সফল ব্যক্তিত্বের চাবিকাঠি
আমরা সবসময় নিজেকে অন্যের চেয়ে বুদ্ধিমান, যোগ্য ও শ্রেষ্ঠ হিসেবে তুলে ধরার জন্যে সচেষ্ট থাকি। কারণ বর্তমান যুগ হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বিতার যুগ, প্রতিযোগিতার যুগ। নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করতে না পারলে আপনি অন্যদের পেছনে পড়ে যাচ্ছেন। এই প্রচেষ্টায় আপনি কখনও কখনও সফল হচ্ছেন, হাততালি পাচ্ছেন, আনন্দে আপনার বুক স্ফীত হচ্ছে, চেহারা উজ্জ্বল হচ্ছে। কিন্তু রাতে যখন বিছানায় একা ঘুমুতে যাচ্ছেন, নিজেকে নিয়ে যখন একান্তে ভাবছেন তখন আপনি নিজেও স্বীকার করবেন যে, আপনার নিজেরও ব্যক্তিত্ব উন্নয়নের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। অনেক গুণ আছে যা আপনি কাজে লাগান নি, অনেক কৌশল রয়েছে যা আপনি আয়ত্ব করতে পারেন নি। মেধার অনেক ক্ষেত্রকে বিকশিত করতে পারেন নি। তাই নিজের উন্নয়নের সুযোগও রয়েছে।
ব্যক্তিত্বের উন্নয়ন বা আত্ম-উন্নয়নের জন্যে আমরা কিছু ছোটখাট কর্মসূচি বা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি, যা আমাদেরকে উন্নত মানবে রূপান্তরিত করবে।
১. লক্ষ্যস্থির করুন : আমরা প্রতিনিয়তই কিছু কাজ করতে চাই। আমরা মনে করি যে, এই কাজগুলো করতে হবে। কিন্তু দেখা যায় যে, সে কাজগুলো করা হয় না, জমতে থাকে। যেমন চিঠি লিখব কিন্তু লেখা হয় না। ব্যায়াম করে ওজন কমাব, তাও করা হয় না। কিছু প্রয়োজনীয় কাজ যা করা দরকার, তাও জমে থাকে। এই কাজগুলো যেন জমে থাকতেই ভালবাসে, অথবা আমাদের মধ্যেই এমন আলস্য রয়েছে যা কাজকে পিছিয়ে দেয়। হয়তো আমরা ব্যস্ত অথবা ক্লান্ত বা সময় মত কাজটি করতে মন চাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের আসল সমস্যা হচ্ছে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের অভাব। তাই কাজ করার আগে আমাদের লক্ষ্যস্থির করতে হবে।
২. নিজের সম্পর্কে উন্নত ধারণা সৃষ্টি করুন : আপনি নিজেকে যখন পছন্দ করতে শুরু করবেন তখনই আপনি আত্মবিশ্বাসী ও সৃজনশীল হয়ে উঠবেন। চেহারায় প্রশান্তি আসবে, বুক টান টান করে হাঁটতে চাইবেন। কণ্ঠস্বরে বলিষ্ঠতা আসবে। দৈনন্দিন কাজের বাধাগুলো আপনার কাছে সহনীয় মনে হবে। তাই নিজের সম্পর্কে ধারণাকে উন্নত করার জন্যে আপনাকে সচেষ্ট থাকতে হবে। আপনার কাজের প্রশংসাসূচক চিঠি, নোট, যেকোনো প্রশংসাপত্র, মানপত্র, সার্টিফিকেট এগুলোকে সযত্নে একটি ফাইলে রেখে দিন। কোনো কারণে কখনও হতাশা সৃষ্টি হলে বা মন খারাপ লাগলে এই কাগজগুলোর দিকে তাকান। উল্টান। আপনি উদ্দীপনা ফিরে পাবেন।
৩. সময়মত কাজ করুন : হাতে সময় থাকতেই কাজ শুরু করুন। যারা দেরিতে কাজ শুরু করে তারা এক অর্থে অত্যন্ত আশাবাদী। তারা মনে করেন দেরিতে করলেও ঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে পারবেন। বুঝতে পারে না, অন্যরা এই দেরি করাটাকে কখনও ভাল চোখে দেখে না। কোথাও দেরিতে উপস্থিত হওয়া অন্যদের মনে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে। তাই সবসময় সময়মত হাজির হোন। সময়ানুবর্তী হওয়ার জন্যে ঘড়ির কাঁটা পাঁচ মিনিট এগিয়ে রেখে কোন লাভ হয় না। বরং সময়মত কোথাও পৌঁছাতে হলে হেঁটে রওনা দিলে যে সময় লাগবে তার পনেরো মিনিট আগে রওনা দিন। আর যানবাহনে করে যেতে হলে কমপক্ষে আধঘণ্টা সময় হাতে রাখুন। তাহলে জ্যামে আটকা পড়লেও আপনি সময়মত হাজির হতে পারবেন।