লিভার সিরোসিসে ভুগছেন কি না বুঝে নিন ৫ লক্ষণে
বর্তমানে অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে অনেকেই লিভারের নানা সমস্যায় ভুগছেন। যার মধ্যে লিভার সিরোসিস অন্যতম। লিভারের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত থেকে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। এতে লিভারের কার্যক্ষমতা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়।
অতিরিক্ত জন্ডিস কিংবা মদ্যপান করলে এই রোগ হতে পারে। আবার যাদের ডায়াবেটিস বা স্থূলতার সমস্যা আছে, তাদেরও এ রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। যদিও প্রাথমিক অবস্থায় লিভার সিরোসিস ধরা পড়লে বিভিন্ন জটিলতা থেকে দ্রুত মুক্ত পাওয়া সম্ভব।
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লিভার সিরোসিস ধরতে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। ফলে সমাধানের পথ থাকে না তখন আর। তবে এই রোগ শরীরে থাবা বসানোর শুরুতেই কিছু কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। এজন্য লিভার সিরোসিসের প্রাথমিক কিছু লক্ষণ সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো। জেনে নিন উপসর্গগুলো-
>> জন্ডিস হলে ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যায়। লিভার থেকে নিঃসৃত হওয়া পিত্ত বিলিরুবিনের পরিমাণ বেশি হয় গেলে জন্ডিস হয়। লিভারে ক্ষত তৈরি হলেও লিভার শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না। তখন লিভার সিরোসিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
>> হঠাৎ করেই ওজন কমতে শুরু করলে সতর্ক থাকুন। বিনা কারণে ওজন কমে যাওয়া শরীরের জন্য একেবারেই ভালো নয়। এটি লিভার সিরোসিসেরও আগাম লক্ষণ হতে পারে। তাই এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
>> পা ও গোড়ালিতে জ্বালাপোড়া করলেও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। শরীরে অ্যালবুমিন প্রোটিনের উৎপাদন কমে গেলে এরকম সমস্যা হয়। এই প্রোটিন রক্তনালি থেকে অন্যান্য কোষে রক্তের ছড়িয়ে পড়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।
রক্তে এই প্রোটিন তরলের পরিমাণ কমে গেলে তা রক্তনালিকায় জমা হতে শুরু হয়। তাই গোড়ালিতে বা পায়ের পাতায় হালকা জ্বালা অনুভব হলে আগে থেকে সচেতনত হওয়া প্রয়োজন।
>> বিভিন্ন কারণে পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে। তবে অনেক দিন ধরে লিভারের কোনো সমস্যা থাকলে তলপেটে তরল জমা হয়ে পেট ফাঁপার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্রায়ই এরকম সমস্যা দেখা দিলে সতর্ক হন।
>> শরীরে ঘন ঘন কালশিটে পড়ার লক্ষণও কিন্তু ভালো নয়। ভিটামিন কে’র সাহায্যে লিভার এক ধরনের প্রোটিন উৎপাদন করে, যা রক্তক্ষয় বন্ধ করে যে কোনো ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে লিভার দূষিত রক্তের কোষগুলোকে বাড়তে দেয় না।
তবে লিভার যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখন শরীরে কালশিটে দেখা দিতে পারে বা খুব সহজেই অনেকটা রক্তক্ষয় হয়ে যেতে পারে। যদিও এই উপসর্গ নানা রোগের কারণেই দেখা যায়। তবে আঘাত না পেয়েও হঠাৎ কালশিটে দেখলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া/মায়ো ক্লিনিক
জেএমএস/জিকেএস