হেমন্তের ২টি কবিতা

এ কে সরকার শাওন
এ কে সরকার শাওন এ কে সরকার শাওন , কবি
প্রকাশিত: ১২:৪৯ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০১৯

হেমন্তের গান

হেমন্তের আগমনী গান
হিমেল হাওয়া গেয়ে যায়;
শরৎ নিয়েছে বিদায়,
কুয়াশার চাদর দিয়ে গায়।

ঘাসের মাথায় হীরার শিশির
মুকুট ঝলমল করে!
নীলাকাশ মিতালীতে মাতে
সবুজ দিগন্ত ধরে!

বাগানজুড়ে শোভা পায়
অশোক ছাতিম হিমঝুরী;
শিউলি কামিনী গন্ধরাজের
ঘ্রাণে মন যায় ভরি!

বাতাস ঢেউ খেলে
সোনালি ধানের ক্ষেতে।
কৃষাণ খুশিতে গান করে
পূর্ণতা প্রাপ্তিতে!

পরিবারের পুনর্মিলন
নবান্নের মহা উৎসবে;
ঝিয়ারী জামাই নাইওর আসে,
খুশির জোয়ারে ভাসে সবে!

নতুন চালের ফিরণি পায়েস
অমৃতের স্বাদ ক্ষীরে!
চিড়া মুড়ি খইয়ের স্বাদ বাড়ে
চিনিপাতা জমাট দইয়ে!

চাই হাতে নানা চলে
মাছ ধরার উৎসবে!
জাল কাঁধে সাথী নাতি
ডোলা হাতে গৌরবে!

দিনে লুডু লাঠিখেলা আর
কানামাছি নাগরদোলা!
রাতে আড্ডা হৈ-হুল্লোড়
বাউলা গান যাত্রাপালা!

হাসি-খুশি আনন্দ-উল্লাস
ধানে ধনে জনে গানে
চাঁদের হাট বসে ঘরে ঘরে
সাধের অগ্রহায়ণে!

আবহমান বাংলায়
এ পরম্পরা বিশ্বের সেরা!
শহরে বসে কি আছে আর;
স্মৃতি রোমন্থন ছাড়া?

হিমেল হেমন্ত

রঙ্গরসের গাঙ্গেয় ব-দ্বীপে
হেমন্ত বর নিয়ে আসে!
শ্যামলীমা উল্লাসে নাচে,
মুক্তার ঝিলিক দুর্বাঘাসে!

ধানে ধনে যশ জৌলুসে
কৃষাণের চোখে রোশনাই ঝরে!
ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটিয়ে
সোনালি ক্ষেতে চায় ফিরে!

শিউলি কামিনী গন্ধরাজ
আর বাহারী ফুলের মালা;
অশোক ছাতিম হিমঝুরী
বকফুল মনে দেয় দোলা!

গানে ঘ্রাণে গুনগুনিয়ে
ভ্রমর ফড়িং ওড়ে!
নবান্নে চাঁদের হাট বসে
সকল শান্তির নীড়ে!

আয়েশী পায়েস, মিষ্টি সন্দেশ,
বাহারী খাবারের মেলা।
চলে পুলি পাক্কন পাটিশাপটায়
কারুকাজের খেলা!

পার্বণের প্লাবণে হেসে ভেসে
আসে নবান্নের মহামিলন!
হাসি-খুশি সাধ-আহ্লাদ
ধুমধামে হবে পূরণ!

মাছ ধরার সাড়া পড়ে
খালে বিলে ডোবায়!
নানা ধরনের শুঁটকি নিয়ে
জেলে স্বপ্ন বুনে যায়!

রাত বিরাতে যাত্রাপালা
খুশি কবিগান পালাগানে!
দিনে হৈ-হুল্লোড় আড্ডা
খেলাধুলা চলে সমানে!

হেমন্ত গেড়েছে আসন
বাঙালির হৃদয় কুঞ্জবনে,
প্রত্যাশা প্রাপ্তি সম্ভাবনার
সাধের কার্তিক অগ্রহায়ণে!

এসইউ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।