তছলিম হোসেন হাওলাদারের চারটি কবিতা
অনাগত প্রিয়া, তোমাকে
হিসেব আছে এরকম
তুমি আসবে কোনো এক স্নিগ্ধ সকালে
একটি গোলাপ হাতে
আমার হাতে হাত রেখে অতঃপর জানাবে সু-প্রভাত।
ফুল ছাড়া অন্য কিছু প্রত্যাশা নেই
ভালোবাসাও নেই দেব অমল কোনো প্রতিদান।
আমিও বাড়িয়ে দেব দু’হাত, শুধুই হাত
আর সুভাস উত্থিত এক বুক
আর কিছু শব্দ, যা অতি যত্নে সাজিয়ে রাখা
তোমার জন্যে—আমার ভালোবাসার মঞ্জুরী
ভালোবাসা ছাড়া আমারও যে সম্পদ নেই।
****
নিবেদিত কবিতাগুচ্ছ
এক.
তোমার জন্য অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি
আমাকে হাত ধরে তুলে নাও
দৃষ্টি থেকে ভিড়ের এই রাজপথ লুপ্ত হয়ে যাক
আমাকে অন্য কোথাও নিয়ে পালাও।
পালাবার জায়গা যদি একান্তই না পাও
তবে তোমার বুকের মধ্যেই আমাকে লুকাও।
দুই.
দিনকাল খুব একটা ভালো না
সব কাজে সর্বত্র বড় বেশি ছলনা
কোথায় লুকাই বলো এ বৈরি দুঃসময়ে
ফিরে আসছি তাই একান্ত তোমার আশ্রয়ে।
তিন.
এখন সময় ভয়ানক রকম ছন্দ পতনের
একান্ত কথাদের বুকে বুকে রোপনের।
****
প্রিয় অপ্রিয়
যখন পাখি আকাশে ওড়ে
মুগ্ধ নয়নে আমি তার সুন্দর উড়ে চলা দেখি
প্রার্থনা করি এ আকাশ এ পাখির জন্য নিরাপদ থাক
তার ডানায় না লাগে যেন কোনো গুলির আঘাত।
যখন বৃক্ষরা বেড়ে ওঠে
সবুজ সবুজে ছেয়ে যায় রুক্ষ্ম হরিৎ প্রান্তর
আমি প্রার্থনা করি
প্রার্থনা করি যেন এ সবুজ সাম্রাজ্য কখনো ধ্বংস না হয়
এ বৃক্ষভূমি যেন স্পর্শ না করে কোনো কাঠুরের পা।
শিকারি আর কাঠুরের প্রতি আমার বড় বেশি ঘৃণা।
****
শোভন হাসি
শোভন হাসি সবাই হাসতে পারে না
তার জন্য চোখ চাই
অর্থময় পলকবাহী গহন গভীর চোখ
যে চোখের দিকে তাকিয়ে উজ্জ্বল তারায়
দিক-নির্দেশ পাওয়া যায়
নিঃসন্দেহ হয়ে হাঁটা যায় ভাগ্যলক্ষ্মীর ঠিকানায়।
শোভন হাসি সবাই হাসতে পারে না
তার জন্য মুখ চাই
পরিষ্কার ঝকঝকে দম্ভভরা মুখ
যে মুখের পরিমিত আয়তন দেখে পরিমাপ করা যায়
দুর্ভিক্ষ ঘোচাতে আর কতোটুকু প্রস্তুতির প্রয়োজন।
শোভন হাসি সবাই হাসতে পারে না
তার জন্য শরীরী আবেদন প্রয়োজন
যেমন পায়ের আগে প্রয়োজন উদ্দীপ্ত শরীর
তারপর প্রশ্ন ওঠে হাঁটার, হেঁটে চলার।
এসইউ/এমএস