সুস্থ থাকার পরও যেসব ভুলে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:২১ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২৪
অকাল হৃদরোগের প্রধান কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা

বর্তমানে কমবয়সীদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরলের কারণে হার্টের রক্তনালিগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে রক্তের প্রবাহ ব্যাহত হয় ও হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। শেষ হার্ট কাজ করা বন্ধ করে দেয়।

সবার মধ্যেই একটি ভ্রান্ত ধারণা আছে যে, তরুণদের হৃদরোগ হয় না। এটি একেবারেই ভুল ধারণা। হার্ট অ্যাটাকসহ হৃদরোগের জন্য বিশেষজ্ঞরা দায়ী করছেন অনিয়মিত জীবনধারাকে।

হার্ভার্ড হেলথের ২০১৯ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, করোনারি ধমনীতে অ্যাথেরোস্ক্লেরোটিক ব্লকেজের কারণে ঘটে যাওয়া হার্ট অ্যাটাকগুলোর ৮০ শতাংশ অল্প বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়। সঠিক ব্যায়াম ও ওজন বজায় রাখা, সুষম খাবার খাওয়া ও স্ট্রেসমুক্ত জীবন যাপন করলে হদযন্ত্রকে সুস্থ রাখা যায়।

অকাল হৃদরোগের কারণ কী?

অকাল হৃদরোগের প্রধান কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা। বাইরে থেকে যা মনে হয় তা সাধারণত সত্য নয়। একজন ব্যক্তি আপনার কাছে সুস্থ ও মানানসই দেখালেও হতে পারে তিনি ভেতর থেকে অসুস্থ। হৃদরোগে বিভিন্ন অকালমৃত্যু সবাইকে সময়মতো মেডিকেল চেকআপের গুরুত্বের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

ইউএস সিডিসি বলছে, স্থূলতা ও উচ্চ রক্তচাপের উচ্চ হারের কারণে বর্তমানে ৩৫-৪০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যেও হৃদরোগের প্রবণতা দেখা দিচ্ছে।

হার্ভার্ড হেলথ রিপোর্টে বলা হয়েছে, তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রায় ৪ শতাংশ হার্ট অ্যাটাক করোনারি আর্টারি অ্যানাটমির জন্মগত অস্বাভাবিকতার কারণে হয়। এক্ষেত্রে ৫ শতাংশ রক্ত জমাট বাঁধার জন্য দায়ী করা যেতে পারে। এছাড়া ড্রাগ অপব্যবহার, ধূমপান ও অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।

অতিরিক্ত ওজনও কিন্তু হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে। বেশ কিছু গবেষণা অধ্যয়ন স্থূলতা ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের বিকাশের মধ্যে একটি যোগসূত্র দেখেছে। জানা যায়, স্থূলতা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে বিশেষ অবদান রাখে। তাই হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে অবশ্যই সঠিকওজন বজায় রাখতে হবে।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের ২০২১ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের জনসংখ্যার ৩৯-৪৯ শতাংশ (২.৮-৩.৫ বিলিয়ন মানুষ) অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় ভুগছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে স্থূলতার কারণে ৪ মিলিয়ন মৃত্যুর মধ্যে হৃদরোগজনিত মৃত্যুর দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি।

হৃদরোগের আরও একটি অন্যতম কারণ হলো শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা। শরীরচর্চা না করা ধূমপান ও উচ্চ রক্তচাপের মতোই ক্ষতিকর হৃদযন্ত্রের জন্য। হৃদরোগের ৩৫ শতাংশ ঘটনাই ঘটে শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার কারণে। শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা হার্টকে সঠিকভাবে সচল রাখে।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রোখতে সপ্তাহে তিনবার ৩০-৬০ মিনিট অ্যারোবিক ব্যায়াম করার পরামর্শ দেয়। প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিটের মাঝারি কার্যকলাপে নিজেকে নিযুক্ত করা উচিত। এর পাশাপাশি শারীরিকভাবে বেশ পরিশ্রমী হতে হবে। বেশিক্ষণ বসে বা শুয়ে থাকা যাবে না।

হৃদরোগের যে লক্ষণে সতর্ক থাকবেন

১. স্বাভাবিক শারীরিক ক্রিয়াকলাপগুলো চালিয়ে যেতে অসুবিধা বোধ করলে
২. বয়সের তুলনায় নিজেকে বেশি ক্লান্ত মনে করা
৩. শ্বাসকষ্ট অনুভব করা
৪. মাথা ঘোরা
৫. বুক ধড়ফড় করা
৬. প্রায়ই অজ্ঞান হয়ে পড়া
৭. শরীরের নির্দিষ্ট কোনো অংশে একনাগাড়ে ব্যথা অনুভব করা ইত্যাদি। এসব লক্ষণ দেখলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

জেএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।