমাধির চত্বরে—সহস্র উপন্যাসের
ক্ষত-বিক্ষত লাইনগুলো নগ্ন বিদ্রোহ করে
যেন ছিনিয়ে নেবে—নতুন জীবনের উপসংহার অধ্যায়গুলো।
কোটি বছরের মৌনতার নীল বিষে জর্জরিত
নক্ষত্রগুলো—নিঃসঙ্গতার বিষ উগরে দেয়।
অন্ধকারে বনোল্লাসে পাপে কাঁপে বৃক্ষরাজি।
নীল আকাশের যন্ত্রণা মোড়ানো বিছানায়
কাতরায় একেকটা জীবন্ত পাপাত্মার মাংসপিণ্ড।
চোখে তার এক রাজ্যের মদিরার সর্বনাশা নেশা
হৃদয়ে পঙ্কিল সন্ন্যাসিক শয়তানের উপাখ্যান।
‘আহ জীবন তবুও চলে যায়
বিধাতার আরাধ্য অনুকম্পায়’
চারিদিকে মহাসমুদ্র ডেউয়ের মতো
আজানের পবিত্র ধ্বনি আছড়ে পড়ে—অন্দর থেকে অন্তরে
আমরা আগুন পাখির ডানা নিয়ে আদিম
যাযাবর শামুকের মতো গুটিয়ে নিই জীবন।
জীবনের অধ্যায় থেকে অধ্যায় শুধুই নষ্ট হচ্ছে
অলৌকিক নিয়ামতের অফুরন্ত ভান্ডার।

****

না ফেরার ডানা

তোমার প্রতি ফেরার দিনগুলো আর নেই—
এই প্রবীণ চশমার ফাঁকে উড়ে গেছে রঙিন প্রজাপতি;
কোথায় পাবো তারে! আঁধারে নাকি
তোমার অলিখিত সত্তার ভেতর।
মরীচিকা প্রজাপতির ডানায় তোমার চুম্বন
আর আমার মৃত্যুর চিহ্ন আঁকা আছে।
অনন্ত নৈঃশব্দে তোমার ছায়ামূর্তি দেখে
জন্মাবধি শুধু ভুলের ভেতরই রয়ে গেলাম।
ভেতরে ভেতরে এক শূন্য সমীকরণে
আত্মমগ্ন পৃথিবী কিংবা আমি; অবশেষে
দিবস আর রজনীর দু’টি ডানায় ধাবিত হচ্ছি—
বিমোহিত অনন্তকালের তরে।

এসইউ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।