মুসতাক মুকুলের তিনটি কবিতা

হ্যালো
হ্যালো...
চুপ কেন; একটা কিছু বলো
অনেক কষ্টে এত বছর পরে
তবু তুমি রাখবে ফোনটা ধরে
দোহাই লাগে আর থেকো না চুপ
বুকের ভেতর কথার যে স্তূপ
হ্যালো... হ্যালো... হ্যালো...
মনজানালায় চক্ষুটা তো মেলো
বলতে রোজই মনটা তোমার কাঁদে
রোজ বিকেলে উঠতে বাড়ির ছাদে
বাড়ির পাশে আমিও যেতাম আশায়
দেখার ছলে একটু ভালোবাসায়!
তোমার কাছে হয়তো পুরান ছবি
আমার কাছে সঙ্গী স্মৃতি সবি
হ্যালো... হ্যালো... হ্যালো...
মনদুয়ারে একবার চোখ ফেলো
দেখবে তোমায় আজও করিনি পর
তোমায় বিনে তাই বাঁধিনি ঘর...
সকাল-দুপুর এখনো তাই ভাবি
ভেবো না মিছে নেই তো কোনো দাবি
শুনেছি তুমি আছো মহা সুখে
পাড়ার মানুষ বলে মুখে মুখে
বরের নাকি টাকাও কাড়িকাড়ি
আছে বাড়ি, হাঁকায় নতুন গাড়ি
তোমার ঘরে এখন তোমার ছেলে
হচ্ছে বড় আনন্দে হেসেখেলে
ভালোই আছো এ আমারও সুখ
তবু কেন কাঁপছে আমার বুক
হ্যালো... হ্যালো... হ্যালো...
বুক জ্বলে যায়, একটা কিছু বলো
এতদিন পর শুনবো কথা তোমার
তর সয় না এই পরানে আমার
কাঁদছো নাকি ধুরো পাগলি মেয়ে
ভালোই আছি তোমার স্মৃতি নিয়ে
হ্যালো... হ্যালো... হ্যালো...
আহ লাইনটাই কেটে গেলো...
****
কেন ফিরে এলে?
এমন করে তো চাইনি কখনো!
কেন বুকের বামপাশের অনুভূতি বাড়ালে?
কেন এসে হারানো পথে দাঁড়ালে?
দহনের তীব্রতায় সূর্য পুড়ে খাক
ভস্ম হয় অসংখ্য নক্ষত্র
এত ছাই রাখবো কোথায়?
বেদনার একফোঁটা মহাসমুদ্রে মিশেছিলো
কষ্টে সে লবণাক্ত নীল হয়েছে তাতে
বেদনার বাকিটুকু ধুয়ে নেবো কিসে আর
এত পানি ত্রিতল্লাটেও নেই
সুনামির ঢেউ পাহাড় সমান
ডুবে যায় তাতে প্রমোদতরী
ছিঁড়ে গেছে পাল, নাবিকেরা নাই
শূন্য সৈকতে একা আছি পড়ি
এরই মাঝে বালুঝড় হয়ে কেন
এলে হৃদয়ে ফানুস ওড়াতে
বাতাস গরম, ঘাম ছুটে যায়
রক্ত ঝরে অঝোরে
খবর পেলাম বুকের ভেতর আগ্নেয়গিরি জ্বলে
সব পুড়ে যায়, যা ছিল সহায়
আমার হৃদয় অতলে
****
বেদনা বৃষ্টি হয়ে ঝরে
বুকের বামপাশে চিনচিন করে যে দুঃখ
সে-ও তো ক্ষয়ে যায় সময়ের ব্যবধানে
তাই বিষণ্ন বিকেলে মেঘের খামে ভরে
জমে থাকা বেদনা বাষ্প উড়িয়ে দেবো
বৃষ্টি রূপে তা পড়বে ঝরে
তোমার আঙিনায়।
রিনিঝিনি মনোরোম সুরে উচাটন মন
নিয়ে চলে এসো ভিজতে
হয়তো সেখানে
কাঁঠাল চাপার গন্ধ খুঁজবে
আর আমি আলিঙ্গনে ঋদ্ধ হবো
শুধু জানবে না কতটা ক্ষরিত জল
মিলেমিশে একাকার বৃষ্টির ফোঁটায়...
এসইউ/এএসএম