মুনীর আহমেদ সাহাবুদ্দীনের দুটি কবিতা
একবার বলে দেখো
নদী ভালোবাসবে না আমাকে?
কী করবো বলো?
এখনো যে শুধু ভালোবাসতেই ইচ্ছে করে না,
ইচ্ছে করে পাহাড়-পর্বত ডিঙিয়ে তোমাকে একহাত দেখাই,
আমি পুরোনো হইনি!
আমার মুখের বলিরেখা দেখে যদি জানতে চাও, এখন কত সময়?
আমার আফসোসই হবে আমার জবাব।
আমি দুঃখিত নদী, আমার বন্ধ ঘড়ির সময়-অসময় নেই।
সেই কোনো একদিন তোমাকে ছুঁতে চেয়েও পারিনি।
আজ যদি তোমাকে আমার বুকে চেপে ধরে বলি,
‘আমি তোমার বীরপুরুষ, চলো আমার সাথে।’
হ্যালো মেয়ে, বিশ্বাস করবে আমার কথা?
আমার সাথে পথ হাঁটবে বাকি জীবন?
আমার ঘড়িতে এখনো নব্বই শুরু হয়নি।
একবার তোমার হাত ধরতে বলে দেখো,
আমি তোমাকে বলে দিচ্ছি,
সেই দিন প্রবল ভূমিকম্প হবে মাটিতে,
বিদীর্ণ হুঙ্কারে মুহুর্মুহু গর্জে উঠবে দিগ্বিদিক,
প্রলয়ংকরী ঝড়ে মেতে উঠবে পশ্চিমা আকাশ,
মৃত পাহাড় এক ফুৎকারে হঠাৎ জ্বলে উঠবে,
শুরু হবে প্রলয় বাসনার উদ্গীরণ।
লাভাস্রোত ছড়িয়ে পড়বে গ্রামের পর গ্রাম।
বুভুক্ষ দাবানল গ্রাস করবে একটার পর একটা বনাঞ্চল।
আমি তোমার হাত ধরার জবাবের চেয়ে আরও বেশি দিতে পারবো!
পাগলী মেয়ে, ভয় পেয়ো না।
আমার পথ চলার জন্য
তোমাকে শুধু একাই প্রয়োজন।
****
অধরা
ফেরার পথে থামবো ক্ষণিক
দেখবো তাহার বাড়ি।
চাঁদজোসনা, মহুয়া বন,
বৃক্ষ সারি সারি।
থামবো বারেক, কইবো কথা,
মন নিয়েছে কাড়ি,
ওইপারে যে আছে তাহার
স্বপন বসতবাড়ি।
পথ যেখানে শেষ হয়েছে
শাল মহুয়ার বনে
পানকৌড়ি, শীতল দিঘী
পড়ে কি তাহার মনে?
ফিরতি পথে কমতি সময়
হিসেব কষে দেখি
সোনার বালা, রুপোর নূপুর
পাওনা তাহার বাকি।
এক পশলা বৃষ্টি মাখি
সোনার বিকাল বেলা,
শান্ত নদী, ছোট্ট নাও
ওই পারেতে মেলা।
ছোট্ট চিঠি হাতে আমার
তাহার বুকের ব্যাথা
বৃষ্টিফোঁটা জলের কণা
কইবে তাহার কথা।
ওইপারেতে গিয়ে আবার
শুনবো তাহার কথা।
চলে যাব জানতে পেলে
আর নিও না সামলে,
আকাশ হয়ে বুকে তোমার
চেপে রেখো আগলে।
উদাম হাওয়ায়,
বৃষ্টি ফোঁটায়,
ফিসফিসিয়ে শুনবো আবার
‘ফিরে এসো’ বললে।
এসইউ/এএসএম