পর্তুগালের ফাতেমা নগরীর আদলে নালিতাবাড়ীতে তীর্থস্থান


প্রকাশিত: ০৭:৩৭ এএম, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪

শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার বারমারী সাধু লিওর খ্রীষ্টান ধর্মপল­ীতে স্থাপন করা হয়েছে খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ফাতেমা রাণীর তীর্থ স্থান। দেশি বিদেশিদের অংশ গ্রহণে স্থানটি এখন তীর্থ যাত্রীদের চারন ভূমিতে পরিনত হয়েছে। ময়মনসিংহ শহর থেকে প্রায় ১০০ কিঃমিঃ শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলা উত্তরে বাংলাদেশ-ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত ঘেষা সবুজ শ্যামলীময় পাহাড় ঘেরা মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের অপুর্ব লীলাভুমি বারমারী খ্রীষ্টধর্মপল­ীতে এ তীর্থ স্থানের অবস্থান। ময়মনসিংহ ধর্ম প্রদেশের ১৫ টি ধর্মপল­ীর ও সারা দেশের হাজার হাজার খ্রীষ্ট ভক্তদের প্রাণের দাবি ছিল মা মারিয়াকে ভক্তি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য উপযুক্ত স্থান লাভের।

খ্রীষ্টভক্তদের দাবীর প্রেক্ষিতে ১৯৯৮ ইং সালে পর্তুগালের ফাতেমা নগরীর আদলে ও অনুকরনে পাহাড় ঘেরা মনোরম পরিবেশে এ তীর্থ স্থানটি স্থাপন করা হয়। ময়মনসিংহ ধর্ম প্রদেশের তৎকালীন প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গমেজ বারমারী সাধু লিওর ধর্মপল­ীতে ফাতেমা রাণীর তীর্থ স্থান হিসেবে ঘোষনা করেন। এ তীর্থ স্থানের প্রায় ২ কিঃ মিঃ পাহাড়ী টিলায় ক্রুশের পথ ও পাহাড়ের গুহায় স্থাপন করা হয়েছে মা-মারিয়ার মূর্তি। প্রতি বছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিন ব্যাপি বার্ষিক তীর্থ উৎসব পালিত হয়। এ সময় দেশী বিদেশী হাজার হাজার খ্রীষ্টভক্তরা অংশ গ্রহণ করে থাকেন।

তীর্থ উৎসবে মহা খ্রীষ্টযাগ, গীতি আলেখ্য, আলোর মিছিল, নিশীজাগরন, নিরাময় অনুষ্ঠান, পাপ স্বীকার, জীবন্ত ক্রুশের পথ সহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদী অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। খ্রীষ্টভক্তরা নিজেদের পাপ মোচনে মোম বাতি জ্বালিয়ে আলোর মিছিলে অংশ গ্রহন করে প্রায় ২ কিঃ মিঃ পাহাড়ী ক্রুশের পথ অতিক্রম শেষে মা-মারিয়ার মুর্তির সামনের বিশাল প্যান্ডেলে সমবেত হয়ে নির্মল হ্দয়ের অধিকারীনি, ঈশ্বর জননী, খ্রীষ্ট ভক্তের রাণী, স্নেহময়ী মাতা ফাতেমা রাণীর কর কমলে ভক্তি শ্রদ্ধা জানায় ও তার অকৃপন সাহায্য প্রার্থনা করে থাকে এ দিন।

ধর্মীয় চেতনায় দেশী-বিদেশী হাজার হাজার খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের অংশ গ্রহনের মধ্য দিয়ে প্রতি বছর বার্ষিক তীর্থ উৎসব পালিত হওয়ায় বর্তমানে এটি মহাতীর্থ স্থানের রুপ পেতে যাচ্ছে। প্রতি বছর ভিন্ন ভিন্ন মুল সুরের উপর ভিত্তি করে বাৎসরিক তীর্থ উৎসব পালিত হয়ে আসছে।

এ ব্যাপারে বারমারী ধর্মপল­ীর সাধারন সম্পাদক মি. প্রদীপ জেংচাম বলেন, এই তীর্থ স্থানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পানি সরবরাহের ব্যাবস্থা, ল্যাট্রিন স্থাপন, প্যান্ডেলের নিচের স্থান ও ক্রুশের পথ পাকাকরন, তীর্থ যাত্রীদের আবাসন তথা থাকার ব্যাবস্থা করা এবং পাহাড়ী ঢলের সময় পানি নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা করা একান্ত জরুরী। আর এ সব করতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন।

আদিবাসী সংগটন ট্রাইভাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মি. লুইস নেংমিনজা বলেন, নালিতাবাড়ীর এই তীর্থ স্থানটিতে দিন দিন তীর্থ যাত্রীদের সংখ্যা বেড়েই চলছে। এর সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।