ইয়াসিন আযীযের চারটি কবিতা

সাহিত্য ডেস্ক
সাহিত্য ডেস্ক সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:০৬ এএম, ০৫ মার্চ ২০২৫

অকৃতজ্ঞ ও ঈর্ষা

সকালের শুরুতে লাউয়ের ডগা
সোনারোদ মেখে নেয় আপন মনে
ভাবে সূর্যের স্নিগ্ধ ভালোবাসা
দিয়েছে বুঝি তাকে একাই;
পাশের মাচার কুমড়ো ফুল রেখে তাই
সূর্যের পানে চেয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন

একদিন ভরা পূর্ণিমার রাতে
একফোঁটা শিশির পড়ে তার ডগায়
দিন কয়েক বাদে ডগায় কুঁড়ি আসে—
বড়ো হতে থাকে লাউ মাচায়।
শিমের লতার কাছে গল্পের ফাঁকে
সূর্যের সাথে প্রণয়ের কথা বলে লাউলতা।
সে ভাবে সূর্যই রাতে চাঁদ হয়ে এসে
প্রণয় শিশিররস দিয়েছিল ভালোবেসে।

মাটি আর জলের সাথে শিকড় তখনো...
মাটি আর জলের কথা ভুলে যায় এভাবেই!
ভ্রমরের আলিঙ্গনে পরাগায়ন
সে-তো মনেই রাখেনি—লাউলতা!
শিমের লতা, লাউলতার কথা শুনে
বাতাসে দোলে আর মুচকি হাসে।
কুমড়ো ফুল মাথা উঁচিয়ে তাকায়
ভাবে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তাকে নিয়েই।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

****

নিজেকে আগে বদলাই

আমরা নিজেরা না বদলাই
অন্যকে শুধু বদলাতে চাই।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

নিজের বেলায় আইনের ধার ধারি না
অন্যকে বলতে চুল পরিমাণ ছাড়ি না।

জাতিতে আমরা উপদেশবাদী
রাখি না খোঁজ, নিজেই অপরাধী।

পরের উপকারে সেরা আমরাই;
বিচার মানি—তালগাছ আমার চাই!

বিজ্ঞাপন

নিজের স্বার্থে ষোলোআনা বাজি—
জানো না কত নিচে নামতে রাজি!

চলো বদলাই নিজে সবার আগে
একাই জাগবো, যদি কেউ না জাগে।

শুরুটা হোক আমাকে দিয়ে নতুনের
ফোটাতে সত্য অথবা মিথ্যা পতনের।

বিজ্ঞাপন

মহাকাল দেবে সাক্ষ্য সে মহৎ কর্মের
মানুষ কি শুধরাতে পারে ভুল—ধর্মের?

****

মধ্যবিত্তের প্রিয় ঋতু

বিজ্ঞাপন

আমার প্রিয় ঋতু কোনটি—বলা মুশকিল। আমি কোনো কিছুতেই সেভাবে
আটকে থাকি না। তবে আমি শীতের অপেক্ষায় মুখিয়ে থাকি—সস্তায়
নানারকম শাক-সবজি কিনতে পারব ভেবে। কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত
পৌঁছতে: গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি, রাস্তায় চাঁদাবাজের দৌরাত্ম্য, অতি মুনাফালোভীর
কারসাজি; সব মিলিয়ে আকাশ ছুঁয়ে যায় দাম। দুশো টাকায় ছোটো একটা
ব্যাগ ভরে উঠুক শাক-সবজিতে—আমার মতো মধ্যবিত্তরা তা-ই চায়।
বাজারে গিয়ে হতাশই হতে হয় বরাবর। না না, কেউ আমাকে
নিরামিষ ভোজী ভেবে ভুল করবেন না। মাছ, মাংস খুব একটা পছন্দ নয়
আমার ঠিক! তবে পছন্দ করেই লাভ কী বলুন? এ নিয়ে একটি মুখরোচক
গল্প জানি আমি। সেটা না হয় অন্যদিন বলা যাবে। আজ এটুকুই...

****

মানব জীবন

বিজ্ঞাপন

সকলকেই একদিন খালি হাতে ফিরে যেতে হয়। যেভাবে একদিন ফিরে
গিয়েছিল ব্রিটেন...। অতীতে সোভিয়েত, সম্প্রতি ফিরে গেল আমেরিকা—
আফগানিস্তান থেকে। বাংলা থেকে অপধ্বস্ত হয়ে একাত্তরে ফিরেছিল
পাকবাহিনী। এভাবেই সকলকে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়। মহাবীর
আলেকজান্ডার ফিরে গিয়েছিল খালি হাতে ভারতবর্ষ হতে। খালি হাতে
ফিরে গিয়েছে সাদ্দাম হোসেন, কর্নেল গাদ্দাফি, হোসনি মুবারকের মতো
হালের দীর্ঘস্থায়ী শাসকগণ।

ক্ষমতার লোভে, ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থে যতই বাহাদুরি করি না কেন—একদিন
ঠিকই রিক্ত, শূন্য হাতে পাড়ি দিতে হয় জীবন তরী। কারও ক্ষমতা চিরস্থায়ী
নয়—ইতিহাস তা-ই বলে। তবুও চরম সুখানুভূতির মুহূর্তের চেয়ে স্বল্পায়ু
মানব জীবনে, জানি না আমাদের কেন এত নক্ষত্র হওয়ার সাধ!

এসইউ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।