নদীর আত্মকথন এবং কলম উপজাতি
নদীর আত্মকথন
আমি নদী
আমি তোমার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হই
প্রতিটি ফাটল, প্রতিটি ছোট-বড় উন্নয়নে
আমি গভীরভাবে মিশে যাই।
আমি বন্য, আমি নির্ঝর
কিন্তু কেউ দেখে না আমি কোথা থেকে এসেছি।
আমি উচ্চশৃঙ্গের কন্যা
আমি নুড়ি-ছড়ানো-পথ মাড়িয়ে বয়ে বয়ে যাই
তবুও আমি সমৃদ্ধ পলি রেখে যাই।
আমার খোঁজ রাখে না কেউ
বমি করলেই আমাকে নিয়ে আলোচনা হয়
আমার অসুখটি নিয়ে হইচই হয়।
কিন্তু কেউ দেখে না সেই অস্থিরতা, সেই নির্জন রাতগুলো
কেউ দেখে না আমাকে কীভাবে চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে যেতে হয়
কেউ দেখে না
কেউ দেখে না...
একদিন যখন আমি আমার যাত্রার শেষে পৌঁছাই
নিঃশব্দে, কোনো এক চাঁদের আলো মেখে
সমুদ্রের আঙিনায় প্রাণীদের নাচ দেখি—
আমি নদী, এখানেই চিরস্থায়ী আবাস খুঁজি।
****
কলম উপজাতি
আমি কলম নামের এক উপজাতির সদস্য
সব দেশেই আমাদের সদস্য রয়েছে
তবুও কম-বেশি আমরা সবাই অবহেলিত
তবে গাঙ্গেয় দ্বীপের সদস্যদের কষ্টটা বেশি
কিছু কারণ আমাদের সৃষ্টি
কিছু কারণ অবহেলা থেকে বা কিছু কারণ গায়েবানা সৃষ্টি।
আমাদের বেশ কিছু সদস্যের কার্যকলাপে সারমেয়’র কথা মনে হয়
এখানে প্রভুদের কোনো দোষ নেই—
গুড়ের দোষ—সামান্য গুড় আটকায় তাদের।
কিছু সদস্য আছে পেটশূন্য—ফুলিয়ে রাখে শুধু
কিছু সদস্য খুবই নিরীহ—এদের কষ্টটা বেশি
তবে এরা রং পরিবর্তন না-করেই ভবিষ্যতে টিকে থাকার সদস্য।
ভারিক্কি ভারিক্কি কাজে আমাদের কারো কারো ডাক পড়ে
প্রয়োজেনের সময় কাছে ডাকেন কেউ কেউ
কিছু বলি আমরা, কিছু শুনি তাদের
পরে দেখি আমাদের বলাটায় শিকে ছিঁড়েনি!
পরে এও শুনি ‘কাকের মাংস কাকে খায়’।
আমরা খাবি খাই, টিকে থাকি
ডারউইনের যোগ্যতা নিয়ে নয়,
তেল-মালিশে বেঁচে থাকি
মরি—নিজেরাই মারামারি করি
টিকে থাকি তেলাপোকার মতো যুগে যুগে।
এসইউ/এএসএম