করোনা থেকে বাঁচতে কোন মাস্ক বেশি নিরাপদ?
করোনা সংক্রমণ এড়াতে মাস্ক পড়ার বিকল্প নেই। শুধু করোনাভাইরাস নয়, যেকানো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে মাস্ক। মহামারির এ সময় দেশের ছোট-বড় সব নাগরিকের জন্য মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক। তবে করোনা থেকে বাঁচতে কোন মাস্কটি বেশি নিরাপদ, সে সম্পর্কে অনেকেই জানা নেই!
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) থেকে এরই মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ডাবল মাস্কিংয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি ঘরের মধ্যে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। তাহলেই বুঝে নিন, করোনার এয়ারোসোল এতোটাই সূক্ষ্ম যে, তা ডাবল মাস্কিং না পরলে মুখ বা নাক দিয়ে প্রবেশ করতে পারে।
সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, করোনার ড্রপলেটের চেয়েও সূক্ষ্ম হয়ে ভাইরাসটি বাতাসে দূর-দূরান্তে ভেসে বেড়াচ্ছে। তাই সামান্য অসতর্কতায় এবং ভুল মাস্ক পরিধানের কারণে করোনা রোগীর সংস্পর্শে না গিয়েও আপনি আক্রান্ত হতে পারেন কোভিড-১৯ এ। তাই এ সময় সঠিক মাস্ক নির্বাচন করতে হবে।
অনেকেই আছেন যারা সার্জিক্যাল মাস্ক পরে সুরক্ষিত বোধ করেন। তবে জানেন কি, সার্জিক্যার মাস্ক একবারের বেশি ব্যবহারের করোনার ঝুঁকি বাড়ে। বিশেজ্ঞদের মতে, সার্জিক্যাল মাস্ক যেহেতু একবার ব্যবহার করেই ফেলে দিতে হয়, অন্যদিকে কাপড়ের মাস্ক ব্যবহারের পর তা ধুয়ে নিলেই জীবাণুমুক্ত হয়ে যায়। এবার তবে জেনে নিন সার্জিক্যার বা কাপড়ের মাস্ক কারা ব্যবহার করবেন?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, করোনার লক্ষণযুক্ত রোগীরা, স্বাস্থ্যকর্মী বা ঘরে যারা রোগীদের দেখভাল করছেন; তাদের সার্জিক্যাল মাস্ক পরা উচিত। যেসব এলাকায় সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে; সেখানেও সার্জিকাল মাস্ক পরা উচিত। এ ছাড়াও ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের সার্জিকাল মাস্ক পরা উচিত।
কাপড়ের মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হলো, যারা করোনায় আক্রান্ত নয় বা যাদের মধ্যে সংক্রমণের কোনো লক্ষণ নেই, তারা ফ্যাব্রিক বা কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করতে পারবেন।
এর আগেও তিন স্তরের কাপড়ের মাস্কের উপর গুরত্ব দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মাস্কের ভেতরের অংশে সুতির কাপড় দেওয়া থাকলে ভালো। কারণ তা মুখ থেকে নির্গত ড্রপলেটস দ্রুত শুষে নিতে পারে।
মাস্কের মাঝের স্তরে পলিপ্রোলাইনের মতো উপকরণ থাকবে, যা ফিল্টারের কাজ করবে। আর বাইরের স্তরটি পলিয়েস্টারের মতো উপকরণ থাকলে ভালো।
এর ফলে মুখের ভেতর থেকে সংক্রমণ বাইরে ছড়াবে না আবার বাইরে থেকেও সংক্রমণ মুখে প্রবেশ করতে পারবে না। তবে কাপড়ের মাস্ক পরার ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে। জেনে নিন সেগুলো-
>> মাস্ক পরা বা খোলার হাত অবশ্যই ধুয়ে নিতে হবে বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। মাস্কের কোথাও যাতে ছেঁড়া বা ছিদ্র না থাকে; তা দেখে নিন ভালো করে। ময়লা মাস্ক পরবেন না।
>> মাস্ক পরার পর মুখের দুইপাশে যেন কোনো ফাঁকা না থাকে। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাস্ক পরার পর মুখ, নাক ও থুতনি সম্পূর্ণ ঢাকা থাকতেই হবে।
>> বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী, ঘন ঘন মাস্ক স্পর্ষ না করাই ভালো। যদি কোমাস্ক খুলতেই হয়; তবে কানের পাশে কিংবা মাথার পিছনে মাস্কের দড়ি ধরেই খুলতে বা পরতে হবে।
>> মাস্ক খোলার পরেও হাত ধুয়ে নিন ভালো করে।
>> সাবান দিয়ে মাস্ক ধুতে পারেন। তবে দিনে একবার গরম পানি ও সাবান দিয়ে মাস্ক ধোওয়া ভালো।
সূত্র: বোল্ডস্কাই
জেএমএস/জিকেএস