তাইজুল ইসলামের তিনটি কবিতা
অন্ধকার ও একটি কবিতা
হঠাৎ ডানা ছেঁড়া একটা শিশু প্রজাপতি
এসে পড়লো উঠানে, এদিক-ওদিক তাকাই;
কোথাও কোনো দস্যি ছেলেমেয়ে নেই
যারা ওর ডানা ছিঁড়ে দিতে পারে।
আকাশে তাকাতেই দেখি ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি
উড়ে যাচ্ছে দলবেঁধে। খানিক পর
বুঝতে পারি ওগুলো পাখি নয়।
মেঘ ভেবে মন ভরে গেল যা দেখে
তা-ও আসলে মেঘ ছিল না।
ক্রমশ সূর্যের অন্ধকার নামে উঠানময়
তারপর পুরো বাড়ি, পাড়াজুড়ে।
অন্ধকারে একটা মুখচ্ছবি ভেসে ওঠে,
ওটা কবিতা; ডানা ছেঁড়া, বুক ফুটো, কপাল ফাটা
ভ্রূর সীমান্ত গড়িয়ে রক্ত পড়ছে।
কবিতার অমন করুণ দশা দেখে মনে হলো
কবিতার খাতায় কারফিউ জারি হওয়া জরুরি
কবিদের বলে দিতে ইচ্ছে হয়—‘পেন ডাউন’!
যে শহরের আকাশ মুক্ত নয়, যেখানে
পাখির পরিবর্তে ওরে যুদ্ধবিমান
মেঘের মতো ভাসে ধোঁয়া,
যেখানে বন্দুকের নলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে শিশু
সেখানে কবিতা জন্মাবে কার জন্য?
****
সীমানা
মাছের কাছে জলই মাতৃভূমি
পশুদের কাছে জঙ্গল।
তার মানে এই নয় যে
অ্যামাজন ঢুকে যাবে আফ্রিকায়
আর আফ্রিকা দখল করবে সুন্দরবন।
মাছের কাছে মাতৃভূমি জল
পশুদের কাছে জঙ্গল
এ কথা সত্য।
তার মানে এই নয় যে
তিমি এসে দখল করবে কুয়োর জল।
****
আবাবিল
মুখটি টিপে কেউ কেউ হাসছে ভীষণ;
কী করে এক টুকরো কঙ্করে শত্রু হবে নিধন?
বোমার জবাবে কঙ্কর কতটা খোঁড়া যুক্তি!
কী করে এক টুকরো কঙ্করে মিলতে পারে মুক্তি?
খুশিতে আজ যাদের বাঁধ ভাঙে,
তারা কি জানে, তিনি চাইলে কী না পারেন!
কারো কি আছে মনে আবরাহার স্বপ্ন?
কী করে এক টুকরো কঙ্করে করেছিলেন স্বপ্নভঙ্গ?
এসইউ/এএসএম