যে আকাশ শুধুই আমার

মেহেরুন্নেছা
মেহেরুন্নেছা মেহেরুন্নেছা , কথাসাহিত্যিক ও কবি
প্রকাশিত: ০৯:৪৭ এএম, ০৩ আগস্ট ২০২৩

পর্ব দুই.
(পূর্ব প্রকাশের পর)
সপ্তাহ ঘুরে হাটবার এলো। প্রতি বুধবার বিকেলে বড় হাট বসে। বড় হাট লোকে লোকারণ্য। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি তো পরক্ষণেই ঝমঝম বৃষ্টি। কালো ছাতায় সয়লাব পুরো বাজার। বাজারের সঙ্গে লাগোয়া হোচ্চার খাল। সারি সারি নৌকা ঘাটে বাঁধা। খালের দু’পাড়ের সেতুবন্ধ চওড়া পাকা সাঁকোটি অটল দাঁড়িয়ে আছে। সাঁকোর গোড়ায় বসেছে বাজার।

দুপুর থেকে মতি বাজারে ঘুরঘুর করছে। কুদ্দুসের পরিবারের সদাইপাতি বেশিরভাগ সময়ে মতি করে দেয়। এজন্যই বাজারে আসা। কুদ্দুসের মা মরিয়ম মুটচাল দিয়ে দেয় মতির কাছে। মুটচাল বিক্রির টাকায় যতটুকু সদাই কেনা যায় ততটুকুই সে কিনেছে। কেরোসিন তেলের বোতল হাতে, পোটলায় লবণ আর গুড় মাথার ওঁড়াতে নিয়ে ভিজে ভিজে মতি রওয়ানা দিলো কুদ্দুস কাকাদের বাড়ির দিকে।

মরিয়ম কলার বরগ মাথায় দিয়ে পূবের ঘরের কাছে এসে দাঁড়ায়। মনে মনে মতির কথাই ভাবছে। বৃষ্টি মাথায় করে ছেলেটা সদাইপাতি নিয়ে কেমন করে আসবে!

দূরে মরিয়মের দৃষ্টিতে গাছপালা যেখানে ঝাপসা হয়ে এসেছে তার থেকে কিছুটা এগিয়ে ওঁড়া মাথায় মতিকে দেখা গেলো। কয়েক মিনিটের মাথায় মতি মরিয়মের কাছাকাছি চলে এলো প্রায়।

“ও বুু! খচ্চা আনছি!”

মতি মরিয়মকে বু ডাকে। মতির মাথা থেকে বাজারের ওঁড়া গ্রহণ করে মরিয়ম। সদাইপাতি না দিতেই চলে যাওয়ার কথা জানায় মতি। মরিয়ম মতিকে অপেক্ষা করতে বলে।

একটু পরে মরিয়ম বাড়ির ভেতর থেকে বাঁশের ডুলায় করে কয়েকপদ তরকারি নিয়ে এলো। মতির হাতে ডুলা ধরিয়ে দিয়ে বললো, “ধর, তোর মাত্তোন দিছ!”

“কিতা বু?”

“কয়টা ডাঁটা, কাঁকরোল আর দুগা ভাতের চাইল।”

মতি লুঙ্গি পেতে দেয়। চাল আর কাঁকরোল লুঙ্গির কোঁচে, হাতে ডাঁটাসহ বাড়ির দিকে রওয়ানা দেয়।

এখন আর বৃষ্টি নেই। ঝোপঝাড়ের আড়াল থেকে ভাঁপ মিশ্রিত একধরনের বুনো গন্ধ মতির নাকে এসে লাগে।

হঠাৎ গড়ের কিনারায় পানিতে জোরে বিক্ষিপ্ত আলোড়ন শুরু হলো। মতি বুঝে গেছে এ আলোড়নের হেতু। হগার বাড়ির হাকিমের পাতা টাঙ্গা বড়শিতে বড় মাছ ধরা পড়েছে। মতি জানে, এ হাকিম চাচার টাঙ্গা! হাকিম প্রতিদিন একই জায়গায় গড়ের পাড়ে টাঙ্গা পুঁতে রাখে।

এক্ষুণি না ধরতে পারলে বড়শিসহ মাছটা হাতছাড়া হয়ে যাবে। তার লুঙ্গির জিনিসপত্র লুঙ্গিতেই গিঁট দিয়ে ভালো করে বেঁধে সে হাঁটু জলে নামলো। বিরাট এক শোল মাছ! একটানে বড়শি তুলে রাস্তায় ফেলেই হাতের কাছে থাকা কাঠের গুঁড়ি কুড়িয়ে এনে মাছের মাথায় সজোরে আঘাত হানলো।

মাছটি পুরোপুরি না মরলেও জলে পালানোর শক্তি তার শেষ! কেবল মৃদুলয়ে কাদামাখা গায়ে ক্ষণে ক্ষণে লেজ নাড়াচ্ছে।

মতি বড়শিসহ মাছ নিয়ে রওয়ানা দিল হগার বাড়ির দিকে। হাকিমের বউয়ের কাছে মাছ বুঝিয়ে দেওয়া মাত্র দৌড়ে বের হয়ে এলো। হাকিমের বউ অনেক করে বললো, শোল মাছটা যেন মতি নিয়ে যায়। কিন্তু মতি তা নিবে না। শেষমেশ হাকিমের বউ বলে, “হতির পোলা এডা আস্তা খোদারকাডা!”

দৌড়াতে দৌড়াতে মতি রাস্তায় এসে দম নিল। এতোক্ষণ সে শোল মাছ কাবু করার ঘোরের মধ্যে ছিল। কেবল ঘোর নয়, মাছটা হাকিমের বউয়ের কাছে পৌঁছানোর পর মনের মধ্যে কি এক অজানা আনন্দ দানা বেঁধে উঠেছিল। চারদিকের গাছগাছালি ম্লানমুখে দন্ডায়মান। গৃহস্থের হাঁসগুলো সারাবেলা চইচই করে ঘুরে এখন আশ্রয়ের পানে গমনোন্মুখ। কিন্তু মতির বাড়ি ফিরতে মন চাইছে না।

তবু সে বাড়ির দিকেই হাঁটছে। রাস্তার ধারের কচি আমপাতা ছিঁড়ে মুখে পুরলো। বিকেলের সোনালি আভায় আকাশে পাখিদের বেলা শেষের কসরত। কেমন মেদমেদে গরম লাগছে। গায়ে চিকন ঘাম। বোধহয় আবার বৃষ্টি আসবে।

ভেকের দল ডেকে চলেছে অনবরত। তার খুব ক্ষিধে পেয়েছে। বাজারে অনেক ধরনের খাবার ছিল। পয়সা না থাকায় পেটে ছিঁটেফোঁটাও পড়েনি।

বাড়ির কাছাকাছি চলে এলো মতি। বাড়ি বলতে নিজেদের বাড়ি নয়, তার নানার বাড়ি। মতি তার মা-বাবাসহ নানার বাড়িতে থাকে।

তার নানা সুবাস এসেছিল এই গ্রামে। তাদের থাকার কোনো জায়গা ছিল না। পরে তিন গ্রামের মানুষ দয়াপরবশ হয়ে খালের পাড়ে জঙ্গলের মাঝে এক টুকরো খাসজমি দেয় নানা ফজর আলীকে ঘর তোলার জন্য। ফজর আলী ঘর বাঁধে। খালের পাড়ে উত্তর ভিটায় দোচালা টিনের ঘর।

সুবাস এসেছে বলে গ্রামের মানুষ তাদের বাঁকা চোখে দেখে। ভূমিহীন যারা এক দেশ থেকে আরেক দেশে আশ্রয় নেয় তাদেরই এদেশে সুবাস বলে। এরা ছিন্নমূল, এরা সরকারের খাসজমিতে বসত গড়ে। তাদের সমাজে কোনো দাম নেই। তারা শেকড়হীন, সমাজের চোখে আগাছার ন্যায়।

মতির নানাদের ঘর হতে যৌবন হারানো মুলিবাঁশের বেড়ার ফাঁক দিয়ে খালের নৌকাগুলো সহজেই ঠাওর করা যায়। জানালাবিহীন বেড়ার এই জীর্ণ ছিদ্র দিয়ে ভাসমান জীবনের আঁচ খালপাড়ের জীবনের সমান্তরাল বহমানতাই নির্দেশ করে।

এই ঘরে থাকে নানা-নানি আর জানু খালা। নানা ফজর আলীর দুই মেয়ে। কোন ছেলে সন্তান নেই। মতির মা বড়।

“কি রে? আইজগাও বড়হাটে গেলি?” জানুখালা বড়শির সুতা গুটাতে গুটাতে জিজ্ঞেস করে।

খালা-বোনপো মিলে ঘরের পেছনে খালপাড়ে প্রায় বড়শি দিয়ে মাছ ধরে। আজ অবশ্য জানু একাই মাছ ধরছে।

মতি ভালো-খারাপ কিছুই বলে না। ক্ষিধেয় তার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। মতি ভাবছে কোন ঘরে ঢুকলে খাওয়া পাবে। নানিদের ঘরে ঢুকবে না নিজেদের ঘরে।

নিজেদের ঘর বলতে নানাদের রসুই ঘরটাতে তারা মা-ছেলে পঙ্গু বাবাসহ মাথা গুঁজে থাকে। নিজের ঘরে ঢুকে খাওয়া খেলে বিপদ আছে। মায়ের হাতে মার খাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে সে নানিদের ঘরে ঢুকলো।

লুঙ্গির কোঁচের ভাতের চাল আর কাঁকরোল একটা বাঁশের ডালায় রাখলো। পরে এগুলো তাদের ঘরে নিয়ে যাবে।

নানা-নানি দুজনেই ভিক্ষা করে। নানির নাম কৈতরি। এ বাড়িতে ভিক্ষা শব্দটা উচ্চারিত হয় না। তারা বলে হাঁটতে বের হয়।

প্রায় দিনই নানা-নানি শরীর খারাপ থাকার কারণে হাঁটতে বের হতে পারে না। তবুও নানিদের ঘরে ঢুকলেই কিছু না কিছু খাবার পাওয়া যাবে।

মতির আশা পূর্ণ হলো। সত্যি সত্যি একটা টুকরিতে সামান্য কয়টা বাতাসা আর মুড়ির ঢোকের তলায় খানিক মুড়ি পড়ে আছে। পড়িমড়ি করে সে খাওয়া শুরু করলো।

বাতাসা দিয়ে মুড়ি খাওয়ার ঢং দেখেই বোঝা যাচ্ছে মতি খাওয়ার স্বাদে মজেছে। মতি ভাবছে, কোথা থেকে জানুখালারা বাতাসা পেলো কে জানে! অবশ্য তার নানি হাঁটতে বের হলে মসজিদে দেওয়া শিরনি-বাতাসা যা পায় তা বাড়িতে নিয়ে আসে। আর এসব মেগে আনা খাবারের বেশিরভাগ মতির পেটেই ঢুকে।

ঘরের পাশে জানুরা ছোট একচালা আরেকটা রশুই ঘর তুলেছে। চালার নিচে জানু বড়শিতে পাওয়া মাছ কুটছে।

“খালা, নানায় কই? নানীওতো ঘরে নাই।”

“একজনে আঁটতো গেছে, আরেকজনে গেছে হুবের বাইত।”

“মাছডি কি অনে রাঁইন্ধা হালাইবেন?”

“ছাই কিত্তাম হারি! না রাঁনলে খাইবো কি?”
“আঁরে ও¹া হুঁডিমাছ দিবেননি রাইত্তার ভাত খাইতাম।”

“আইছ।”

জানু পুঁটির তেলে পুঁটি ভাজে। চুলায় এক-দুইটা লাকড়ি দেয় মতি। আগুনের তেজ বাড়ে। লালচে আলোয় মতির চোখ আরো ঝিলিক মারে। পুঁটির তেলের ঘ্রাণ শুঁকে।

জানু মুচকি হেসে বলে, “কিরে? কড়কড়া হুডি মাছ খাওনের লাইনি তোর এতো চুলার ধারে বইয়া থাওন!”

মতিও হাসে। খালা-বোনপো চুলার কাছে থাকতে থাকতে বাড়ির সব লোকজন এসে হাজির।

জানু গলা উঁচিয়ে দেখে আশেপাশে কেউ আছে কি না। ফিসফিসিয়ে বলে, “আইজগা দেহা অইছেনি তোর হোছন মামুর লগে?”

মতির মুখ ভার, অপরাধবোধ চোখে-মুখে।

জানু গলা চড়িয়ে আবারো জিজ্ঞেস করে, “অ পোলা কতা কছনা ক্যা? জিনিসডা দিছোতনি?”

“এক্কারে খালা মনো নাই! তয় হোছন মামুরে দেখছি রিক্সার সিডো বইয়া বিরি টানে।”

“হর শয়তান! ইয়ানো হুঁডি খাওনের লাই বইয়া রইছোত। আইজগা তোর খানা নাই!”

মতি কিছুক্ষণ দম ধরে থাকে। তারপর অভিভাবকসুলভ স্বরে বলে, “খালা একটা কতা কই?”

জানু সাড়া দেয় না। মতির ওপর রাগে ফেটে পড়ছে। কত কষ্ট করে সে একটা রুমালে ফুল তুলেছে। টাকা জমিয়ে জমিয়ে রুমালে ফুল তোলার চাকতি, সুঁই, রঙিন সুতা এসব কিনেছে।
সব কিছু কেনার পর ভেজাল লাগলো রুমালে পেন্সিল দিয়ে ফুল আঁকা নিয়ে। অবশেষে কুদ্দুসের বউ নূরি তার রুমালে ফুল এঁকে দেয়।

এ রুমাল জানুর ভালোবাসার মানুষ হোছনের জন্য। এখনো রুমালটা হোছনকে দেওয়া হয়নি বলে মতির ওপর জানুর এতো ক্ষোভ!

হোছন রিকশা চালায়। হোচ্চার খালের পাড়ে তাদের চৌচালা ঘর। জমি-জিরোত বাপ-ছেলে দেখাশোনা করে বটে তবে ফাঁকে ফাঁকে হোছন রিকশা চালিয়ে বাড়তি আয় করে।

“ও খালা, একটা কতা কই?” মতি জোর দিয়ে খালার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।

এবারও জানু চুপ। মতি জানুর রাগ টের পায়।

তারপরেও সে বলে, “খালা, হোছন মামু জানি কেমন! খালি দেমাক দেহায়।”

“তুই আঁর চোখের সামনেততোন হর। তোরে অন চেলি দিয়া একটা বাড়ি দিয়াম।”

একথা বলে সে মতির দিকে তরকারি নাড়ার কাঠি উঠালো।

মতি মুচকি হেসে বলে উঠলো, “ওরে আঁই এতোক্কণ হুদা কতা কইছি! আসলে হোছন মামুরে রুমাল কোনকালে দিয়া দিছি। আন্নেরে কেবল হোক খাওয়াইছি।”

ধপাস করে জানুর ভেতর থেকে ভারী কি যেন নেমে গেল। পুলকিত দুটো হাতে খোঁপা ঠিক করে নিলো সে। বানদুয়ার গুছাতে লাগলো তড়িঘড়ি। চুলার নিভু নিভু আলো জানুর চেহারায় এক অপার্থিব আলপনা এঁকে দিলো।

খালপাড়ের দিক থেকে আসছে অজানা পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দ। জানু ভাবে, পাখিটা ডানা ঝাপটিয়ে কার কাছে যায়!

এমন সময় বড় বোন হতির বকাবকি কানে এলো।

হতি এক নাগাড়ে মৃদু চিৎকার করে চলেছে, “ও মতি, এমি আয়ছোন! মরার ঘানি একলা আর কতো টানতাম! দামড়া পোলা বাপের কাছ থাইকা কেল হইরা থাকবো।”

বোনের রাগান্বিত কন্ঠ শুনে জানু মতিকে তাগাদা দেয় মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য। মতি তাড়াহুড়োয় নিজেদের ঘরের দিকে এগুলো। প্রতিদিন তার মা হতি সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরেই মতির অসুস্থ বাবা আকবরের ওপর একচোট লয়।

ফজর আলীর মেয়ে হতির শরীরের বান ভালো। গায়ের রঙ ময়লা। তবুও হতির মধ্যে একটা লাবণ্য আছে। তাকে গ্রামের লোকজন মিলে আকবরের সাথে বিয়ে দেয়। আকবরের বাবা-মা, ভাই-বোন কেউ নেই। গ্রামে বদলা-কামলা খেটে রোজগার করতো। হতিও অন্যের বাড়িতে কাজকর্ম করে যাই পেতো তা দিয়ে কোনোমতে দুই পেট চলতো।

বছরবাদে মতি এলো সংসারে। আকবর সংসার ঠিক রাখার জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম করতো। যে পরিমাণ পরিশ্রম সে করতো সে পরিমাণ খাওয়া শরীরকে দিতে পারতো না।

মতি হওয়ার বছর খানিকের মাথায় আকবর একদিন ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে ঘুরে পড়ে যায়। এরপর থেকে পঙ্গু আকবর আজ অবধি বিছানায়।

মতি গ্রামের লোকদের কাছ থেকে আকারে-ইঙ্গিতে নিজের বাবা-মা সম্পর্কে নানা রকম কথা শুনে। মতির বাবা ভীষণ বদমেজাজি। এদিকে মায়ের কথাবার্তাও মারাত্মক টনটনে। তর্কাতর্কি-মারামারি ছিল এবাড়িতে নৈমিত্তিক ব্যাপার।

মতি বাবার দিকে তাকায়। শুয়ে থাকতে থাকতে মানুষটির পিঠে ঘা হয়ে গেছে। দেহের অপাচ্য অংশ বিছানায় ত্যাগ করে।

এখানে অভাবের শেকড় এতো গভীরে যে শত পরিশ্রম আর পরিচ্ছন্নতার কোনোটাতেই মানুষগুলোর লড়াই শেষ হয় না।

হতি আবারো গজগজ করে, “আল্লায় আঁরে এই আজাবতোন নেয় না। আর কত কাঁচাইতাম! কত চেঁচাইতাম! আল্লাায় এক কিনার করে না কিল্লাই আঁরে।”

হতি নাকে মুখে গামছা বাঁধে। আকবরের বিছানার ময়লা পরিষ্কার করতে প্রত্যেক সময় হতি এই পদ্ধতি অবলম্বন করে। প্রচণ্ড দুর্গন্ধ থেকে রেহাই পেতে হলে এছাড়া উপায় নেই।

মতি নাক চেপে বসে আছে। হতির ক্ষোভ এসে পড়লো মতির ওপর “খোদার কাডা! জমিদারের মতো বইয়া রইছোত! খালেরতোন আরেক বালতি হানি আন।”

মতি বসা থেকে ওঠে। নাক চেপে বালতি হাতে খালের দিকে পা বাড়ায়। চেহারায় অনিশ্চয়তার রেখা। বুঝ হওয়ার পর থেকে মতি বাপের এই অবস্থা দেখে আসছে।

আকবরকে সকাল-সন্ধ্যায় দুই বেলাই হতি পরিষ্কার করে। যত পরিষ্কারই করুক ব্যাধির গন্ধ বড় উৎকট! এ বাড়ির আনাচে-কানাচে প্রতিটি জিনিস থেকে যেন আকবরের ব্যাধির গন্ধ বেরোয়। পারত পক্ষে কেউ আকবরের কাছে ঘেঁষে না। (চলবে)

এইচআর/এএসএম

ফজর আলীর মেয়ে হতির শরীরের বান ভালো। গায়ের রঙ ময়লা। তবুও হতির মধ্যে একটা লাবণ্য আছে। তাকে গ্রামের লোকজন মিলে আকবরের সাথে বিয়ে দেয়। আকবরের বাবা-মা, ভাই-বোন কেউ নেই। গ্রামে বদলা-কামলা খেটে রোজগার করতো। হতিও অন্যের বাড়িতে কাজকর্ম করে যা-ই পেতো তা দিয়ে কোনোমতে দুই পেট চলতো

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।