হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে, হাই কোলেস্টেরলে ভুগছেন না তো?
হাঁটতে গিয়ে কখনো পায়ে ব্যথা আবার কখনো অসাড় বোধ হওয়ার লক্ষণ অনেকেই হয়তো সাধারণভাবেই নেন। তবে প্রায়ই এ সমস্যায় ভোগার কারণ হতে পারে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া। উচ্চ কোলেস্টেরলের পেছনে দায়ী ভুল জীবনধারা যেমন- উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া, ব্যায়াম না করা, ধূমপান ও অত্যধিক অ্যালকোহল গ্রহণ ইত্যাদি।
এ ধরনের জীবনধারা হার্টের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। কখনো কখনো উচ্চ কোলেস্টেরলের কোনো লক্ষণ প্রকাশ নাও পেতে পারে। এক্ষেত্রে ধমনীতে নিঃশব্দে জমা হতে থাকা কোলেস্টেরল।
আরও পড়ুন: মুখের ভেতরে ঘা, ক্যানসারের ইঙ্গিত নয় তো?
যা ধমনীতে রক্তপ্রবাহ কমাতে পারে। ফলে বুকে ব্যথা, হৃদরোগ, স্ট্রোক ইত্যাদির মতো একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি হয়। এজন্য উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণগুলোর সময়মতো শনাক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে পায়েও দেখা দিতে পারে যে লক্ষণ-
পেরিফেরাল ধমনী রোগ কি?
উচ্চ মাত্রার খারাপ কোলেস্টেরল আপনার ধমনীতে প্লাক তৈরি করতে সাহায্য করে। প্লাক হলো কোলেস্টেরল ও অন্যান্য পদার্থ দ্বারা গঠিত একটি মোমজাতীয় পদার্থ। অত্যধিক ফলক আপনার ধমনীকে সরু করে দিতে পারে ও রক্ত প্রবাহকে কমিয়ে দিতে পারে। ধমনীতে ফ্যাটি প্লেক জমা হওয়াকে এথেরোস্ক্লেরোসিস বলা হয়।
এই সীমাবদ্ধ রক্ত প্রবাহ আপনার পায়ে সতর্কতা চিহ্নের মাধ্যমে প্রদর্শিত হতে পারে। এর ফলে পায়ে বা নীচের অংশে পেরিফেরাল আর্টারিয়াল ডিজিজ হতে পারে। পিএডি যে কোনো রক্তনালিতে ঘটতে পারে, তবে এটি পায়ে বেশি দেখা যায়।
আরও পড়ুন: প্রতিদিন নাভিতে তেল দিলে শরীরে কী ঘটে?
হাঁটার সময় ব্যথা
পেরিফেরাল ধমনী রোগ আপনার পায়ে ব্যথা শুরু করতে পারে, বিশেষ করে যখন আপনি হাঁটছেন। ব্যথা হালকা থেকে গুরুতর পর্যন্ত হতে পারে, হঠাৎ দাঁড়ানো ও হাঁটার সময় ব্যথার মতো দেখা দিতে পারে।
এটি সাধারণত আপনার পায়ে বিশ্রামের কয়েক মিনিট পরে চলে যায়। হৃদপিণ্ড থেকে পায়ে দুর্বল রক্ত সঞ্চালনের কারণে উভয় পা একই সময়ে প্রভাবিত হতে পারে। যদিও এক পায়ে ব্যথা আরও খারাপ হতে পারে।
এর অন্যান্য লক্ষণ কী কী?
- পায়ের লোম পড়া
- পায়ে অসাড়তা বা দুর্বলতা
- ভঙ্গুর পায়ের নখ
- পায়ে ঘা হওয়া
- পায়ের রং ফ্যাকাশে বা নীল হয়ে যাওয়া
- পায়ের পেশি সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়া।
আরও পড়ুন: ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি কাদের ও কেন হয়?
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন?
কখনো কখনো পেরিফেরাল ধমনী রোগের লক্ষণগুলো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। এক্ষেত্রে অবিলম্বে চিকিৎসা প্রয়োজন। হাঁটার সময় আপনার পায়ে ব্যথা অনুভব করা কিংবা পিএডি সম্পর্কিত লক্ষণ টের পেলেই দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে।
উচ্চ কোলেস্টেরল কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন?
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনার একমাত্র উপায় হলো জীবনধারণে পরিবর্তন আনা। ডাক্তার দ্বারা নির্ধারিত ওষুধগুলোর পাশাপাশি খাদ্যতালিকার দিকেও নজর দিতে হবে।
ফল, শাকসবজি ও গোটা শস্য সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর খাবার পাতে রাখতে হবে। সব ধরনের প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটজাত খাবার বাদ দিন। সসেজ, বিস্কুট ও পনিরের মতো স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। প্রতিদিন ব্যায়াম করাও সুস্থ শরীর ও সুস্থ হার্টের জন্য অপরিহার্য। এর পাশাপাশি ধূমপান ও মদ্যপান বাদ দিন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
জেএমএস/জিকেএস