ফ্যাশন মানে কারো অনুকরণ করা নয় : সুজানা
প্রায় দেড় দশক আগে মডেলিং দিয়ে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু করেন দর্শকপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী সুজানা জাফর। সুদক্ষ অভিনয় আর ভুবনমাতানো হাসিতে জয় করেছেন দর্শকহৃদয়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকেও তিনি সরব। এজন্য ফ্যান-ফলোয়ার হুমড়ি খায় তার প্রতিটি পোস্টে। নতুন প্রজন্মের অনেকের কাছে তিনি আইডল। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা এই অভিনেত্রীর লাইফস্টাইলের সাত-সতেরো নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন জাগো নিউজের-
আড্ডার প্রথমেই সুজানা তার প্রিয় খাবারের কথা জানালেন। বললেন, ‘অনেকেই ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু আমার ওটা ভালো লাগে না। আমার সবচেয়ে প্রিয় খাবার হচ্ছে কাচ্চি বিরিয়ানি। হাজীর বিরিয়ানির কথা মনে পড়লে জিভে জল এসে যায়। আমার কাছে মনে হয়, এর চেয়ে সুস্বাদু খাবার আর হতে পারে না!’ তবে কাচ্চি বিরিয়ানি ছাড়াও সিফুড খেতে পছন্দ করেন এই সুহাসিনী। এছাড়া বিভিন্ন মৌসুমী ফল যেমন- আম, স্ট্রবেরি দারুণ পছন্দ করেন তিনি।
পোশাক হিসেবে বেছে নেন যখন যেটা পরিধানের প্রয়োজন মনে করেন সেটাই। জিন্সের সাথে মানিয়ে টি-শার্ট পরতে ভালো লাগে সুজানার। সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন সাদা রং। সেজন্য নিজের ব্যবহৃত জিনিসের ক্ষেত্রে সাদা রংকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। এছাড়া, বাসায় থাকলে আরামদায়ক পোশাকে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন এবং বিভিন্ন পার্টিতে গেলে কিছুটা জমকালো পোশাকও পরে থাকেন। তবে সবকিছু ছাপিয়ে শাড়ির প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা।
কসমেটিক্স ব্যবহার করেন ক্লিনিক ব্রান্ডের এবং চুলের যত্ন নেন প্রাকৃতিকভাবেই। মেকআপ হিসেবে একেবারে হালকা পছন্দের কিছু প্রসাধনী ব্যবহার করেন। জুয়েলারির প্রতি সুজানার খুব বেশি আগ্রহ নেই। অন্যদের মত ভারি জুয়েলারি তিনি ব্যবহার করেন না। তবে নিজেকে পরিপাটি রাখতে গলার এবং কানের জন্য একেবারেই ছিমছাম ডায়মন্ডের হার এবং দুল পরে থাকেন। পারফিউম ব্যবহার করেন হাতে গোনা কয়েকটি ব্রান্ডের। যেমন- হুগো বস, এস্টি লাউডার, বিভেলগারি ইত্যাদি। জুতা ও ব্যাগের ক্ষেত্রে রয়েছে পছন্দের দুটি ব্রান্ড। গেজ এবং গুচি।
উজ্জ্বল সূর্যকে প্রকৃতি কাছে ডাকলেও সুজানার চারপাশজুড়ে শুধুই বসন্তের হাতছানি। যদিও সুজানার পছন্দের ঋতু বর্ষাকাল। কাদা-মাটিতে পথঘাট থিকথিক করে। ঘর থেকে বের হওয়া দায়। কাজের চাপও তেমন থাকে না। তখনই অবসর ভর করে। পরিবারসহ কাছের মানুষগুলোকে নিজ হাতে রান্না করে খাওয়ে যেন দুনিয়ার সবচেয়ে প্রশান্তি খুঁজে পান সুজানা। এছাড়া শীতের নতুন সকাল বরাবরই পছন্দ তার। বিন্দু বিন্দু কুয়াশা জমে দুর্বা ঘাসের ডগায়। শিশির ভেজা ঘাসের বুকে পা রেখে বেরিয়ে পড়েন শরীরচর্চায়। এজন্য কমপক্ষে বরাদ্দ রাখেন ৩০ মিনিট।
সুজানা জানালেন তার প্রয়াত বাবা তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব। গান শুনতে আর বই পড়তে ভালো লাগে খুব। সুজানা বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ স্যারের লেখার ভীষণ ভক্ত আমি। এছাড়া ওপারের সমরেশ মজুমদারের লেখাও বেশ মন কাড়ে।’
সুজানার ভালো লাগে ভালোবাসতে, প্রকৃতি আর সৌন্দর্যকে। দেশের মধ্যে বান্দরবনের নীলগিরির নয়নাভিরাম দৃশ্য বরাবরই টানে সুজানাকে। তবে গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠো পথ, গ্রামের সহজ সরল মানুষও তার খুব প্রিয়। এছাড়া দেশের বাইরে তার প্রিয় স্থান দুবাই, সুজারল্যান্ড, আমেরিকার ফ্লোরিডা, মালদ্বীপ।
সুজানার ভালো লাগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে, তাদের মুখে হাসি ফুটাতে। এ জন্য বছরের প্রথম দিনটাই কাটিয়েছিলেন এতিম শিশুদের সাথে। তাদের মাঝে শীত নিবারণের সামগ্রীও দিয়েছেন এবং ইচ্ছে আছে আগামীতেও তাদের পাশে দাঁড়াবেন।
সবশেষে সুজানা জানালেন তার ফ্যাশন ভাবনা। তিনি মনে করেন, ফ্যাশন জিনিসটা একেক জনের কাছে একেক রকম। বললেন, ‘ফ্যাশন মানে কারো অনুকরণ করা নয়। যে পোশাকে বা সাজে আমাকে মানাবে এবং আমি নিজেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবো সেটাই হচ্ছে ফ্যাশন। তবে সেটি নিজের সঙ্গে মানানসই ও মার্জিত হওয়া উচিত।’
এনই/এইচএন/এমএস