নিয়মিত গোসল করার উপকারিতা জানেন তো?

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:১৪ পিএম, ১৪ জুন ২০২১

নিয়মিত গোসল করার উপকারিতা অনেক। ফুসফুস ও মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণসহ নানা শারীরিক সমস্যার সমাধান হয় গোসলের মাধ্যমে। অনেকেই বলেন, সকালে গোসল করা ভালো আবার অনেকের মতে রাতে। আসলে দু’টো সময়ই গোসলের জন্য সেরা।

গবেষণা বলছে, ডায়াবেটিক রোগীরা যদি টানা তিন সপ্তাহ, দৈনিক ২০-৩০ মিনিট হালকা গরম পানিতে গোসল করেন, তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা প্রায় ১৩ শতাংশ কমে যায়। ফলে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সহজ হয়। হালকা গরম পানিতে গোসল করলে সারা শরীরে রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে হার্টের কর্মক্ষমতাও বেড়ে যায়। সেইসঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়তে থাকে।

jagonews24

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, গোসল করার সময় শরীর ঠান্ডা পানির স্পর্শে আসলে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। বেশ কিছু গবেষণা অনুসারে, গোসল করার সময় মস্তিষ্কের ভেতরে ইনফ্লেমেশন রেট কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে নার্ভাস সিস্টেমেরও কর্মক্ষমতা বাড়ে।

গোসল দিবসের উৎপত্তি

আজ আন্তর্জাতিক গোসল দিবস। প্রতিবছর ১৪ জুন ‘ওয়ার্ল্ড বাথ ডে’ হিসেবে পালিত হয়। তার মানে এই নয় যে, সারাদিন গোসল করেই দিনটি উদযাপন করবেন! আসলে দিনটি পালনের পেছনে আছে এক কাহিনি।

jagonews24

বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের কথা মনে আছে? তার ‘ইউরেকা’ শব্দটির সঙ্গে নিশ্চেই আপনি পরিচিত! ‘ইউরেকা’ অর্থ খুঁজে পাওয়া। বাস্তব জীবনে কোনো বিষয়ের সমাধান দাঁড় করাতে পারলে নিজেরাই আমরা নিজেদের বাহ্বা দিয়ে ইউরেকা বলে থাকি!

খ্রিষ্ট জন্মের ৩০০ বছর আগে, সিসিলিয়ান নগরী সিরাক্যিউজের রাজা হাইরনের সভার প্রধান বিজ্ঞানী ছিলেন আর্কিমিডিস। রাজা একবার তার বিজ্ঞানীর পাণ্ডিত্য যাচাই করতে দু’টি মুকুট (একটি ছিল শুধু খাঁটি সোনায় নির্মিত, অন্যটি ছিল খাদে পরিপূর্ণ) আর্কিমিডিসের সামনে পেশ করেন। তিনি হুকুম দিলেন, মুকুট দু’টিকে না ভেঙে বা বাহ্যিক কোনো পরিবর্তন না করে সোনার মুকুটটি বেছে নিতে।

jagonews24

এরপর একদিন দুপুরে উলঙ্গ শরীরে চৌবাচ্চায় গোসল করতে নামেন আর্কিমিডিস। তিনি দেখলেন, চৌবাচ্চাটি পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ, তবে তিনি নামার পরে সেটি থেকে বেশ খানিকটা পানি উপচে পড়েছে। সেই মুহূর্তেই আর্কিমিডিস প্লাবতা আবিষ্কার করলেন।

খুঁজে পেলেন তার মুকুট সমস্যার সমাধান। তিনি যে উলঙ্গ, সে কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে ইউরেকা ইউরেকা বলে চিৎকার দিতে দিতে ছুটলেন রাজদরবারে। এসে এক নিশ্বাসে রাজাকে বললেন, ‘অন্য একটি খাঁটি সোনার মুকুট আমাকে দিলেই, আমি এ দু’টোর মধ্যে খাদ বের করতে পারবো।’ এ ঘটনার মধ্য দিয়ে ইউরেকা শব্দ ও প্লাবতার আবিষ্কার ঘটে।

jagonews24

তবে এর সঙ্গে গোসল দিবসের সম্পর্ক কী? যেহেতু আর্কিমিডিসের জন্মতারিখ কবে ছিল তা কারও জানা নেই, এ কারণেই যেদিন তিনি গোসল করার সময় ইউরেকা শব্দটি আবিষ্কার করেন; দিনটি গোসল দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

তবে দিনটি কি ১৪ জুন ছিল? তারিখটি কীভাবে নির্ধারণ করা হয়েছিল? প্রাচীন গ্রীক কিংবদন্তির তথ্য অনুসারে, গ্রীষ্মকাল শুরু হওয়ার ঠিক এক সপ্তাহ আগে ঘটনাটি ঘটে। সে সময়ের ক্যালেন্ডার ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানের ওপর নির্ভর করে। সেই হিসেবে বিশেষজ্ঞরা ১৪ জুন আর্কিমিডিসের সম্মানে গোসল দিবস উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেন।

জেএমএস/এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।