মায়াবতী: পর্ব ৩৬

মোহিত কামাল মোহিত কামাল , কথাসাহিত্যিক, মনোচিকিৎসক
প্রকাশিত: ১২:৫৪ পিএম, ০১ এপ্রিল ২০২২

কথাসাহিত্যিক মোহিত কামালের মায়াবতী বাংলা সাহিত্যে দ্বিতীয় মনোবৈজ্ঞানিক উপন্যাস। সাহিত্যের শব্দবিন্যাসে তিনি ব্যবহার করেছেন মনস্তত্ত্ব, সমাজের আড়ালের চিত্র। মা প্রত্যক্ষ করেছেন, মেয়েরা নানাভাবে উৎপীড়ন ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়, সহজে মুগ্ধ হয়ে অবিশ্বাস্য পাতানো ফাঁদে পা দেয়। মায়ের একান্ত চাওয়া মেয়ে ক্যারিয়ার গড়ে তুলুক। বিধিনিষেধ আরোপ করেন মা। মেয়ে তখন মনে করে, মা স্বাধীনতা দিতে চায় না, বিশ্বাস করে না তাকে। মায়ের অবস্থানে মা ভাবছেন তিনি ঠিক। মেয়ের অবস্থানে মেয়ে ভাবছে, সে ঠিক। মায়ের ‘ঠিক’ এবং মেয়ের ‘ঠিক’র মাঝে সংঘাত বাধে। সংঘাত থেকে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়, ভুল করে বসে মেয়ে রিয়া। পালিয়ে যায় ঘর থেকে। এই ‘ভুল’ই হচ্ছে উপন্যাসের মূলধারা, মূলস্রোত। মায়াবতী পড়ে চিন্তনের বুননে ইতিবাচক গিঁট দেয়ার কৌশল শেখার আলোয় পাঠক-মন আলোকিত হবে। জানা যাবে টিনএজ সমস্যা মোকাবিলার কৌশল। জাগো নিউজের পাঠকের জন্য ধারাবাহিক প্রকাশিত হচ্ছে সাড়া জাগানো উপন্যাসটি—

পয়ত্রিশ.
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ভবনের চারতলায় রয়েছে লাইব্রেরি। লাইব্রেরির পাশেই আছে ‘স্টুডেন্টস রিডিং রুম’। এ বিরাট কক্ষে আছে অসংখ্য ছোট ছোট খোপ। প্রতি খোপে আছে একটা টেবিল, টেবিলের ওপর বই রাখার তাক এবং একটা চেয়ার। কাঠের পার্টিশনের কারণে এক চেয়ারের পড়ুয়াকে অন্য খোপ থেকে দেখা যায় না।

রিয়া উত্তর-পশ্চিম কোণে এক খোপে বসে পড়ছে।
এ সময় তাবিন্দা এসে রিয়াকে খোঁচা দিয়ে বলল, কনগ্র্যাচুলেশন!
তাবিন্দা আর রিয়া ব্যাচমেট, পার্টনারশিপ করে একসঙ্গে পড়ে। রিয়া চোখ তুলে তাকিয়ে প্রশ্ন করল, কেন? কনগ্র্যাচুলেশন কেন জানাচ্ছিস?
কার্ড ফাইনালে তুই হায়েস্ট পেয়েছিস।
রিয়া খুশি হয়। উচ্ছসিত হলো না। সব আইটেম পরীক্ষায় এক্সিলেন্ট রেজাল্ট না পেলেও, কার্ডে ভালো করেছে শুনে আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল ওর।

বাপিকে ফোন করে রিয়া।
ইমরুল চৌধুরি ফোন রিসিভ করে বললেন, মামণি, ভালো আছো?
রিয়া বলল, বাপি, অ্যানাটমিতে একটা কার্ড ফাইনালে আমি হায়েস্ট পেয়েছি।
ইমরুল চৌধুরি খুশি হয়ে গেল। খুশি হয়ে জানতে চান, কার্ড ফাইনাল কী?
পুরো দেহকে ছয়টা কার্ডে ভাগ করা আছে। প্রতিটা কার্ডে থাকে ছোট ছোট আইটেম পরীক্ষা। সব আইটেম পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে পুরো কার্ডের ওপর একসঙ্গে পরীক্ষা হয়। এটাকে কার্ড কমপ্লিশন ফাইনাল বলে।
ওঃ! ইমরুল চৌধুরি বুঝেছেন। মেয়ের সাফল্যের আনন্দের ভাগ পেয়ে গেছেন তিনি। এ আনন্দ মিসেস চৌধুরিকেও জানিয়ে দিলেন।

তাবিন্দা বলল, তোর একটা পরিচিত রোগী মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে। তোকে খুঁজছে। মেডিসিন ইউনিট টু-এর এক ইন্টার্নি ডাক্তার ভাইয়া মেসেজ দিয়েছেন আমাদের ব্যাচমেট রুশোকে। রুশো তোকে না পেয়ে আমাকে জানিয়ে গেছে।
রিয়া অবাক হয়ে জানতে চায়, আমার পরিচিত?
হ্যাঁ। রুশো তাই তো বলল।
চল তো। দেখে আসি। বলতে বলতে রিয়া টেবিল ছেড়ে ওঠে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের হাসপাতাল বিল্ডিং বিশাল বড়ো। এখনো সবকিছু চেনা হয়ে ওঠেনি। ওরা পড়াশোনা করে কলেজ ভবনে। তৃতীয় বর্ষ থেকে ক্লিনিক্যাল ক্লাস শুরু হলে হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক হয়। রোগী দেখতে হয়। ক্লিনিক্যাল ক্লাস অ্যাটেন্ড করতে হয় ওয়ার্ডে।
সব ওয়ার্ড না চিনলেও খোঁজ করে ‘মেডিসিন ইউনিট টু’ খুঁজে পেতে অসুবিধে হলো না ওদের।
বিরাট ওয়ার্ড। রোগীতে টালমাটাল অবস্থা। বেড খালি নেই। অনেকে বেড পায়নি। ফ্লোরের খালি স্পেসে বেডশিট ও বালিশ দিয়ে জায়গা দেওয়া হয়েছে। কোথাও তিল ধারণের জায়গা নেই। নার্সরা ছুটোছুটি করছে। হিমশিম খাচ্ছে তারা।
কে তার পরিচিত রোগী? কীভাবে খুঁজবে? কাকে জিজ্ঞাসা করবে?
ওয়ার্ডের পশ্চিম মাথায় ডাক্তারদের বসার জায়গা। বসার জায়গা খালি। পূর্বদিকে ডাক্তার আর স্টুডেন্টদের জটলা দেখা যাচ্ছে। ওয়ার্ডের প্রফেসর রাউন্ডে আছেন এখন। এ সময় কারো ওয়ার্ডের ভেতর ঢোকা নিষেধ।
রিয়া এবং তাবিন্দার বুক দুরুদুরু করে ওঠে।
তাবিন্দা বলল, এখন চল।
রিয়া বলল, দেখি। খুঁজে দেখি, পাই কি না।
এ সময় ডাক্তারদের জটলা থেকে একজন বেরিয়ে রিয়াদের দিকে এগিয়ে এসে প্রশ্ন করল, তোমরা কি প্রথম বর্ষের?
জি।
রিয়া কে?
আমি। বলেই রিয়া এগিয়ে গেল।
এসো। তোমাকে এক রোগী বেশ আকুল হয়ে খোঁজ করছে।
ডাক্তার ভাইয়ার পিছু পিছু এগিয়ে গেল রিয়া, তাবিন্দাও। ডাক্তারের বুকে নেমপ্লেট লাগানো আছে, ডা. সৌভিক।
অর্ক, দেখো। রিয়া এসেছে তোমাকে দেখতে। ডা. সৌভিক ৪৭ নম্বর বেডের কাছে এসে রোগীর মুখের ওপর থেকে কাপড় টেনে নিয়ে রিয়ার দিকে আঙুল তুলে দেখাল।

রিয়া রোগীর মুখ দেখে। এক তরুণ শুয়ে আছে। ডা. সৌভিক বলেছে তরুণটির নাম অর্ক। অর্ক অর্থ সূর্য। সূর্য উদিত হচ্ছে না। রিয়ার মনে হলো অস্তগামী সূর্যের দিকে তাকিয়ে আছে সে। সূর্য অস্ত যাচ্ছে।
রিয়া কাছে এসে দাঁড়াল। নরম কণ্ঠে জানতে চায়, আপনি আমাকে চেনেন?
অর্ক জবাব দিলো না। চরম অসুস্থতার মাঝেও তার চোখ আনন্দে চিকচিক করে উঠল। মুখে কথা ফুটল না। মাথা দুলিয়ে চোখ নাচিয়ে সে জবাব দিলো, চিনি।
ডা. সৌভিক চলে গেছেন রাউন্ডে। প্রফেসরের পিছু পিছু হাঁটছেন। নইলে জিজ্ঞাসা করা যেত কী রোগ হয়েছে, কী অবস্থা।
রিয়া একবার বলতে যাচ্ছিল, সরি, আমি আপনাকে চিনতে পারছি না। বলল না, ভেতর থেকে কথাটা থামিয়ে দিলো ও। চেনা চেনা লাগছে। চিনি না বললে কষ্ট পেতে পারেন, রোগীকে কষ্ট দিতে চায় না ও।
রিয়া জানতে চায়, আপনার কি খুব কষ্ট হচ্ছে?
ক্ষীণ গলায় অর্ক বলল, কষ্ট হচ্ছিল। এখন হচ্ছে না। এখন ভালো লাগছে।
আমি আপনার কী উপকার করতে পারি?
আমি বাঁচতে চাই, আমাকে বাঁচান। ডাক্তাররা বলেছে আমার অবস্থা খারাপ। লিভার নষ্ট হয়ে গেছে। আমি বাঁচতে চাই।
অসহায়ভাবে তাবিন্দার দিকে তাকাল রিয়া। পরিচয় করিয়ে দেয়, ওর নাম তাবিন্দা, আমার ফ্রেন্ড, একসঙ্গে পড়ি আমরা।
অর্ক কৃতজ্ঞতায় মাথা নোয়ায়।
তাবিন্দা বলল, আমরা তো মেডিক্যালের প্রথম বর্ষে পড়ি। আমাদের দ্বারা তো আপনার বেশি উপকার হবে না।
তাবিন্দার মুখ থেকে চোখ ফিরিয়ে অর্ক তাকাল রিয়ার মুখের দিকে। বেশ প্রত্যয়ের সঙ্গে বলল, আপনি রিয়া, ইচ্ছা করলে আমাকে বাঁচাতে পারেন।
রিয়া বলল, আপনার আর কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই।
আছে?
তারা কোনো হেল্প করছে না?
করছে।
তাহলে আমার উপকার চাইছেন কেন? আমি কীভাবে বাঁচাব আপনাকে।
মনে হয়েছে, জান দিয়ে আপনি আমার উপকার করবেন?
কপালের ভুরু ভাঁজ করে রিয়া প্রশ্ন করল, আপনার এমন মনে হচ্ছে কেন?
কারণ আমি আপনার জান বাঁচিয়েছিলাম, সম্মান বাঁচিয়েছিলাম? মান-সম্মান বাঁচাতে ভূমিকা রেখেছিলাম।

ভূকম্পন ঘটে গেল রিয়ার দেহে। কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে চেতনার দেওয়াল নড়ে উঠল। বর্তমান নড়ে উঠল। অতীতের বিধ্বস্ত মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে সন্ত্রাসীদের চিৎকার, কাপড় খোল।
রিয়ার নরম গলা মুহূর্তে শক্ত হয়ে ওঠে। হাতের মুঠি শক্ত হয়ে ওঠে। দেহের পেশিতে গিঁট বসে যায়। চোখ থেকে ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চায় অগ্নিলাভা।
নিজেকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রেখে রিয়া প্রশ্ন করল, আমার জান বাঁচাতে কী করেছিলেন, মান-সম্মান বাঁচাতে কী ভূমিকা রেখেছিলেন?
অর্ক নরম চোখে তাকাল তাবিন্দার দিকে। ক্ষীণকণ্ঠে বলল, আপনি একটু বাইরে যাবেন, প্লিজ!
রিয়া বলল, থাক। তাবিন্দা তুই থাকলে অসুবিধে নেই।
অর্ক বলল, আমি রিকোয়েস্ট করছি। প্লিজ, আপনি বাইরে যান।
তাবিন্দা বাইরে চলে আসে। অর্ক অন্য কারোর সামনে এমন কোনো প্রসঙ্গ তুলতে চায় না যাতে রিয়ার সম্মানহানি হতে পারে।
রিয়া বলল, বলেন। কী ভূমিকা রেখেছিলেন?
অর্ক নরম গলায় বলল, আপনি যেন উদ্ধার পেতে পারেন সেই ব্যবস্থাটা করেছিলাম।
রিয়া আবার বলে, কী করেছিলেন খোলামেলা বলেন।

আমার মোবাইল ফোনসেট কৌশলে রুমে রেখে গিয়েছিলাম। ওই মোবাইল ব্যবহার করে আপনি বাসার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছিলেন। ভীষণ ঝুঁকি মাথায় নিয়ে কাজটা করেছিলাম আমি। পুলিশে ধরা পড়ার ভয় মাথায় রেখেও আপনার ভালো চেয়েছিলাম। গ্রুপের সবার সঙ্গে বিট্রে করেছিলাম। ক্যামেরার রিল নষ্ট করে দিয়েছিলাম।
দপ করে নিভে গেল রিয়া। আগুনে পানি পড়েছে। ওর গলা নরম হয়ে গেল। মুঠি নরম হয়ে গেল। পেশির গিঁট শিথিল হতে লাগল। চাউনি স্বাভাবিক হয়ে গেল।
রিয়া বলল, ওঃ! উপকার করে বিনিময়ে উপকার চাইছেন? উপকার পাওয়ার লোভে উপকার করেছিলেন?
অর্কর মন খারাপ হলো না। সব কথা বলতে পেরে ওর মন হালকা হয়ে গেছে। মনের চাপ কমে গেছে। সহজ হয়ে ও বলল, না। উপকারের লোভে উপকার করিনি। যা করেছিলাম আপনাকে ভালো লাগার কারণে করেছিলাম। মনে হয়েছিল, আপনার সম্মান লুণ্ঠন হতে দেওয়া যায় না। সেই তাগিদ থেকে করেছিলাম।
আমি আপনার কী উপকার করতে পারি? আবারও জানতে চায় রিয়া।
শুনেছি, আপনার একজন ঘনিষ্ঠ মনোচিকিৎসক, মাদক চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ আছেন। তার মাধ্যমে আমাকে সুস্থ করে তোলার জন্য আপনি ভূমিকা রাখতে পারেন। আমার জীবন ফিরে পেতে সাহায্য করতে পারেন।
রিয়ার মন গলে গেল। রেজা মামার কথা মনে পড়ল। মামা বলেছিলেন, আমাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর প্রয়োজন নাই। কৃতজ্ঞতা জানালে যেন সে-ই ছেলেটাকে জানিয়ো, যে তোমার উদ্ধারের পথ খুলে দিয়েছিল।
এই সে-ই ছেলে। এই ছেলে এখন নিজের সামনে অসহায়ভাবে শুয়ে আছে। এই ছেলে সাহায্য চাইছে। খুব জটিল অবস্থায় বাঁচার জন্য প্রেরণা খুঁজছে!
রিয়া কৃতঘ্ন না। কৃতজ্ঞ। উপকারীর উপকার করতে জানে। উপকার করতে পিছপা হবে না ও।

প্রথমে সেলফোনে কল করে ও রেজা মামাকে। মামাকে খবরটা দেওয়া উচিত। মোবাইল ক্যান নট বি রিচড।
রিয়া নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে। বারবার চেষ্টা করে ফেল করে।
অর্কর দিকে তাকিয়ে বলল, আপনি আশ্বস্ত হোন। আপনার জীবন ফিরে পেতে আমার সহযোগিতার ঘাটতি হবে না। আজ আমি আসছি।
এগিয়ে যাচ্ছিল রিয়া।
অর্ক ডাক দেয়, শুনুন।
রিয়া ফিরে আসে কাছে।
আপনার বান্ধবী তাবিন্দাকে চলে যেতে বলেছি। মনে হয়েছে আপনার অতীতটা এখানে কারো না-জানাই ভালো। আপনার সম্মান যেন এখানে না-হারায়। এজন্যই উনাকে চলে যেতে বলেছি। এজন্য আমি সরি।
রিয়া এবার ভালো করে তাকাল অর্কর দিকে।
হ্যাঁ। ছেলেটার চোখের ভাষা পড়তে পেরেছে। এই ছেলে তার ভালো চায়। মঙ্গল চায়। সন্দেহ নাই।
রিয়া বলল, আমি আসি এখন। আপনার চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করছি। মনে সাহস রাখুন।
চলে যাচ্ছিল রিয়া।
অর্ক আবার ডাকে।
আরেকটু শুনবেন? খুব দুর্বল ডাক। খুব মায়াবী ডাক।
রিয়া আবার ফিরে আসে।
অর্ক বলল, ডাক্তারদের কথা আমি শুনেছি। উনারা বলেছেন, আমার লিভার শেষ হয়ে গেছে। লিভার এনজাইম এসজিপিটি সাতশ ছাড়িয়ে গেছে। আমি বোধ হয় বাঁচব না। আমার বাঁচার আশা শেষ হয়ে গেছে।
না। এ কথা বলবেন না। আপনি অবশ্যই বাঁচবেন।
আমার কপালে একটু হাত রাখবেন। জ্বর জ্বর লাগছে। একটু দেখবেন।
রিয়া সংকুচিত হয়। হাত বাড়াতে ইচ্ছা করছে; বাড়াতে পারছে না।
অর্ক করুণ চোখে তাকাল। ওর চোখে মিনতি ঝরে পড়ে।
ওই চোখের দাবি অবজ্ঞা করতে পারল না রিয়া। আলতো হাত রাখল ছেলেটার কপালে।
অর্কর চোখ থেকে দরদর করে পানি নেমে আসে।
রিয়া দৃশ্যটা দেখে স্তব্ধ হয়ে গেল। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে চলে যাওয়ার জন্য ঘুরে দাঁড়াল।
অর্ক শেষবারের মতো ডাক দিলো।
আরেকটু শোনেন। একদম কোমল ডাক। নরম ডাক।
রিয়া চোখ তুলে তাকাল আবার।
অর্কর কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। তবুও বলছে, আপনাকে আমার কোনো উপকারের জন্য ডাকিনি, খোঁজ করিনি। মনে হচ্ছিল বাঁচব না আমি। মরার আগে আপনার মুখটা দেখতে ইচ্ছা হয়েছিল।
রিয়া ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে।
ছোট করে জবাব দিলো, আপনি বাঁচবেন। আপনাকে বাঁচতে হবে।

চলবে...

এসইউ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।