সহকর্মীর হয়রানি থেকে বাঁচবেন যেভাবে
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন রেহনুমা। অফিসে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলাটাই তার পছন্দ। কর্মক্ষেত্রে অযথা রেষারেষি বা গসিপের মধ্যে একদমই নেই সে। নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু ইদানিং কিছু ঝামেলা তাকে নির্বিঘ্নে কাজ করতে দিচ্ছে না। অফিসের সিনিয়র সহকর্মীর দ্বারা হয়রানির শিকার তিনি। যে বিষয়টি খালি চোখে দেখলে স্বাভাবিক মনে হবে কিন্তু খারাপ ইঙ্গিত কিংবা সুক্ষ্ণভাবে খোঁচা মেরে কথা বলা- এগুলো ঠিকই বুঝতে পারেন রেহনুমা। এ অবস্থায় কী করলে সমাধান হবে তাও বুঝতে পারেন না। তাই দিন দিন বিমর্ষ হয়ে যাচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন: অভিমান নিয়ন্ত্রণ করবেন যেভাবে
রেহনুমার মতো এমন অবস্থা অধিকাংশ চাকুরিজীবী নারীরই। বিশেষ করে তরুণীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। কেউ কেউ হয়তো প্রতিবাদ জানান তবে বেশিরভাগ ভুক্তভোগীই চুপ থেকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। সবাই জানলে যদি মেয়েটিকেই দোষী ভাবে, এই ভাবনা থেকে না চাইলেও মুখ বন্ধ রাখতে হয়। যদি আপনিও হয়ে থাকেন রেহনুমার মতো একজন তবে এই সমস্যার সমাধানের জন্য আপনার রয়েছে কিছু করণীয়।
প্রথমে যেটি করতে হবে তা হলো, নিজেকে আত্মবিশ্বাসী রাখা। আপনি যদি নিজেকে শুধু নারীই মনে করেন তবে অন্যরাও তাই ভাববে। অফিসে পুরুষ সহকর্মীরা যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করছেন, আপনিও তেমন স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে কাজ করুন। নিজেকে ‘নারী’ ভেবে গুটিয়ে থাকলে অন্যরা সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে চাইবে! আত্মবিশ্বাসে ঝলমল করতে দেখলে কেউ আর ঘাঁটাতে সাহস পাবে না।
যদি এমন হয় যে আকারে ইঙ্গিতে আপনার সহকর্মী আপনাকে খারাপ কিছু বলছেন বা বোঝাচ্ছেন, সরাসরি তার সঙ্গে কথা বলুন। ক্ষেপে কিংবা রেগে গিয়ে নয়, তাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলুন যে আপনি তার আচরণগুলো বুঝতে পারছেন এবং তিনি যা করছেন সেটি খারাপ। রেগে গিয়ে কথা বলার চেয়ে ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে বললে সমাধানটা অনেক সহজ হয়ে যায়।
সহকর্মীদের কারো মধ্যে এরকম আচরণ দেখতে পেলে চেষ্টা করুন তার থেকে যতটা সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখার। অফিসের কাজের বাইরে অন্য কোনো কথা বা গল্প তার সঙ্গে না বলাই ভালো।
যেহেতু একই জায়গায় কাজ করতে হবে তাই অশান্তি যাতে না বাড়ে সেদিকে নজর রাখবেন। যখন আপনি নিজের মতো করে সবকিছু গুছিয়ে নেবেন এবং কাজের ইতিবাচক ফল পাবেন তখন অনেকেই আপনাকে বিরক্ত করতে সাহস পাবে না।
এরকম পরিস্থিতিতে বসের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ দিতে পারেন। এবং অফিসে আপনার সবরকম নিরাপত্তার দায়-দায়িত্বও যে তার সেটি মনে করিয়ে দেবেন।
যখন পরিস্থিতি একদমই সহনসীমা অতিক্রম করে যাবে অথবা স্বয়ং বসই যদি আপনার হয়রানির কারণ হয় তবে সে বিষয়ে অফিস কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান।
আরও পড়ুন: ছেলেদের যে গুণগুলো মেয়েদের আকৃষ্ট করে
হুট করে চাকরি ছাড়তে যাবেন না। কারণ আপনি পালিয়ে বেড়ালে আপনারই ক্ষতি। যদি প্রতিবাদ করে নিজের অবস্থানটি ধরে রাখতে পারেন তবে তাই হবে আপনার জন্য মঙ্গল।
এইচএন/আরআইপি