মহানন্দ জলদাস অথবা একটা নদী
জ্যৈষ্ঠের তীব্র গরমের বিকেলটাতে কোনো কাজ নেই হাতে। নামেই বিকেল! সূর্যের তেজ কমে এসেছে অনেকটাই। কমেনি হাঁসফাঁস করা গরমটা। এমন সময় ঘিয়ে রঙের ফতুয়া পরা গামছা কাঁধে এগিয়ে আসতে দেখি মহানন্দ কাকাকে। মহানন্দ জলদাস। শৈশবে আমি জেলে হতে চেয়েছিলাম মহানন্দ কাকার মতো। মাছের সাথে কাটিয়ে দিতে চেয়েছিলাম বাকি জীবন। গ্রামের খালপাড়ে আমাদের বাড়ি। জল আর মাছের নিকটতম প্রতিবেশী। শীতের সকালে মহানন্দ কাকা যখন জলের নিচে ডুব দিয়ে জাল ঠিক করতেন, কখনো গভীর জলের নিচ থেকে তুলে আনতেন শিং, শোল কিংবা মাঝারি সাইজের বোয়াল মাছ, জলের মাঝে আলোড়ন তুলে ভেসে উঠতেন সশব্দে—বিস্ময়ের সীমা থাকতো না আমার। আমারও ইচ্ছে হতো মহানন্দ কাকার মতো জেলে হতে! মহানন্দ কাকার ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা করবেন। বড় চাকরি করবেন। বৃত্ত ভাঙতে পারেননি কাকা। আমিও পারিনি। কাকারও পড়াশোনা হয়নি। আমারও জেলে হওয়া হয়নি। জলদাসের সন্তান মহানন্দ কাকা সৌখিন মৎস্যজীবী থেকে পেশাদার জেলে হয়েছেন। বাস্তবতার রূপান্তর ঘটেনি রূপকথায়।
আজ গ্রামের পথে, রাস্তার ধারে কত বছর পর দেখা মহানন্দ কাকার সঙ্গে। ঘড়িয়ার বিল থেকে আসছেন কাকা। হেঁটে আসছেন মহানন্দ জলদাস। তার পিছু পিছু ফিল্মের রিলের মতো একের পর এক স্মৃতি হাজির হচ্ছে। মহানন্দ কাকার বড় মেয়ে মালতি ছিল আমাদের থেকে কয়েক বছরের বড়। শ্যামলা রঙের মালতিদির ভাসা ভাসা দুটি চোখে সারাক্ষণ লেগে থাকতো রাজ্যের বিস্ময় ও বিষাদ। চোখের দিকে তাকালে মনে হতো কাজল পরে আছেন। মালতিদির ছোট ভাই মহন্ত পড়তো আমাদের সঙ্গে। প্রায়ই ওর সঙ্গে যেতাম মহানন্দ কাকার বাড়ি। দোচালা একটা টিনের ঘর। অপরপাশে একটি ছোট্টঘর—শনের ছাউনি। দুটো ঘরের মাঝে একটা ছোট্ট উঠান। উঠানের একপাশে রান্নার জায়গা। অপরপাশে একটা তুলসি মঞ্চ। উঠানটা ভেজা ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকতো সব সময়। কিন্তু তুলসী মঞ্চটা বরাবরই দেখেছি শুকনো খটখটে।
শনের ঘরটার গায়ে সব সময় হেলান দিয়ে থাকতো মহানন্দ কাকার মাছ ধরার জাল। যখনই যেতাম ওই বাড়িতে দেখতাম—নীরবে কাজ করে চলছেন মহানন্দ কাকার স্ত্রী, যাকে আমরা রেবতি মাসি বলে ডাকডাম। মহানন্দ জলদাসকে কাকা আর তার স্ত্রীকে কেন মাসি বলতাম, ভেবে দেখিনি কখনো। মহন্তদের বাড়ি গেলেই মালতি দিদি নারকেলের নাড়ু খেতে দিতেন, আর মিটিমিটি হাসতেন। নারকেলের নাড়ুর লোভে কতদিন ঘুরঘুর করেছি তাদের বাড়ির আশপাশে। বলা নেই, কওয়া নেই একদিন শুনি মালতি দিদি আর নেই। রেবতি মাসির ভাই তাকে নিয়ে গেছেন—বিহারে। সেখানে ভালো পাত্র দেখে তার বিয়ে হবে। মনে পড়ে খবরটা শোনার পর অকারণেই খুব মন খারাপ করেছিল আমার। সারাটা বিকেল বসে ছিলাম চিত্রার পাড়ে। জলের বয়ে যাওয়া দেখেছি। নদীর তলে পোঁতা বাঁশের ডগায় ফিঙের বসে থাকা দেখেছি। এক সময় টুপ করে সূর্যটা ডুবে গিয়ে গাঢ় কুয়াশা নামতে দেখেছি। তখন কোত্থকে রোকন ভাই এসে কোলে করে বাড়ি নিয়ে গেছেন আমায়।
এরপর কেটে কেটে গেছে অনেক সময়। ভুলেই গেছি মালতিদির কথা। বছর কয়েক পরে এক দুপুরে প্রবল কান্নার শব্দ শুনে ছুটে গেছি মহানন্দ কাকার বাড়ি। চিরকাল নীরবে কাজ করে যাওয়া রেবতি মাসিকে সেদিন দেখেছি আছাড়ি পিছাড়ি করে কাঁদতে। ঘরের বারান্দায় অপরাধীর মতো মুখ করে বসেছিলেন মহানন্দ কাকা। মহন্তকে দেখিনি কোথাও। রেবতি মাসির ভাই মালতি দিদিকে বিয়ের জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন বিহারে। সেখানে যার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল দিদির, সে ছিল ডাকাত। ততদিনে চার সন্তানের জননী মালতি দিদি। অনেক গঞ্জনার অবসান ঘটিয়েছেন একটি অশোক ডালে ঝুলে পড়ে। আমাদের এই চিত্রাপাড়ের মালতি কোথায় কোন বিহারে জীবনের জ্বালা জুড়িয়েছেন আত্মহত্যা করে। আহা রে জীবন! আহা রে কষ্ট! আহা রে মানুষ জীবন। সেদিনের সেই দুপুরেও আমি চলে গিয়েছিলাম চিত্রা নদীর পাড়ে। নীরবে বসে থাকার জন্য। তীরের একেবারে শেষ মাথার দিকে যেখানে ছিল মড়া পোড়ানোর শ্মশান—চুপচাপ মাথাগুঁজে সেখানটায় বসে থাকতে দেখেছিলাম মহন্তকে। কাছে যাওয়ার সাহস করিনি। নীরবে চলে আসি মহন্তকে একা থাকার সুযোগ করে দিয়ে।
মহন্ত খুব ভালো ছাত্র ছিল। অঙ্কে বরাবরই খুব ভালো করতো ও। মোস্তাফিজ স্যার ঠাট্টা করে বলতেন, ‘মহন্ত বেশি বেশি মাছ খায় তো, তাই ওর অঙ্কের মাথা খুব ভালো! তোরাও বেশি করে মাছ খাবি।’ তরতর একটার পর একটা ক্লাস ডিঙিয়ে সামনে যখন স্কুল ফাইনাল পরীক্ষা—হঠাৎ স্কুল বন্ধ করে দেয় মহন্ত। স্যাররা যেমন অবাক হন মহন্তের এই কাণ্ডে, তার চেয়ে বেশি অবাক হন মহানন্দ কাকা। কেন স্কুলে যায় না মহন্ত, কোনো কারণই বলতে পারে না কেউ। স্যারদের অনেক সাধ্য সাধনা, মহানন্দ কাকার অনেক অনুরোধ এবং এক পর্যায়ে চরম জেদাজেদির পরও যখন মহন্ত কিছুই বলে না, স্কুলেও যায় না; তখন সবাই ধরে নিয়েছে পড়াশোনা আর করবে না সে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ফরম ফিলআপের শেষদিনে স্কুলে হাজির হয় মহন্ত।
এরপরের সময়গুলো কাটে খুব দ্রুত। পরীক্ষার রেজাল্ট বের হলে দেখা যায়, সবার অনুমানের চেয়েও অনেক ভালো ফল করেছে মহন্ত জলদাস। আমাদের পাড়াগাঁয়ের স্কুল থেকে এই প্রথম কেউ বোর্ডস্ট্যান্ড করেছে। ছাত্রের নাম মহন্ত জলদাস। মালতি দিদিকে হারানোর পর একেবারেই মিইয়ে যাওয়া মহানন্দ কাকা এবং রেবতি মাসির মুখে এই প্রথম হাসি দেখলাম আমরা। পরীক্ষার ফল প্রকাশের কিছুদিন পর, তখনো কলেজে ভর্তি হইনি আমরা—সামনে পিছে বেশকিছু গাড়ির বহর নিয়ে একটি সবুজ রঙের জিপ এসে থামে মহানন্দ কাকার বাড়ির সামনে। উপজেলার পিয়ন রুস্তম ভাইকে দেখে আমরা বুঝতে পারি ইউএনও সাহেব এসেছেন মহন্তকে দেখতে। মহন্তদের বাড়ির সামনে খন্দকারদের পতিত জমিতে তাদের বসার ব্যবস্থা করা হয় তড়িঘড়ি দু’তিনটি চেয়ার জোগাড় করে। ইউএনও সাহেব এবং তার সঙ্গের লোকজন কিছুক্ষণ এটা-সেটা কথাবার্তা বলেন। মহন্তর কলেজে পড়ার সব খরচ জোগানোর ঘোষণা দেন ব্যক্তিগত তহবিল থেকে। সবশেষে হাসি হাসি মুখ করে বেশ কয়েকটা ছবি তোলেন মহন্তকে পাশে বসিয়ে। বোর্ডস্ট্যান্ড করা জেলেপুত্রের পাশে থাকার ঘোষণা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। পরের দিনের পত্রিকায় এমন একটা খবর ছাপা হলেও মহন্তর সঙ্গে ইউএনওর তোলা ছবিটা ছাপা হতে দেখিনি কোথাও।
ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পড়াশোনার খরচ জোগানোর ঘোষণা দেওয়ার কিছুদিন পর ইউএনও সাহেব বদলি হয়ে অন্য জায়গায় চলে গেলে খরচ নেওয়ার সুযোগই পায়নি মহন্ত। ইউএনও সাহেব হয়তো তার নতুন কর্মস্থলে বোর্ডস্ট্যান্ড করা নতুন কোনো ছাত্র পেয়ে থাকতে পারেন অথবা তার ব্যস্ততা আগের চেয়ে অনেক বেড়ে যেতে পারে। ফলে তিনিও মহন্তের কোনো খোঁজ রাখার সুযোগ আর পাননি।
এসবের ফাঁকে মহন্ত কলেজে ভর্তি হয়ে যায় এবং এবার বোর্ডস্ট্যান্ড না করতে পারলেও রেজাল্ট খুব খারাপ করে না। এবার মহন্তের শহরে পড়তে যাওয়ার পালা। মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে সে। ততদিনে মহানন্দ কাকার স্বাস্থ্য ভাঙতে শুরু করেছে। আর কমতে শুরু করেছে চিত্রা নদী এবং তার সঙ্গে শরীরের শিরা-উপশিরার মতো জড়িয়ে থাকা খাল-বিলের মাছ। তবুও অনড় মহানন্দ কাকা। পড়াশোনাটা নিজে করতে পারেননি কিন্তু ছেলেকে ডাক্তার বানাবেনই। বাড়ির পাশের নামায় চার গণ্ডা জমি ছিল মহানন্দ কাকার। যেখানে লাউ, কুমড়া, শিম, বরবটি ফলাতেন রেবতি মাসি। শীতের বিকেলে রোদের মধ্যে পিঠ মেলে বসে থাকতেন জমির কোণার আমগাছটায় হেলান দিয়ে। এক দুপুরে সেই জমির মালিকানা চলে যায় খন্দকারদের হাতে। বিনিময়ে যে কটা টাকা আসে হাতে, তা-ই দিয়ে মহন্তকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্নটাকে ধীরে ধীরে বাস্তবের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন মহানন্দ কাকা।
মহন্ত মেডিকেল কলেজ পড়ে, ছুটিছাটায় বাড়ি আসে। তার কাছ থেকে শহরের গল্প শুনি আমরা। আর শুনি মিছিল-মিটিংয়ের গল্প। শাসনের নামে শোষণের গল্প। চালের দাম যখন হু-হু করে বাড়ে আর বিদেশের ব্যাংকে জমা হয় টাকার পাহাড়। সেই শৃঙ্খল ভাঙার স্বপ্নের কথা, সাহসের কথা আমাদের শোনায় মহন্ত। আমাদের লাজুক মহন্ত ততদিনে অনেক চটপটে। স্পষ্ট উচ্চারণে চোখে চোখ রেখে বলে যায় মানুষের অধিকারের কথা, স্বাধিকারের কথা। আমরা তন্ময় হয়ে শুনি। আর ভাবি, মহন্ত পারবেই। জীবনে তো ব্যর্থ হয়নি কোথাও সে। ছুটি শেষ—চলে যায় মহন্ত। পত্রিকা পড়ি, এর তার কাছে কিছুটা শুনি। শহরে নাকি আগুন ঝরছে মিছিলে-মিটিংয়ে। সব দল এক হয়েছে—স্বৈরাচারের পতন আন্দোলন চলছে। এবার গদি ছাড়তেই হবে তাকে। সামনে আসছে গণতন্ত্রের দিন! মেহনতি মানুষের দিন। মহন্ত বাড়ি আসে না অনেক দিন। এদিকে মহানন্দ কাকা দিন গোনেন ডাক্তার হতে আর কতদিন বাকি।
এক শীতের ভোরে সূর্য উঠেছে কি ওঠেনি। চারপাশ নীরব নিস্তব্ধ, কুয়াশায় ঢাকা। একমাত্র খেজুর গাছে রসের হাঁড়ি বেঁধেছিল যারা, তারা ছাড়া আর কেউই হয়তো বের হয়নি কাঁথার নিচ থেকে। তেমন এক ভোরে কানে আসে মোটর গাড়ির আওয়াজ। গাড়িটা কি আস্তে আস্তে মহানন্দ কাকার বাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে? পাত্তা দিই না খুব। অল্প কিছুক্ষণ পর কান ফাটানো চিৎকারে আর কাঁথার নিচে থাকা সম্ভব হয় না। কোনো মতে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি সবাই ছুটছে মহানন্দ কাকার বাড়ির দিকে। পায়ে পায়ে হাজির হই আমিও। ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ শুনে সংক্ষেপে যা দাঁড়ায়, তা হলো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার মিছিলে গিয়ে গুলিতে মরে গেছে আমাদের মহন্ত জলদাস। মহন্তর সঙ্গে আসা ছেলেগুলো কেমন উদ্ভ্রান্তের মতো। মহানন্দ কাকা কিংবা রেবতি মাসিকে কোনো সান্ত্বনার কথা বলে না তারা। কাছেও যায় না। বহুকাল আগে খন্দকারদের কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়া মহানন্দ কাকার জমিটার কোণায় যে আমগাছ, তার তলায় পা ছড়িয়ে বসে থাকে ছেলেগুলো। শেষ দুপুরের দিকে মহন্তকে যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চিত্রা পাড়ের শ্মশানের দিকে; তখন কান্নায় ভেঙে পড়ে ঝাঁকড়া চুলের একটি সুঠাম ছেলে। আর তাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বাকিরাও চোখ মোছে।
মহন্ত চলে যাওয়ার কিছুদিন পর ক্ষমতা ছাড়ে সরকার। আমাদের উপজেলায়ও আনন্দ মিছিল হয়—স্বৈরাচার পতনের। এরপর নির্বাচন হয়। আসে মহন্তের স্বপ্নের গণতন্ত্র। কিন্তু মুক্তি কই। মুক্তি কি এসেছে? চিত্রাপাড়ে গেলে জলের কুলকুল বয়ে যাওয়া, শিরশির বাতাস, বাঁশের ডগায় বসে থাকা ধ্যানী মাছরাঙা, ফুরুত ফুরুত উড়ে বেড়ানো চঞ্চল ফিঙে, আশপাশেই ক্লান্ত স্বরে ডেকে চলা ডাহুক, কালিম, জলো গন্ধ—সবাই যেন প্রশ্ন করে মহন্তের হয়ে—মুক্তি কি এসেছে?
মহন্ত মারা যাওয়ার কিছুদিন পর বাড়ি এসেছিলেন অনেক রাজনৈতিক নেতা। বিভিন্ন দলের। মহন্তর এই আত্মত্যাগ কত মহান। এ রকম ছোট ছোট ত্যাগের বিনিময়ে রচিত হয়েছে কত মহিমান্বিত ইতিহাস—এমন সব ভারি ভারি কথা কাঁপা কাঁপা গলায় বলতেন সবাই। মহানন্দ কাকা বলতেন না কিছুই। শুধু চেয়ে থাকতেন নির্লিপ্তের মতো। এরপর কেটে গেছে কত কত বছর। বছরের পর বছর অবিরাম জল গড়িয়ে গড়িয়ে বুড়িয়ে গেছে চিত্রা নদী। জীর্ণ-শীর্ণ চিত্রার মতো বুড়িয়ে গেছেন মহানন্দ কাকা। রেবতি মাসি এখন আর চোখে দেখেন না। শ্যামল বরণ মালতিদির কথা কারো মনে নেই আর।
শুধু আজকের এই বিকেলের মতো কখনো মহানন্দ কাকার সামনে পড়ে যাই আমরা কেউ। আর তখন নদীর জলে বিশাল কোনো আইড় মাছের আলোড়ন তোলা ঘাইয়ের মতো জেগে জেগে ওঠে মহন্ত। কিছুক্ষণ তোলপাড় আর ভুম-ভুস শব্দ তোলা আলোড়ন। তারপর কিছুটা বুদবুদ তুলে জল যেমন নিঃশব্দ শান্ত হয়ে যায়; তেমনই আমরা ভুলে যাই দুই জলদাস সন্তান মালতি এবং মহন্তকে। অন্ধ রেবতি মাসি আর রুগ্নস্বাস্থ্যের মহানন্দ কাকাকেও আমরা ধরে নিই আর দশটা সাধারণ বস্তুর মতোই। তাদের জীবনটাও অন্য দশটা সাধারণ জীবন থেকে কখনো আলাদা মনে হয় না আমাদের! শুধু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঝাঁকড়া চুলের ডাক্তারের কাছে গেলে মাঝে মাঝে মনে পড়ে আমাদের গ্রামের একটি ছেলেরও তো ডাক্তার হওয়ার কথা ছিল! ব্যাস, এ পর্যন্তই।
জীবন বয়ে চলে। আদতে জীবনও তো একটা নদী!
এসইউ/এমএস