ঝামেলাপূর্ণ জীবনে শান্তি আনবেন যেভাবে

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৪০ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০২৪
ঝামেলাপূর্ণ জীবনেও শান্তি আনতে হবে

জীবনে নানা টানাপোড়েন থাকবেই। তাই বলে তো আর জীবন থেমে থাকবে না। প্রতিদিনের জীবনেই নানা ধরনের ঝামেলা কিংবা বিশৃঙ্খলার সম্মুখীন হতে হয় কমবেশি সবাইকে। এ কারণে অনেকেই বিরক্ত হয়ে বলে ওঠেন ‘জীবন থেকে ঝামেলা আর শেষ হলো না’! সত্যিই তাই, জানলে অবাক হবেন আপনার এই বিরক্তি প্রকাশ নিয়েও কিন্তু একটি দিবস আছে।

প্রতিবছর ৯ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিত হয় ‘কাওস নেভার ডাইস্ ডে’ বা ‘ঝামেলার শেষ নেই’ দিবস। কর্মব্যস্ত জীবনে একটু শান্তি পাওয়ার প্রয়াসেই পালিত হয় দিবসটি। এদিন অনেকেই ঘুমিয়ে কাটান, আবার সিনেমা দেখে কিংবা নির্জন কোথাও ঘুরতে গিয়েও দিবসটি সেলিব্রেট করেন।

কর্মব্যস্ত ও কঠিন এই জীবনে চলার পথে ঝামেলা থাকবেই, তাই বলে আপনি তো থেমে যেতে পারেন না! তাই ঝামেলাপূর্ণ জীবনেও শান্তি আনতে হবে। এজন্য ধৈর্যশীল হওয়ার বিকল্প নেই। কিছু উপায় আছে, যেগুলো অনুসরণ করলে ঝামেলাপূর্ণ জীবনে শান্তি আনতে পারবেন সহজেই-

মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখুন

কর্মব্যস্ত এই জীবনে কমবেশি সবাই মানসিক চাপে ভোগেন। যা শারীরিক সমস্যারও কারণ হয়ে দাড়ায়। তাই মনে রাখবেন, মানসিক সুস্থতা সবকিছুর উর্ধ্বে। তাই মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। কারণ নেতিবাচক চিন্তা মানসিক স্বাস্থ্যকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে।

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে শরীরচর্চা ও মেডিটেশন খুবই উপকারী। নিয়মিত শরীরচর্চা কিংবা ধ্যান করে আপনি মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারবেন। চাইলে বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে কাউন্সিলিং বা থেরাপিও নিতে পারেন বিষণ্নতা বা ট্রমা কাটাতে।

স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ুন

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ক্ষেত্রে ভালো কিছু অভ্যাস গড়ে তোলার বিকল্প নেই। এই অভ্যাসগুলো শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য বিশেষ উপকারী। এজন্য আপনার দৈনন্দিন রুটিনে ইতিবাচক কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করুন। নিয়মিত ব্যায়াম, ভালো ঘুম ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারেন।

ভেবেচিন্তে অর্থ ব্যয় করুন

বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আর্থিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আপনি জীবনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারেন। প্রতি মাসে আয় বুঝে ব্যয় করুন। এজন্য একটি বাজেট তৈরি করুন। প্রয়োজনীয় খরচের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ বরাদ্দ রেখে বাকিটা সঞ্চয় করুন কিংবা ব্যবসায়ে ইনভেস্ট করুন। পাশাপাশি জরুরি তহবিলেও কিছু অর্থ সঞ্চিত রাখুন। অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়াতে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার সীমিত করুন।

উন্নয়নশীল কাজে সময় ব্যয় করুন

আপনার সময়কে কীভাবে ব্যবহার করছেন, তার উপরই মূলত নির্ভর করে জীবনে কতটা শৃঙ্খল আপনি। আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে অবশ্যই গঠনমূলক কাজে সময় ব্যয় করতে হবে। সঠিক সময় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সহজেই আপনি কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবেন, যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে।

ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তুলুন

জীবনে ভালো বন্ধুর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। যার মাধ্যমে আপনি জীবনে ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা পাবেন। আর সেই ভালো বন্ধু হতে পারে আপনার বাবা-মা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়-স্বজনদের কেউ। মনে রাখবেন, অনুপ্রাণিত ব্যক্তিদের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে লাভবান হবেন আপনিই। সব সময় চেষ্টা করবেন, আপনার জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এমন ব্যক্তিদের এড়িয়ে চলতে।

ব্যক্তিগত উন্নয়ন বাড়ান

ব্যক্তিগত উন্নয়ন বাড়াতে নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে ও শিখতে হবে। মনে রাখবেন, শেখার কোনো বয়স নেই। এক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা, অনলাইন কোর্স বা স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা গ্রহণ করুন। একই সঙ্গে নতুন অভিজ্ঞতা ও চ্যালেঞ্জ খুঁজুন, যা আপনার আত্ম উন্নয়নে সাহায্য করবে।

আপনার অর্জন উদযাপন করুন

নিজের অর্জনকে নিজেই স্বীকৃতি দিন। উদাহরণস্বরূপ, কোনো একটি গোল নির্ধারণ করুন। এজন্য কঠোর পরিশ্রম করুন ও সফল হলে সেই অর্জন উদযাপন করুন। যে কোনো লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার জন্য স্থিতিস্থাপকতা ও সংকল্প প্রয়োজন। যদিও কোনো কাজে সফল হওয়ার আগে নানা বিপত্তি পার করতে হয়, তবে থেমে না গিয়ে অবিচল থাকতে হবে।

ব্যর্থতা থেকে শিখুন

ব্যর্থতা থেকে শেখা উচিত সবারই। অনেকেই ব্যর্থতা মেনে নিতে পারেন না। ফলে হতাশ হয়ে পড়েন। যা এক সময় বিষণ্নতার কারণ হয়ে দাড়ায়। তাই ব্যর্থতা থেকেই আবার উঠে দাড়ান, মনোবল নিয়ে লক্ষ্য অর্জনে আরও তৎপর হয়ে উঠুন। দেখবেন সফল আপনি হবেনই। উপরোক্ত বিষয়গুলো অনুসরণ করে আপনি ঝামেলাপূর্ণ জীবনেও শান্তি বয়ে আনতে পারবেন। এজন্য দরকার শুধু মনোবল ও মানসিকভাবে শক্ত থাকা।

জেএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।